প্রেমের বীজ
একই স্কুলে দুজনে নতুন চাকরি পায়।
দুজনেরই বিষয় বিজ্ঞান। নমিতা রায় ও নাসের আলি দুজনেই ট্রেনে যায় হাওড়ায়।
সেখানকার স্কুলেই শিক্ষকতা করে দুজনে।বছর
দুই একসাথে যাতায়াত করে। শেওড়াফুলি থেকে
দুজনেই সকাল বিকাল একই গন্তব্যে।গল্প করতে
করতে বাসে পৌঁছে যায় স্কুলে । এইভাবে দুজনের মধ্যে অজান্তেই প্রেমের বীজ রোপিত হয়।বিকালে ফেরার পথে কখনও তারা গঙ্গার ঘাটে বসে সময় কাটায়। ছুটির দিনেও তারা বেড়িয়ে পড়ে ঘুরতে। ঘোরাঘুরি করে দুজনে কোন দামী রেস্তোরাঁয় খাওয়া দাওয়া সেরে আনন্দ উপভোগ করে। এইভাবেই দুজনের মধ্যে ঘনিষ্টতা নিবিড় হয়।প্রতি ছুটির দিনে নমিতার ঘুরতে যাওয়া তার মা বাবার মনে সন্দেহ জাগায় ।একদিন মা নমিতাকে সরাসরি জিজ্ঞাসা করে জানতে পারে সে নাসের আলিকে ভালবাসে।নমিতার বাড়ি খুব গোঁড়া পরিবার।শুনে তারা খুব আঘাত পায় মনে এবং তাকে বলে শিক্ষিকা হয়ে এমন জঘন্য কাজ সে করল কি করে?ভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিয়ে আমাদের,সমাজে সম্ভব না। নমিতা জানে এ’লড়াই তার একার।
সে ভাবে সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদ
মানুষের মন থেকে দূর না হলে দেশের উন্নতিও
সম্ভব না।বাবা মায়ের
সম্মতি নেই তা নাসের আলিকে
জানায়।নাসের আলি বলে বাবা মায়ের মনে ব্যথা দিয়ে কোন কিছু করলে সুখী হওয়া যায় না।তাদের পছন্দের
পাত্রকেই যেন সে বিয়ে করে।
নমিতা খুব জেদি প্রকৃতির। সে বলে যদি সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদ না ঘোচাতে পারি তবে
আমি কিসের শিক্ষিতা।
তুমি শোননি বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের অন্যতম মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস।তার কন্যা জেনিফার গেটসের মন জয় করেছেন এক মিশরীয় মুসলিম তরুণ ঘোড়দৌড়বিদ নায়েল নাসের।
তার জন্ম শিকাগো শহরে।
মিশরীয় বাবা-মায়ের কর্মস্থল কুয়েতেই তার শৈশব কেটেছে। ক্যালিফোর্নিয়াতে আসার পর ঘোরদৌড়ে তার আগ্রহ জাগে।
ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় দুজনের পরিচয় হয়। দুজনের এনগেজমেন্ট সম্পন্ন হয়েছে। এখন কেবল বিয়ের অপেক্ষা।
জেনিফারের এই বন্ধনে বেজায় খুশি তার বাবা মা। আংটি বদলের খবরে অভিনন্দনের জোয়ারে ভাসছেন জেনিফার-নাসের যুগল।
নাসের আলি এই কথা শুনে নমিতার হাতটা চেপে
ধরে বলে। তুমি কি এতোটা সাহসী হতে পারবে?
দেখই না বলে নমিতা নাসেরের হাতটা তুলে নিয়ে
আলতো করে ঠোঁট ছোঁয়ায়।