বেশ কয়েকবার কলিং বেল বাজার পর
আমি আচমকা দরজা খুললাম
তুই অবাক হয়ে দেখছিলি আমাকে
আমি তো প্রায় মূর্তির মত দাঁড়িয়ে ছিলাম।
আমি বললাম কাকে চাইছেন ?
গমগমে গলায় উত্তর আসে চিনতে পারছিস না সোমা !
আমি যে মৃত ,তোর সেই অতীত রে
জানিস আমার শরীরে যত প্রেম ছিল তোর জন্য
সব আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে
ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয়েছে ।
এখনো তুই আমায় চিনতে পারছিস না !
ভেবে দেখ কোন এক সময়ে
আমিই ছিলাম তোর প্রেমিক !
যার সাথে জাতপাত ভুলে প্রেম করে ছিলি—,
হ্যাঁ রে এখনো কি অতীত কিছু মনে পড়ে?
সিরাজুলকে ভুলে কেমন আছিস রে তুই ?
নিশ্চয় সুপাত্রকে বিয়ে করে সুখেই আছিস
সিরাজুলের প্রশ্নে জেরবার হয়ে যাই
পরক্ষণেই আমি ভাবলেশহীন হয়ে ওকেই জিজ্ঞেস করি কেমন আছিস ?
এখনো তুই কি অবিবাহিত, মুক্ত স্বাধীন!
না রে সোমা তোর মতো নতুন করে ভালোবাসতে শিখিনিরে
মনে পড়ে একদিন তুই বলেছিলি
“সিরাজ” তোকে না পাই
এ ভালোবাসার কি ফল হবে বল —
তোর কথায় ভালোবাসায় জড়িয়ে ছিলাম,
স্বপ্নের বুকে বাসা বেঁধেছিলাম।
আমার হাত ধরেই চলে ছিলিস প্রেমের পাহাড়ে —-
পাহাড়ের শেষ চূড়ায় শুধু আমরা দুজনেই ছিলাম
তুই বলেছিলি সিরাজ ,ভালোবেসে
এখান থেকে ঝাঁপ দিতে পারবি?
আমি বলেছিলাম ভালবেসে সব পারবো
ভয় হয় সোমা শুধু তোকে হারাবার!
তুইতো বলেছিলি আমার ডানা হবি
আমরা উড়ে বেড়াবোএক দিগন্ত থেকে আরেক দিগন্তে-একসাথে–
আমি তো ঝাঁপ দিয়েছিলাম —
সোমা তুইতো ডানা হলি না!
আমাদের একসাথে উড়া হলো না।
জাতের দোহাই দিয়ে উড়ে গেলি—
আজ আমি ভালোবাসার আগুনে মৃতরে,
মৃত মানুষেরা নুতন করে প্রেম করতে পারে কি?
আসি রে সোমা,ভাল থাকিস।
যাসনা সিরাজ,শুনে যা আমার কথা
আমি ও তোকে ছাড়া কাউকে ভালো বাসতে পারি!!
আমি তোকেই শয়নে স্বপনে দিবারাত্র খুঁজি রে—
আমি সেদিন তোর আব্বুর দিব্বির কথা ফেলতে পারিনি ।
তারপর প্রিয়জনের ধাক্কায় ঘুম ভাঙে—
তিনি বলেন পানিপথের যুদ্ধে গেছিলে?
আমি মিষ্টি হাসি দিয়ে বললাম তাই হবে
আসলে স্বপ্নটা ছিল বিবেকের দংশন–
কিছু বলতে না পারা সুপ্ত কথা।
সিরাজুল যেখানে আছিস ভালো থাকিস।
আর আসিস না আমাকে কষ্ট দিতে।