বন্ধু রশীদ করীমের একটি কক্তি মনে রেখে
ওহে মেঘে মেঘে বেলা কম তো হ’ল না
শামসুর রাহমান, অথচ এখনও
তোমার প্রকৃত পরিচয়
এ ভবের হাটে বাটে পেয়েছে কি কেউ?
তোমার নিজের ধারণার সূত্র ধ’রে জানা যায়-
কোনও কোনওদিন ভোরবেলা হঠাৎ ভাঙলে ঘুম
নিজেকে আদিম কোনও মানুষের মতো
লাগে, বেলা গড়িয়ে পড়লে
খানিক, ঘড়িতে সাড়ে এগারোটা বাজলেই বসন্ত বাহার
হ’য়ে যাও মনোমুগ্ধকর প্রত্যাশায়। তুচ্ছতার
প্ররোচনা কখনও মেজাজে আগুনের কিছু স্ফুলিঙ্গ ছড়ায়,
কখনও সখনও গৃহিণীর সঙ্গে বাধে খিটিমিটি।
অপরাহ্নে যখন তোমার পৌত্রী ডাকে
মমতাকোমল ছোট্র হাত নেড়ে দেখাতে ছবির বই তার,
দুলে দুলে ছড়া কাটে, মেঘাচ্ছন্ন হৃদয়ে তোমার
লহমায় রঙধনু হেসে ওঠে উচ্ছল নৈঃশব্দ্যে।
সায়াহ্নে হঠাৎ কী-যে হয়, একটি খরখরে ছায়া
তোমাকে দখল করে। অনেকের মধ্যে প্রাণবন্ত কলরবে
মেতেও তোমার ভেতরের বড়ই নিঃসঙ্গ মানুষটি
সবার নিকট থেকে দূরে বহুদূরে রয়ে যায়।
যখন আসে না ঘুম কোনও কোনও রাতে
অকারণে কিংবা সদ্য কোনও কবিতা লেখার পর
তৃপ্তি অতৃপ্তির দ্বিধাদ্বন্দ্বে দোল খেয়ে কিছুক্ষণ
আন্ধার অথবা তারাময় আসমানে
তাকাও তৃষিত চোখে, কখনও আনন্দে আন্দোলিত
বর্ণিল উৎসব হও, কখনও অজ্ঞাত ভীতি চকিতে তোমার
কণ্ঠনালী চেপে ধরে, নীরবে দু’চোখে থেকে কখনও-বা শুধু
ছল ছল জল ঝরে এবং আগামীকাল ভোরে
কোন খেলা হবে শুরু মনে, তুমি নিজেই জান না;
বস্তুত একজনের ভেতরেই বহুজন করে বসবাস।