বিপ্রদাস : দশ
বিপ্রদাস আসনে বসিয়া পুনরায় সেই প্রশ্নই করিল, সত্যিই আবার স্নান করে এলে নাকি? অসুখ করবে যে?
তা করুক। কিন্তু হাতে না-খাবার ছলছুতা আবিষ্কার করতে আপনাকে দেব না এই আমার পণ। স্পষ্ট করে বলতে হবে, তোমার ছোঁয়া খাব না, তুমি ম্লেচ্ছ-ঘরের মেয়ে।
বিপ্রদাস হাসিয়া কহিল, বইয়ে পড়নি যে দুরাত্মার ছলের অভাব হয় না?
বন্দনা বলিল, পড়েচি, কিন্তু আপনি দুরাত্মাও নন, ভয়ানকও নন—আমাদেরই মত দোষে-গুণে জড়ান মানুষ। তা না হলে সত্যই আজ ও-বেচারাদের ডিনার বন্ধ করতে যেতুম না।
কিন্তু সত্যি কারণটা কি?
সত্যি কারণটাই আপনাকে বলেচি। আপনাদের পরিবারে ওটা চলে না। না দেশের বাড়িতে, না এখানে। কিসের তরে ও-কাজ করতে যাবেন?
কিন্তু জান ত, সবাই ওঁরা বিলেত-ফেরত—এমনি খাওয়াতেই ওঁরা অভ্যস্ত।
বন্দনা কহিল, অভ্যাস যাই হোক, তবুও বাঙ্গালী। বাঙ্গালী-অতিথি ডিনার খেতে না পেয়ে মারা গেছে কোথাও এমন নজির নেই। সুতরাং, এ অজুহাত অগ্রাহ্য। ওটা আপনার বাজে কথা।
বিপ্রদাস কহিল, তবে কাজের কথাটা কি শুনি?
বন্দনা বলিল, সে আমি ঠিক জানিনে। কিন্তু বোধ হয় যা আপনি মুখে বলেন তার সবটুকু ভেতরে মানেন না। নইলে মাকে লুকিয়ে এ ব্যবস্থা করতে কিছুতেই রাজী হতেন না। লোকে আপনাকে মিথ্যে অত ভয় করে। যাঁকে করা দরকার সে আপনি নয়, আপনার মা।
শুনিয়া বিপ্রদাস কিছুমাত্র রাগ করিল না, বরঞ্চ হাসিয়া বলিল, তুমি দুজনকেই চিনেছ। কিন্তু ব্যাপারটা যে মাকে লুকিয়ে হচ্ছিল এ খবর তুমি শুনলে কার কাছে?
বন্দনা নাম করিল না, শুধু কহিল, আমি জিজ্ঞেসা করে জেনে নিয়েচি। সে এতবড় দুর্ঘটনা যে, মেজদি আমাকে কোনদিন ক্ষমা করতে পারবেন না, চিরদিন অভিসম্পাত করে বলবেন, বন্দনার জন্যেই এমন হল। তাই কিছুতেই এ কাজ করতে আপনাকে আমি দিতে পারিনে।
বিপ্রদাস কহিল, তুমি পরম আত্মীয়, কুটুম্বের মধ্যে সকলের বড়। এ তোমার যোগ্য কথা। কিন্তু লুকোচুরি না করে তোমার হাতে আমার খাওয়া চলে কিনা এ কথা সে লোকটিকে জিজ্ঞাসা করেছিলে? বরঞ্চ জেনে এস গিয়ে, ততক্ষণ আমি অপেক্ষা করে রইলুম, এই বলিয়া সে হাসিয়া খাবারের থালাটা একটুখানি ঠেলিয়া দিল।
বন্দনার মুখ প্রথমে লজ্জায় রাঙ্গা হইয়া উঠিল, পরে সামলাইয়া লইয়া কহিল, না, এ কথা তাকে জিজ্ঞাসা করতে আমি যেতে পারব না, আপনার খেয়ে কাজ নেই।
বিপ্রদাস বলিল, কিন্তু মুশকিল এই যে, নিজের বাড়িতে তোমাকে উপবাসী রাখতেও ত পারিনে, এই বলিয়া সে আহারে প্রবৃত্ত হইল।
বন্দনা ক্ষণকাল নীরব থাকিয়া জিজ্ঞাসা করিল, কিন্তু এর পরে কি করবেন?
বাড়ি ফিরে গিয়ে গোবর খেয়ে প্রায়শ্চিত্ত করব, এই বলিয়া সে হাসিল। কিন্তু তাহার হাসি সত্ত্বেও ইহা সত্য না পরিহাস বন্দনা নিশ্চিত বুঝিতে না পারিয়া পুনরায় স্তব্ধ হইয়া রহিল।
বিপ্রদাস কহিল, মায়ের সঙ্গে বোঝাপড়া একটা হবেই, কিন্তু তোমার বোনের শাস্তি থেকে যে পরিত্রাণ পাব এটা তার চেয়েও বড়। বলিয়া পুনশ্চ সহাস্যে কহিল, বিশ্বাস হল না? আচ্ছা আগে বিয়ে হোক, তখন মুখুয্যেমশায়ের কথাটা বুঝবে, এই বলিয়া সে খাবারের পাত্রটা নিঃশেষ করিয়া উঠিয়া দাঁড়াইল।
এদিকে ডিনার বাতিল হইল বটে, কিন্তু অন্যান্য রুচিকর আহার্যের আয়োজনে অবহেলা ছিল না। সুতরাং পরিতৃপ্তির দিক দিয়া কোথাও ত্রুটি ঘটিল না। কিন্তু সর্বকার্য সমাধা করার পরে বিছানায় শুইয়া বন্দনা ভাবিতেছিল, তাহার সম্বন্ধে বিপ্রদাসের আচরণ অপ্রত্যাশিতও নয়, হয়ত অন্যায়ও নয়, এবং আপনার জন হইয়াও যেজন্য এতকাল ঘনিষ্ঠতা ও পরিচয় ছিল না তাহাও এতদিনের প্রাচীন কাহিনী যে নূতন করিয়া আঘাত বোধ করা শুধু বাহুল্য নয় বিড়ম্বনা। প্রণাম করিতে গেলে বিপ্রদাসের মা স্পর্শদোষ বাঁচাইয়া সরিয়া গিয়াছিলেন, তাহার প্রতিবাদে বন্দনা না খাইয়া রাগ করিয়া চলিয়া আসিয়াছে। শিক্ষাবিহীন নারীর উদ্ধত ধর্মবোধ তাহাকে আঘাত করে নাই তাহা নয়, তথাপি এই মূঢ়তাকেও একদিন বিস্মৃত হওয়া সহজ, কিন্তু বিপ্রদাস যাহা করিল তাহার প্রতিবাদে কি করা যে উচিত বন্দনা খুঁজিয়া পাইল না। তাহার হাতের ছোঁয়া ফলমূল-মিষ্টান্ন সে খাইয়াছে সত্য, কিন্তু স্বেচ্ছায় নয়, দায়ে পড়িয়া। পাছে বলরামপুরের কদর্য কাণ্ড এখানেও ঘটে এই ভয়ে। এ যেন পাগলের হাত হইতে আত্মরক্ষা করিতে। কিন্তু এই অনাচার বিপ্রদাসের লাগিয়াছে, বাড়ি ফিরিয়া সে প্রায়শ্চিত্ত করিবে এই কথাটা কেমন করিয়া যেন নিশ্চয় অনুমান করিয়া বন্দনার চোখে ঘুম রহিল না। অথচ, একথাও বহুবার ভাবিল ব্যাপারটা এত গুরুতর কিসের? তাহাদের চলার পথ ত এক নয়,—সংসারে উভয়ের জন্যই প্রশস্ত স্থান যথেষ্ট রহিয়াছে। দৈবাৎ সংঘর্ষ যদি একদিন বাধিয়াই থাকে বাধিলই বা। এ প্রশ্নের মুখোমুখী হইবার ডাক এ-জীবনে তাহাকে কে দিতেছে? এমন করিয়া সে আপনাকে আপনি শান্ত করিবার অনেক চেষ্টাই করিল, কিন্তু তথাপি এই মানুষটির নিঃশব্দ অবজ্ঞা কোনমতে মন হইতে দূর করিতে পারিল না।
ভাবিতে ভাবিতে কখন এক সময়ে সে ঘুমাইয়া পড়িয়াছিল, কিন্তু অসুস্থ বাধাগ্রস্ত নিদ্রা অকস্মাৎ ভাঙ্গিয়া গেল। তখনও ভোর হয় নাই, অসমাপ্ত নিদ্রার অবসন্ন জড়িমা দুই চোখ আচ্ছন্ন করিয়া আছে, কিন্তু বিছানাতেও থাকিতে পারিল না, বাহিরে আসিয়া বারান্দার রেলিঙে ভর দিয়া দাঁড়াইয়া চাহিয়া দেখিল কালো-আকাশ নিশান্তের অন্ধকারে গাঢ়তর হইয়া উঠিয়াছে। দূরে বড় রাস্তায় ক্কচিৎ-কদাচিৎ গাড়ির শব্দ অস্ফুটে শোনা যায়, লোক-চলাচলের তখনও অনেক বিলম্ব, সমস্ত বাড়িটাই একান্ত নীরব; সহসা চোখে পড়িল দ্বিতলে মায়ের পূজার ঘরে আলো জ্বলিতেছে, এবং তাহারই একটা সূক্ষ্ম রেখা রুদ্ধ জানালার ফাঁক দিয়া সম্মুখের থামে আসিয়া পড়িয়াছে। একবার মনে করিল চাকরেরা হয়ত আলোটা নিবাইতে ভুলিয়াছে, কিন্তু পরক্ষণেই মনে হইল হয়ত এ বিপ্রদাস,—পূজায় বসিয়াছে।
কৌতূহল অদম্য হইয়া উঠিল। বুঝিল, হঠাৎ দেখা হইয়া গেলে লজ্জা রাখিবার ঠাঁই রহিবে না, এই রাত্রে ঘর ছাড়িয়া নীচে আসার কোন কারণই দেওয়া যাইবে না, কিন্তু আগ্রহ সংবরণ করিতে পারিল না।
ধ্যানের কথা বন্দনা পুস্তকে পড়িয়াছে, ছবিতে দেখিয়াছে, কিন্তু ইহার পূর্বে কখনো চোখে দেখে নাই। নিঃশব্দ রাত্রির নিঃসঙ্গ অন্ধকারে সেই দৃশ্যই আজ তাহার দৃষ্টিগোচর হইল। বিপ্রদাসের দুই চোখ মুদ্রিত, তাহার বলিষ্ঠ দীর্ঘদেহ আসনের পরে স্তব্ধ হইয়া আছে, উপরের বাতির আলোটা তাহার মুখে, কপালে প্রতিফলিত হইয়া পড়িয়াছে—বিশেষ কিছুই নয়, হয়ত আর কোন সময়ে দেখিলে বন্দনার হাসিই পাইত, কিন্তু তন্দ্রাজড়িত চক্ষে এ মূর্তি আজ তাহাকে মুগ্ধ করিয়া দিল। এইভাবে কতক্ষণ সে যে দাঁড়াইয়াছিল তাহার হুঁশ নাই, কিন্তু হঠাৎ যখন চৈতন্য হইল তখন পূবের আকাশ ফরসা হইয়া গেছে, এবং ভৃত্যের দল ঘুম ভাঙ্গিয়া উঠিল বলিয়া। ভাগ্য ভাল যে, ইতিমধ্যে জাগিয়া উঠিয়া কেহ তাহার সম্মুখে আসিয়া পড়ে নাই। আর সে অপেক্ষা করিল না, ধীরে ধীরে উপরে উঠিয়া নিজের ঘরে গিয়া শুইয়া পড়িতেই গভীর নিদ্রামগ্ন হইতে তাহার মুহূর্ত বিলম্ব হইল না।
দ্বারে করাঘাত করিয়া অন্নদা ডাকিল, দিদি, বড্ড বেলা হয়ে গেল যে, উঠবেন না?
বন্দনা ব্যস্ত হইয়া দ্বার খুলিয়া বাইরে আসিয়া দাঁড়াইল, বাস্তবিকই বেলা হইয়াছে, লজ্জিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, এঁরা বোধ হয় আজও অপেক্ষা করে আছেন? একটু সকালে আমাকে তুলে দিলে না কেন? স্নান করে তৈরি হয়ে নিতে ত এক ঘণ্টার আগে পেরে উঠব না অন্নদা।
তাহার বিপন্ন মুখের পানে চাহিয়া অন্নদা হাসিয়া বলিল, ভয় নেই দিদি, আজ আর ওঁরা সবুর করতে পারেন নি,—শেষ করে নিয়েছেন—এখন যতক্ষণ খুশি স্নান করুন গে, কেউ পেছু ডাকবে না।
শুনিয়া বন্দনা যেন বাঁচিয়া গেল। সেও হাসিমুখে কহিল, তোমাদের অনেক জিনিসই পছন্দ করিনে সত্যি, কিন্তু এটা করি। সকলের দল বেঁধে ঘড়ির কাঁটা মিলিয়ে যে গেলবার পালা নেই এ মস্ত স্বস্তি।
অন্নদা বলিল, কিন্তু সকালে কি আপনার ক্ষিদে পায় না দিদি?
বন্দনা কহিল, একদিনও না। অথচ ছেলেবেলা থেকে নিত্যই খেয়ে আসচি। আচ্ছা যাই, আর দেরি করব না।—এই বলিয়া সে চলিয়া গেল।
ঘণ্টা-দুই পরে নীচে বিপ্রদাসের সহিত তাহার দেখা হইল। সে কাছারি-ঘর হইতে কাজ সারিয়া বাহির হইতেছিল। বন্দনা নমস্কার কহিল।
চা খাওয়া হলো?
হাঁ।
ওঁরা অপেক্ষা করতে পারলেন না, কিন্তু তোমারই—
বন্দনা থামাইয়া দিয়া কহিল, সেজন্যে ত অনুযোগ করিনি মুখুয্যেমশাই।
বিপ্রদাস হাসিয়া বলিল, মেজাজের বাহাদুরি আছে তা অস্বীকার করব না, কিন্তু দু বোনের মধ্যে প্রভেদটি যেন চন্দ্র-সূর্যির মত। শুনলাম নাকি শীঘ্রই যাচ্ছ বিলেতে শিক্ষাটা পাকা করে নিতে। যাও, ফিরে এসে একটা খবর দিয়ো, গিয়ে একবার মূর্তিটা দেখে আসব।
শুনিয়া বন্দনা হাসিয়া ফেলিল, কিন্তু জবাব দিল না।
বিপ্রদাস কহিল, সে দেশে শুনেচি বেলা বারোটা পর্যন্ত লোককে ঘুমুতে হয়। কঠিন-সাধনা। তোমাকে কিন্তু কষ্ট করে সাধতে হবে না, এদেশ থেকেই আয়ত্ত হয়ে রইল।
বন্দনা এবারও হাসিল, কিন্তু তেমনিই চুপ করিয়া বিপ্রদাসের মুখের পানে চাহিয়া রহিল। নিতান্তই সাদাসিধে সাধারণ ভদ্র চেহারা। হাস্য-পরিহাসে স্নেহশীল, তাহাদেরই একজন। অথচ কাল রাত্রির নীরবতায়, নির্জন গৃহের মধ্যে স্তব্ধ-মৌন এই মূর্তিটিকে কি যে রহস্যাবৃত মনে হইয়াছিল, এই দিবালোকে সেই কথা স্মরণ করিয়া তাহার কৌতুকের সীমা রহিল না।
মুখুয্যেমশাই, এঁরা কোথায়? কাউকে ত দেখচি নে?
বিপ্রদাস কহিল, তার মানে তাঁরা নেই। অর্থাৎ শ্বশুর মশাই এবং সস্ত্রীক ব্যারিস্টারমশাই—তিনজনেই গেছেন হাওড়ায় রেলওয়ে স্টেশনে—গাড়ি রিজার্ভ করতে।
বন্দনা সবিস্ময়ে প্রশ্ন করিল, সস্ত্রীক ব্যারিস্টারমশাই করতে পারেন, কিন্তু বাবা করতে যাবেন কেন? তাঁর ছুটি শেষ হতে এখনো ত আট-দশ দিন বাকী আছে। তা ছাড়া আমাকে না বলে?
বিপ্রদাস কহিল, বলবার সময় পাননি, বোধ করি ফিরে এসেই বলবেন। সকালে বোম্বাইয়ের অফিস থেকে জরুরী তার এসেচে—মুখের ভাব দেখে সন্দেহ রইল না যে না গেলেই নয়।
কিন্তু আমি? এত শিগগির আমি যেতে যাব কেন?
বিপ্রদাসও সেই সুরে সুর মিলাইয়া কহিল, নিশ্চয়ই, যেতে যাবে কেন? আমিও ত ঠিক তাই বলি।
বন্দনা বুঝিতে না পারিয়া জিজ্ঞাসু-মুখে চাহিয়া রহিল।
বিপ্রদাস কহিল, বোনটিকে একটা তার করে দাও না,—দেওরটিকে সঙ্গে করে এসে পড়ুন। তোমাদের মিলবেও ভাল, অতিথি-সৎকারের দায় থেকে আমিও অব্যাহতি পেয়ে বাঁচব।
বন্দনা সভয়ে ব্যগ্রস্বরে জিজ্ঞাসা করিয়া উঠিল, সে কি সম্ভব হতে পারে মুখুয্যেমশাই? মা কি কখনো এ প্রস্তাবে রাজী হবেন? আমাকে তিনি ত দেখতে পারেন না।
বিপ্রদাস কহিল, একবার চেষ্টা করেই দেখো না। বল ত তার করার একটা ফরম পাঠিয়ে দিই,—কি বল?
বন্দনা উৎসুক-চক্ষে ক্ষণকাল নিঃশব্দে চাহিয়া থাকিয়া শেষে কি ভাবিয়া বলিল, থাক গে মুখুয্যেমশাই, এ আমি পারব না।
তবে থাক।
আমি বরঞ্চ বাবার সঙ্গে না হয় চলেই যাই।
সেই ভাল, এই বলিয়া বিপ্রদাস চলিয়া গেল।
খাবার টেবিলের উপর পিতার টেলিগ্রামটা পড়িয়াছিল, বন্দনা খুলিয়া দেখিল সত্যই বোম্বাই অফিসের তার। অত্যন্ত জরুরী,—বিলম্ব করিবার জো নাই।
বন্দনা ঘরে গিয়া আরেকবার তোরঙ্গ গুছাইতে প্রবৃত্ত হইল।
বাবা তখনও ফিরেন নাই, ঘণ্টা-কয়েক পরে অন্নদা ঘরে ঢুকিয়া কহিল, আপনার নামে একটা টেলিগ্রাম এসেছে দিদি, এই নিন।
আমার টেলিগ্রাম? সবিস্ময়ে হাতে লইয়া বন্দনা খুলিয়া দেখিল বলরামপুর হইতে মা তাহাকেই তার করিয়াছেন। সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাইয়াছেন পিতার সহিত সে যেন কোনমতে ফিরিয়া না যায়। বৌমা দ্বিজুকে লইয়া রাত্রের গাড়িতে যাত্রা করিতেছে।