প্রিয় কবি কে
প্রিয় কবি,
আজ তোমার প্রয়ান দিবসে তোমারি কাব্য কুসুমের ডালি দিয়ে তোমার স্মৃতি তর্পণ করছি। সত্যিই আজ প্রকৃতি বলছে— শাওন আসিল ফিরে সে ফিরে এল না
বরষা ফুরায়ে গেল আশা তবু গেল না!
বর্ষার ধারার সাথে তোমার না থাকার বিষাদও ঝরে পড়ছে। তোমার মত প্রেমিক তো আর দেখলাম না— সৈনিকের অসি আর প্রেমিকের বাঁশি তুমি একসাথে বাজিয়েছ। তাইতো তুমি বিদ্রোহী প্রেমিক কবি। বাংলা সাহিত্য বাগিচার নার্গিসী বুলবুল তুমি। তোমার লেখনি কখনো রাধিকার শিখিপাখা হয়ে কবিতা লেখায়। কখনো প্রিয়ার অঙ্গের কাঁকন কেয়ুর হয়ে শিঞ্জিনী তোলে। তুমি ডাক দাও তোমার প্রিয়াকে—-
মোর প্রিয়া হবে এসো রানী
দেব খোঁপায় তারার ফুল!
প্রিয়াকে জোছনার সাথে চন্দন রূপটানে সাজাতে চাও! বিজলী জরীণ ফিতায় মেঘ রঙ এলো চুল বাঁধতে চাও, রামধনুর লাল রঙ ছেনে’ আলতা পরাতে চাও —–!
আবার প্রিয়ার কানের দুলে প্রাণ কে বিঁধিয়ে রেখে খোপার ফাঁসে অন্ধপ্রেম কে আটকে আর দেহের দেউড়ি থেকে ফিরে যাও নি। মানবিক প্রেমের এই মন ছোঁয়া লেখায় ভেসে চলেছে মানব মনন—- আজও। প্রিয়া র চুরি করা নিদ্রাহারা চোখ নিয়ে তুমি কল্পনায় ভেসে গেছো—-
শিয়রে বসি চুপি চুপি চুমিলে নয়ন
মোর বিকশিল আবেশে তনু
নীপসম, নিরুপম, মনোরম!
তোমার প্রেমিক হৃদয় ইতো বলতে পারে—
ব্যাথা মুকুলে অলি না ছুঁলে
বনে কি দুলে ফুল পতাকা?
তোমার বিরহী মন যখন রাধার বিরহ সম্পৃক্ত হয়ে বলে ওঠে—-
ধানী রং ঘাঘরির মেঘ রং ওড়না
পরিতে আমায় মাগো অনুরোধ করো না,
কাজরি কাজল মেঘ পথ পেল খুঁজিয়া
সেকি ফেরার পথ পেলনা মা পেল না?—- তখন তার চেয়ে বড় মানবিক বিরহী হৃদয় আর হয় না!
জীবন গোধুলিবেলায় তোমার নীরবতা বড় বেদনার! মুখর কবি, তোমার বিরহী মনে বাঁশিওয়ালা নিরালায় কাঁদে। বাংলা সাহিত্য বাগিচার নার্গিসি বুলবুল— বিদ্রোহী প্রেমিক কবি নজরুল— প্রয়াণ দিবসে তোমাকে প্রণাম!!