Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ফেরৎ এলো দেড় ইঞ্চি || Abhijit Chatterjee

ফেরৎ এলো দেড় ইঞ্চি || Abhijit Chatterjee

ইঁদুর যে নেশা করে তা জানতাম না। জানলাম আজকে। শুধু নেশা করা নয় , ঘরদোর একদম দক্ষযজ্ঞ করে দেওয়ার সামিল। আমি বাপু বিড়িখোর। এ কথা শুনে যে রাগবে সে রেগে যাক। আমি না হয় দমকল ডেকে তার গায়ের জ্বালা মেটাবো। আপাতত বলি আমি কি জ্বালায় জ্বলছি। আগে বলি আপাতত মেয়ে তার পাড়া বেড়ানো ছেড়েছে। নাগর কেউ নেই। একগন্ডা ছেলে মেয়ে নাতি নাতনি নিয়ে বহাল তবিয়তে আমার কাছেই থাকছে। নাতি পুতি গুলো বড্ড চ্যাংড়া। এক মূহুর্তের জন্য চুপ করে থাকতে পারে না। সারাদিন ধরে এ তার পেছনে লাগছে তো ও তার। সারা ঘর জুড়ে তাদের দৌড় দেখে আমার তো আত্মারাম খাঁচাছাড়া। কাঁহাতক সহ্য করা যায়। একদিন মেয়েকে ডেকে গম্ভীর গলায় বললাম – এ সব কি হচ্ছে , টাইমে দুবেলা খেতে দিচ্ছি। তার পরেও যদি এই ধরনের বাঁদরামি ( ইঁদুরদের উৎপাতকে কি বলা হয় , আমার জানা নেই) হয় তবে তো আমাকে বাধ্য হয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে এইবার। বিটি এখন বেশ ভারিক্কি চেহারা নিয়ে ঘোরে, একটা ঠাকুমা দিদিমা মার্কা ইমেজ। আমার কথা শুনে কানটা চুলকে নিল প্রথমে তারপর বলল সে দেখছে কি করা যায়। আরও জানতে চাইলো নাতি পুতি কিছু জরুরি কাগজপত্র কেটেছে কি না। হ্যাঁ হলে ও সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। তা যা ঘটেনি ধর্মসাক্ষী করে অহেতুক দোষ চাপিয়ে পাপের ভাগী হয়ে পরকাল ঝরঝরে করতে মন চাইলো না। আমার নেতিবাচক উত্তর শুনে উনি গদাইলস্করি চালে প্রস্থান করলেন, অবশ্যি যাওয়ার আগে একটা পেন্নাম ঠুকেছিলেন। ফল পেলাম তিন চার দিন পরে । একদিন এই বেলা দশটা নাগাদ দুই ক্ষুদে খাটের অন্য প্রান্ত থেকে উঁকিঝুঁকি মারছে দেখে একটু গম্ভীরভাবে গলা খাকড়ানি দিতেই এক মক্কেল চোখ মারলো আর অন্যজন জিভ ভেঙিয়ে চম্পট। এ তো ভয়ঙ্কর অপমান। রেগে ব্যোম হয়ে এক বন্ধুর বাড়ি থেকে মিউজিয়ামে রাখার মত একটা আধভাঙা ইঁদুর ধরা কল নিয়ে এসে খাটের নীচে রাখতে না রাখতেই গোটা চারেক ছানাপোনা এসে এমন ভাবভঙ্গী করতে লাগল দেখে মনে হলো ওদের কান্নার জলে আরেকটা গঙ্গা বা পদ্মা তৈরি হয়ে যাবে। বেশ কিছুক্ষণ পরে বেটির আগমন, একটু উদ্বিগ্ন , একটু রুষ্ট এবং চিন্তিত বটে, কোন রাখঢাক না রেখে সরাসরি প্রশ্ন করলো যদি আমি সংসারে প্রতি এতটাই অনীহা দেখাই তবে সন্নেসী হচ্ছি না কেন আর ছোটরা একটু দুষ্টুমি করবেই তাই বলে তাদের চরমতম শাস্তির বিধান দেওয়ার অধিকার কে আমাকে দিয়েছে। ল্যাও ঠ্যালা। এ তো দেখি ; উল্টা চোর কোতোয়াল কো ডাঁটে। সাধের মেয়ে বলে কথা, অননুয় বিনয় করে ফেরৎ পাঠালাম। অল্পক্ষণ চারটে চ্যাংড়া এসে এইসান নাচ দেখালো তা বলার কথা নয়। কেন যে এরা সিনেমার হিরো হিরোইন হয় না ! এইবার মোদ্দা কথায় আসি। গতকাল রাতে বাড়ি ফিরে দেখি অ্যাসট্রে থেকে বিড়ির টুকরোগুলো বের করে পুরো মাংসের কিমা করে সারা ঘর ছড়িয়েছে সঙ্গে পোড়া দেশলাই কাঠিগুলোও আছে। ওদের বাপ বাপান্ত করতে করতে ঘেমে নেয়ে একশা হয়ে ঘর ঝাড়ু দিলাম তারপর ড্রেস বদলে হাত মুখ ধুয়ে ব্রাহ্মীরস নিয়ে ফেসবুক করতে বসলাম। একটু পরেই চিত্তির , এক বাবু গ্লাসের পাশে রাখা বইগুলোর ওপর উঠে অনেকটা ঝুঁকে গ্লাসে মুখ ডুবিয়ে চুকচুক করে ব্রাহ্মীরস পান করছে। আমি হাঁ ……………
আপনারাই বলুন এ কোন যুগ এলো ?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress