ধুনুচি থেকে ধোঁয়া উড়ছে–
অঙ্গনে শায়িত সাদা কাপড়ে আচ্ছাদিত
বেয়াল্লিশ বছরের জীবন সাথী
শিয়রে তুলসী গাছ,
জীবনের ঘড়ি দমহীন সময়ের বাঁকে।
বাতাসে নিঙারিয়া ঘুরে বিলাপের গুঞ্জন।
শিথিল জড়তা ভেঙে অকস্মাৎ চমকে উঠি,
ধোঁয়া কুন্ডলী পাকিয়ে উর্ধ হতে উর্ধতর–
মস্তিষ্কের কোষে কোষে তড়িৎপ্রবাহ
জীবন তাহলে কি অর্থহীন!
সব–সবকিছু ঠিক অমনি করে ধোঁয়ার মত মহাশূন্যে মিলিয়ে যাবে!
স্থাবর- অস্থাবর জাগতিক সবকিছু !
যখন সময় থমকে দাঁড়ায় জগৎ স্থানুবৎ! তাহলে?
তাহলে,অবোধ্য বিস্ময়ের আকুল পাথারে মন কেন হাবুডুবু খায়!
কেন আঁকড়ে ধরতে চায় স্বস্তির খড়কুটো!
কেন বুকের ভেতরে অব্যক্ত কষ্টের বুদবুদ ঢেউ তুলে!
অগুনতি স্মৃতিময় মধুময় শব্দের কোলাজ তীব্রবেগে আছড়ে পড়ে ভীষন রকমের অস্থিরতায়!
নিথর শায়িত মানুষটিকে ঘিরেই একদিন ছলকে উঠতো মধুময় সময়ের যাপন।
তখনো ,নিবিড় মিলনের উন্মুখরতায় আবেশে সময় থমকে দাঁড়িয়ে পড়তো হয়তো।
প্রাণে প্রাণে সুধা বিনিময় মধু গুঞ্জনে,
থরথর উতলা মনের উপকূল ঘিরে
অফুরন্ত সুখের ছোঁয়ায়,
তখনো,মনে হয়,সময় থমকে দাঁড়াতো বুঝি বা।
ঝাপসা চোখের কাঁচ ধুনুচির ধোঁয়ায় ঝাপসাতরো।
স্বর্গরথ এসে গেছে।
ফুলে ফুলে সাজানো খাট,ধূপের তীব্রতর
সুবাস,হরিবোল ধ্বনি!
সূঁচ ফোটানো ব্যথার কামড় অবিরাম!
যখন সময় থমকে দাঁড়ায়, মানুষ নিরুপায়!
যে ছিলো একান্ত আপনজন,
সে আজ নেই হয়ে জাগতিক বন্ধন মুক্ত।
অমনি করেই যখন সময় থমকে দাঁড়াবে,
সব্বাই কে যেতে হবে-আমাকেও-
কিন্তু, মৃত্যু তো শেষ কথা নয়!
আবারো ফিরে আসা-
মৃত্যু মানেই জীবনের পর্বান্তর।