কৈলাসবাবু মুখ বাড়াইয়া আছেন
বাড়ির নিকটস্থ হইয়া দেখিলাম, জানোলা দিয়া কৈলাসবাবু মুখ বাড়াইয়া আছেন। শীর্ণ ফ্যাকাসে মুখ-প্ৰাতঃকাল না হইয়া রাত্ৰি হইলে তাঁহাকে সহসা ঐ জানালার সম্মুখে দেখিয়া প্রেত বলিয়া বিশ্বাস করিতে কাহারো সংশয় হইত না।
তিনি আমাদের উপরে আহ্বান করিলেন। ব্যোমকেশ একবার জানালার নীচের মাটির উপর ক্ষিপ্ৰদৃষ্টি বুলাইয়া লইল। সবুজ ঘাসের পুরু গালিচা বাড়ির দেয়াল পর্যন্ত গিয়া ঠেকিয়াছে; তাহার উপর কোনো প্রকার চিহ্ন নাই।
উপরে কৈলাসবাবুর ঘরে প্রবেশ করিয়া দেখিলাম ঘরে চায়ের সরঞ্জাম প্ৰস্তুত। চা যদিও আমাদের একদফা হইয়া গিয়াছিল, তবু দ্বিতীয়বার সেবন করিতে আপত্তি হইল না।
চায়ের সহিত নানাবিধ আলোচনা চলিতে লাগিল। স্থানীয় জল-হাওয়ার ক্রমিক অধঃপতন, ডাক্তারদের চিকিৎসা-প্ৰণালীর ক্রমিক ঊর্ধ্বগতি, টোটকা ঔষধের গুণ, মরণ-উচাটন, ভূতের রোজা ইত্যাদি কোনো প্রসঙ্গই বাদ পড়িল না। ব্যোমকেশ তাহার মাঝখানে একবার জিজ্ঞাসা করিল, রাত্রে আপনি জানালা বন্ধ করে শুচ্ছেন তো?’
কৈলাসবাবু বলিলেন, ‘হ্যাঁ—তিনি দেখা দিতে আরম্ভ করা অবধি জানালা দরজা বন্ধ করেই শুতে হচ্ছে-যদিও সেটা ডাক্তারের বারণ। ডাক্তার চান আমি অপব্যাপ্ত বায়ু সেবন করি।-কিন্তু আমার যে হয়েছে উভয় সঙ্কট। কি করি বলুন?’
‘জানালা বন্ধ করে কোন ফল পেয়েছেন কি?’
‘বড় বেশি নয়। তবে দর্শনটা পাওয়া যায় না, এই পর্যন্ত। নিশুতি রাত্রে যখন তিনি আসেন, জানালায় সজোরে ঝাঁকানি দিয়ে যান-একলা শুতে পারি না; রাত্রে একজন চাকর ঘরের–মেঝেয় বিছানা পেতে শোয়।’
চা সমাপন্যান্তে ব্যোমকেশ উঠিয়া বলিল, ‘এইবার আমি ঘরটা ভাল করে দেখব! শশাঙ্ক, কিছু মনে কোরো না; তোমাদের-অৰ্থাৎ পুলিসের-কর্মদক্ষতা সম্বন্ধে আমি কটাক্ষা করছি না; কিন্তু মুনীনাঞ্চ মতিভ্ৰমঃ। যদি তোমাদের কিছু বাদ পড়ে থাকে। তাই আর একবার দেখে নিচ্ছি।’
শশাঙ্কবাবু একটা বাঁকা-সুরে বলিলেন, ‘তা বেশ-নাও। কিন্তু এতদিন পরে যদি বৈকুণ্ঠবাবুর হত্যাকারীর কোনো চিহ্ন বার করতে পার, তাহলে বুঝব তুমি যাদুকর।’
ব্যোমকেশ হাসিল, ‘তাই বুঝে। কিন্তু সে যাক। বৈকুণ্ঠবাবুর মৃত্যুর দিন এ ঘরে কোন আসবাবই ছিল না?’
‘বলেছি তো মাটিতে-পাতা বিছানা, জলের ঘাড়া আর পানের বাটা ছাড়া আর কিছুই ছিল না।–হ্যাঁ, একটা তামার কনখুস্কিও পাওয়া গিয়েছিল।’
‘বেশ। আপনারা তাহলে গল্প করুন কৈলাসবাবু্, আমি আপনাদের কোন বিঘ্ন করব না। কেবল ঘরময় ঘুরে বেড়াবা মাত্র।’
অতঃপর ব্যোমকেশ ঘরের চারিদিকে পরিক্রমণ করিতে আরম্ভ করিল। কখনো উৰ্ধৰ্বমুখে ছাদের দিকে তাকাইয়া, কখনো হেঁট মুখে মেঝের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করিয়া চিন্তাক্লান্ত মুখে নিঃশব্দে ঘুরিতে লাগিল। একবার জানালার সম্মুখে দাঁড়াইয়া কাঠ শার্সি প্রভৃতি ভাল করিয়া পরীক্ষা করিল; দরজার হুড়কা ও ছিটাকিন লগাইয়া দাঁড়াইয়া দেখিল। তারপর আবার পরিক্রমণ শুরু করিল।
কৈলাস ও শশাঙ্কবাবু স-কৌতুহলে তাহার গতিবিধি পরীক্ষা করিতে লাগিলেন। আমি তখন জোর করিয়া কথাবার্তা আরম্ভ করিলাম। কারণ ব্যোমকেশের মন যতই বহিনিরপেক্ষ হোক, তিন জোড়া কুতুহলী চক্ষু অনুক্ষণ তাহার অনুসরণ করিতে থাকিলে সে যে বিক্ষিপ্তচিত্ত ও আত্মসচেতন হইয়া পড়িবে তাহাতে সন্দেহ নাই। তাই, যাহোক একটা কথা আরম্ভ করিয়া দিয়া ইহাদের দুইজনের মনোযোগ আকর্ষণ করিয়া লইবার চেষ্টা করিলাম। তবু্, নানা অসংলগ্ন চাচার মধ্যেও আমাদের মন ও চক্ষু তাহার দিকেই পড়িয়া রহিল।
পনেরো মিনিট এইভাবে কাটিল। তারপর শশাঙ্কবাবুর একটা পুলিস-ঘটিত কাহিনী শুনিতে শুনিতে অলক্ষিতে অন্যমনস্ক হইয়া পড়িয়াছিলাম, ব্যোমকেশের দিকে নজর ছিল না; হঠাৎ ছোট্ট একটা হাসির শব্দে সচকিতে ঘাড় ফিরাইলাম। দেখিলাম, ব্যোমকেশ দক্ষিণ দিকের দেয়ালের খুব কাছে দাঁড়াইয়া দেয়ালের দিকে তাকাইয়া আছে ও মৃদু মৃদু হাসিতেছে।
শশাঙ্কবাবু বলিলেন, ‘কি হল আবার! হাসছ যে?’
ব্যোমকেশ বলিল, ‘যাদু। দেখে যাও। এটা নিশ্চয় তোমরা আগে দ্যাখনি।’ বলিয়া দেয়ালের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করিল।
আমরা সাগ্রহে উঠিয়া গেলাম। প্রথমটা চুনকাম করা দেয়ালের গায়ে কিছুই দৃষ্টিগোচর হইল না। তারপর ভাল করিয়া লক্ষ্য করিয়া দেখিলাম, মেঝে হইতে আন্দাজ পাঁচ ফুট উচ্চে সাদা। চুনের উপর পরিষ্কার অঙ্গুষ্ঠের ছাপ অঙ্কিত রহিয়াছে। যেন কাঁচা চুনের উপর আঙুল টিপিয়া কেহ। চিহ্নটি রাখিয়া গিয়াছে।
শশাঙ্কবাবু ভ্রূকুটি সহকারে চিহ্নটি দেখিয়া বলিলেন, ‘একটা বুড়ো-আঙুলের ছাপ দেখছি। এর অর্থ কি?’
ব্যোমকেশ বলিল, ‘অর্থ–মুনীনাঞ্চ মতিভ্ৰমঃ। হত্যাকারীর এই পরিচয় চিহ্নটি তোমরা দেখতে পাওনি।’
বিস্ময়ে ভু তুলিয়া শশাঙ্কবাবু বলিলেন, ‘হত্যাকারীর! এ আঙুলের দাগ যে হত্যাকারীর তা তুমি কি করে বুঝলে? আমরা আগে ওটা লক্ষ্য করিনি বটে। কিন্তু তাই বলে ওটা হত্যাকারীর আঙুলের দাগ যে কেন হবে-তাও তো বুঝতে পারছি না। যে রাজমিস্ত্রি ঘর চুনকাম করেছিল তার হতে পারে; অন্য যে-কোনো লোকের হতে পারে।’
‘একেবারে অসম্ভব নয়। তবে কথা হচ্ছে, রাজমিস্ত্রি দেয়ালে নিজের আঙুলের টিপ রেখে যাবে কেন?’
‘তা যদি বল, হত্যাকারীই বা রেখে যাবে কেন?’
ব্যোমকেশ তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে একবার শশাঙ্কবাবুর দিকে তাকাইল; তারপর বলিল, ‘তাও তো বটে। তাহলে তোমার মতে ওটা কিছুই নয়?’
‘আমি বলতে চাই, ওটা যে খুব জরুরী তার কোন প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না।’
ক্ষুদ্র নিশ্বাস ফেলিয়া ব্যোমকেশ বলিল, ‘তোমার যুক্তি অকাট্য। প্রমাণের অভাবে কোন জিনিসকেই জরুরী বলে স্বীকার করা যেতে পারে না। —পকেটে ছুরি আছে? কিম্বা কানখুস্কি?’
‘ছুরি আছে। কেন?’
অপ্ৰসন্ন মুখে শশাঙ্কবাবু ছুরি বাহির করিয়া দিলেন। ব্যোমকেশের আবিষ্কারে তিনি সুখী হইতে পারেন নাই, তাই বোধ হয় সেটাকে তুচ্ছ করিবার চেষ্টা করিতেছিলেন। কিন্তু তবু তাঁহার মনোভাব নেহাৎ অযৌক্তিক বলিয়া বোধ হইল না। দেয়ালের গায়ে একটা আঙুলের চিহ্ন-কবে কাহার দ্বারা অঙ্কিত হইয়াছে কিছুই জানা নাই—হত্যাকাণ্ডের রহস্য-সমাধানে ইহার মূল্য কি? এবং যদি উহা হত্যাকারীরই হয় তাহা হইলেই বা লাভ কি হইবে? কে হত্যাকারী তোহই যখন জানা নাই তখন এই আঙুলের টিপ কোন কাজে লাগিবে তাহা আমিও বুঝিতে পারিলাম না।
ব্যোমকেশ কিন্তু ছুরি দিয়া চিহ্নটির চারিধারে দাগ কাটিতে আরম্ভ করিল। অতি সন্তৰ্পণে চুন-বালি আলগা করিয়া ছুরির নখ দিয়া একটু চাড় দিতেই টিপ-চিহ্ন সমেত খানিকটা প্ল্যাস্টার বাহির হইয়া আসিল। ব্যোমকেশ সেটি সযত্নে রুমালে জড়াইয়া পকেটে রাখিয়া কৈলাসবাবুকে বলিল–’ ‘আপনার ঘরের দেয়াল কুশ্ৰী করে দিলাম। দয়া করে একটু চুন দিয়ে গর্তটা ভরাট করিয়ে নেবেন।’ তারপর শশাঙ্কবাবুকে বলিল, ‘চল শশাঙ্ক, এখানকার কোজ আপাতত আমাদের শেষ হয়েছে। এদিকে দেখছি নটা বাজে; কৈলাসবাবুকে আর কষ্ট দেওয়া উচিত নয়। —ভাল কথা, কৈলাসবাবু্, আপনি বাড়ি থেকে নিয়মিত চিঠিপত্ৰ পান তো?’
কৈলাসবাবু বলিলেন, ‘আমাকে চিঠি দেবে কে? একমাত্র ছেলে-তার গুণের কথা তো শুনেছেন; চিঠি দেবার মত আত্মীয় আমার কেউ নেই।’
প্রফুল্লম্বরে ব্যোমকেশ বলিল, ‘বড়ই দুঃখের বিষয়। আচ্ছা, আজ তাহলে চললুম; মাঝে মাঝে আপনাকে বিরক্ত করতে আসব। আর দেখুন, এটার কথা কাউকে বলে দরকার নেই।’ বলিয়া দেয়ালের ছিদ্রের দিকে নির্দেশ করিল।
কৈলাসবাবুঘাড় নাড়িয়া সম্মতি জানাইলেন। রাস্তায় বাহির হইয়া পড়িলাম। রৌদ্র তখন কড়া হইতে আরম্ভ করিয়াছে। দ্রুতপদে বাসার দিকে চলিলাম।
হঠাৎ শশাঙ্কবাবু জিজ্ঞাসা করিলেন, ‘ব্যোমকেশ, ওই আঙুলের দাগটা সম্বন্ধে তোমার সত্যিকার ধারণা কি?’
ব্যোমকেশ বলিল, ‘আমার ধারণা তো বলেছি, ওটা হত্যাকারীর আঙুলের দাগ।’
অধীরভাবে শশাঙ্কবাবু বলিলেন, ‘কিন্তু এ যে তোমার জবরদস্তি। হত্যাকারী কে তার নামগন্ধও জানা নেই।–অথচ তুমি বলে বসলে ওটা হত্যাকারীর। একটা সঙ্গত কারণ দেখান চাই তো।’
‘কি রকম সঙ্গত কারণ তুমি দেখতে চাও?’
শশাঙ্কবাবুর কণ্ঠের বিরক্তি আর চাপা রহিল না, তিনি বলিয়া উঠিলেন, ‘আমি কিছুই দেখতে চাই না। আমার মনে হয় তুমি নিছক ছেলেমানুষী করছ। অবশ্য তোমার দোষ নেই; তুমি ভাবিছ বাংলা দেশে যে প্রথায় অনুসন্ধান চলে এদেশেও বুঝি তাই চলবে। সেটা তোমার ভুল। ও ধরনের ডিটেকটিভগিরিতে এখানে কোন কাজ হবে না।’
ব্যোমকেশ বলিল, ‘ভাই, আমার ডিটেকটিভ বিদ্যে কাজে লাগাবার জন্য তো আমি তোমার কাছে আসিনি, বরং ওটাকে একটু বিশ্রাম দেবার জন্যই এসেছি। তুমি যদি মনে কর এ ব্যাপারে আমার হস্তক্ষেপ করবার দরকার নেই তাহলে তো আমি নিষ্কৃতি পেয়ে বেঁচে যাই।’
শশাঙ্কবাবু সামলাইয়া লইয়া বলিলেন, ‘না, আমি তা বলছি না। আমার বলার উদ্দেশ্য, ওপথে চললে কস্মিন কালেও কিছু করতে পারবে না–এ ব্যাপার অত সহজ নয়।’
‘তা তো দেখতেই পাচ্ছি।’
‘ছ’মাস ধরে আমরা যে-ব্যাপারের একটা হদিস বার করতে পারলুম না, তুমি একটা আঙুলের টিপ দেখেই যদি মনে কর তার সমাধান করে ফেলেছি, তাহলে বুঝতে হবে এ কেসের গুরুত্ব তুমি এখনো ঠিক ধরতে পােরনি। আঙুলের দাগ কিম্বা আস্তাকুড়ে কুড়িয়ে পাওয়া ছেড়া কাগজে দুটো হাতের অক্ষর-এসব দিয়ে লোমহর্ষণ উপন্যাস লেখা চলে, পুলিসের কাজ চলে না। তাই বলছি, ওসব আঙুলের টিপা-ফিপ ছেড়ে—’
‘থামো।’
পাশ দিয়া একখানা ফিটন গাড়ি যাইতেছিল, তাহার আরোহী আমাদের দেখিয়া গাড়ি থামাইলেন; গলা বাড়াইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, ‘কি ব্যোমকেশবাবু্, কদ্দুর?’
তারাশঙ্করবাবু গঙ্গাস্নান করিয়া বাড়ি ফিরিতেছেন; কপালে গঙ্গামৃত্তিকার ছাপ, গায়ে নামাবলী্্, মুখে একটা ব্যঙ্গ-হাস্য।
ব্যোমকেশ তাঁহার প্রশ্নে ভালমানুষের মত প্ৰতিপ্রশ্ন করিল—’কিসের?’
‘কিসের আবার—বৈকুণ্ঠের খুনের। কিছু পেলেন?’
ব্যোমকেশ বলিল, ‘এ বিষয়ে আমাকে প্রশ্ন করছেন কেন? আমার তো কিছু জািনবার কথা নয়। বরং শশাঙ্ককে জিজ্ঞাসা করুন।’
তারাশঙ্করবাবু বাম ভু ঈষৎ তুলিয়া বলিলেন, ‘কিন্তু শুনেছিলুম যেন, আপনিই নূতন করে এ কেসের তদন্ত করবার ভার পেয়েছেন! তা সে যা হোক, শশাঙ্কবাবু্, খবর কি? নূতন কিছু আবিষ্কার হল?’
শশাঙ্কবাবু নীরসকণ্ঠে বলিলেন, ‘আবিষ্কার হলেও পুলিসের গোপন কথা সাধারণে প্রকাশ করবার আমার অধিকার নেই। আর, ওটা আপনি ভুল শুনেছেন।–ব্যোমকেশ আমার বন্ধু, মুঙ্গেরে বেড়াতে এসেছে, তদন্তের সঙ্গে তার কোন সংস্রব নেই।’
পুলিসের সহিত উকিলের প্রণয় এ জগতে বড়ই দুর্লভ। দেখিলাম, তারাশঙ্করবাবু ও শশাঙ্কবাবুর মধ্যে ভালবাসা নাই। তারাশঙ্করবাবু কণ্ঠস্বরে অনেকখানি মধু ঢালিয়া দিয়া বলিলেন, ‘বেশ বেশ। তাহলে কিছুই পারেননি। আপনাদের দ্বারা যে এর বেশি হবে না তা আগেই আন্দাজ করেছিলুম।–হাঁকো।’
তারাশঙ্করবাবুর ফিটন বাহির হইয়া গেল।
শশাঙ্কবাবু কটমটে চক্ষে সেইদিকে তাকাইয়া অস্ফুটস্বরে যাহা বলিলেন তাহা প্রিয়সম্ভাষণ নয়। ভিতরে ভিতরে সকলেরই মেজাজ রুক্ষ হইয়া উঠিয়াছিল। পথে আর কোন কথা হইল না, নীরবে তিনজনে বাসায় গিয়া পৌঁছিলাম।