কে? কে ও?
কে তুমি মন উদাসী বিষাদ সিন্ধুতীরে দাঁড়িয়ে?
প্রেম অভিমানী প্রিয়া সভ্যতার লক্ষ স্মৃতি বুকে নিয়ে শূন্যতার পানে তাকিয়ে।
বিরহী আকাশে বিষাদের করুণ সুর বাজে কোমল গান্ধারে,
বিদায়ের নীল নীরব ব্যথা শুকনো ধূসর প্রান্তরে,
অশরীরী অভিযাত্রা দ্যুতিহারা পথে বিস্মৃতির আঁধারে।
মিষ্টি আবেশের ছোট একটি শব্দ ‘চিঠি’ দীর্ঘ ইতিহাস তার,
কি লিখি তোমায় প্রিয়া? ভালো আছো তো? অনুভূতির বিস্তার,
তৃষ্ণার্ত হৃদয়ের মেঘদূত, শাশ্বত প্রেমের আধার, হে প্রিয় আমার!
মোহিনী বেশে স্বপ্নপুরীর বহু রূপকথায় তোমার অভিসার,
যৌবনের ঠিকানা তোমার চিলেকোঠার স্বপ্নীল দ্বার।
শুরু হতো প্রিয়ার চুম্বনে কিংবা চরণ কমলেষু দিয়ে,
এলোমেলো শব্দ, ভাষা হতো অর্থবহ জীবনের মধুর ধ্বনি নিয়ে,
সম্পর্কের মৌলিক নির্মাণ হতো না বলা কথামালায় জড়িয়ে।
বিজ্ঞান-প্রযুক্তির কর্কশ ঝঙ্কারে ভাই, সখা, বন্ধু, প্রিয় শব্দবান্ধবেরা গেছে হারিয়ে।
ভাগীরথী হতে ভলগা প্রতীক্ষার শেষে ‘ইতি’ ভালোবাসা,
দুঃস্বপ্নের ঘন আঁধারে কত রঙবাহারী চিঠি, কত ভাবনা, আবেগ মাখানো ভাষা,
অভিজ্ঞতার আগুনে পোড়া চামড়ায় আজ শুধুই নিরাশা।
বিকারগ্ৰস্ত আত্মঘাতী সভ্যতার কারাগারে তোমার আবেগ অবরুদ্ধ,অসাড়।
প্রেম-অপ্রেম, ভালো-মন্দ, আশা-নিরাশা, স্বপ্ন-বাস্তব উপেক্ষার বিষে একাকার।
ছলনা করে বেদনাপ্রধান ঊষর গ্ৰহে ঠেলে দিল তোমাকে,
টুংটাং ধ্বনির সাথে ঝোলা কাঁধে পিওনের ছবি গেল হারিয়ে ডিজিটেলের কুহকে,
প্রযুক্তি ও পন্যের সন্ত্রাসে বিরহী বৈরাগী বেশে যাত্রা তোমার মৃত্যুলোকে,
শ্মশানে শায়িত শবদেহ হতে ওঠে আর্তরব আমাকে থাকতে দাও তোমাদের সাথে নব আলোকে ,
‘বাঁচতে দিও আমাকে’।