Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » নয়নতারা || Samarpita Raha

নয়নতারা || Samarpita Raha

মা ও বাবার একমাত্র কন্যা তারা—যেমন দেখতে — নাচ ও গানে পারদর্শী।
যখন তারা একাদশ শ্রেণিতে পড়ে —–কোচিং ক্লাসে নয়নের সঙ্গে আলাপ হয়।

নয়ন ও পড়াশোনাতে খুব ভালো।
সবাই একসঙ্গে মজা করে বলে নয়নতারা।আরেক বন্ধুর নাম চাঁদ—তাকে আবার মালার সাথে নাম যুক্ত করে বলে চাঁদমালা।

যা হয় ছোট বয়সের বন্ধুদের মধ্য ঠাট্টা,মজা।
তারার চোখের মনিদুটি নীল।অনেকেই বলত এই তারা তুই কি লেন্স পড়িস??
তারা বলত না রে—- জন্মের সময় আমার চোখে সাপ কামড়েছিল—তাই বিষে নীল।

তারা ওডিসি নৃত্য শিখত—তাই তারার চোখ নীল হলেও কথা বলত।চোখে নাচের বোল পড়া যেত।
তারা ও নয়ন কলেজে ইংরেজিতে অনার্স পড়ে।তখন ওদের বন্ধুত্বের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে।নয়নের টাকার ব‍্যাগে নয়নের বাবা ও মায়ের ছবি দেখে তারা চমকে ওঠে।তারা বলে তোর মা কোথায় থাকেন?
নয়ন বলে জানি না রে।আমি যখন দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ি,তখন থেকেই মা কোথায় জানি না।
তারা নয়নকে বলে আজ আমার বাড়িতে চল।
নয়ন বলে কোনোদিন তো বলিস নি —-আজ কেন রে??
নারে সৎমা রাগ করে রাতে খেতেই দেবে না।

তারা টানতে টানতে নয়নকে তারার বাড়ি নিয়ে যায়।
দরজা খুলে দেয় পিসি,উনি ছোট থেকে তারাকে দেখাশুনা করেছেন।

পিসি আজ বাবা ও মা ফিরবে বলেছে কি??
না রে তারা, কাল সকালে ফিরবে বলেছে।

আচ্ছা পিসি তিন কাপ চা নিয়ে হলঘরে এসো।অনেক গল্প আছে।
নয়ন বলে তোর পিসিকে কোথায় যেন দেখেছি।তারা বলে তাই??
পিসি কে তারা বলে—-পিসি ওর নাম নয়ন—-আমরা এক সাথে পড়ি—-সেই ছোট থেকেই পড়ছি।

ঝনঝন করে তিনটি কাপ মাটিতে পড়ে যায়।কি নাম বললি ??
পিসি—ও তোমার নয়ন —-দেখ তো চিন্তে পারো কিনা।
নয়ন বলে ওঠে মা –তুমি এখানে।
মা ও ছেলের মিলন হয়।
ওদিকে নয়নতারার প্রেম আকাশে বাতাসে ঘোষিত হয়।তারার বাড়িতে অশান্তি শুরু হয়।
যার বাবা ও মা ব‍্যাঙ্ক ম‍্যানেজার,তারাকে যে কোলে পিঠে বড় করেছে—-তার ছেলের সাথেই প্রেম। তারার উপর অকথ্য অত‍্যাচার চলতে থাকে।

আমেরিকায় মামার কাছে তারাকে পাঠিয়ে দেয়।
তারাকে বলা হয়—পিসির চাকরিটা থাকবে যদি নয়নের সাথে যোগ না রাখো।
তাই নয়ন আর তারার বিচ্ছেদ।
এরমধ্যেই নয়ন রেলে চাকরি পায়।মা কে নিয়ে আসানসোল চলে যায়।

হঠাৎ আমেরিকার থেকে খবর আসে গাড়ি দুর্ঘটনায় মামা ও মামি অল্প আঘাত পেয়েছে।কিন্তু তারার চোখে কিছু দেখতে পাচ্ছে না।তারাকে কোলকাতায় আনা হয়।অনেক কান্নাকাটি করে তারার বাবা মা।আর তারাকে বলে পাপ করেছিলিস তার ফল।অনেক জায়গায় বলা আছে চোখের জন্য।
হঠাৎ একদিন শঙ্কর নেত্রালয় থেকে ফোন আপনার মেয়ের চোখ পাওয়া গেছে আসুন।একজন ছেলে বাইক দুর্ঘটনায় মারা গেছে—সে তার চোখ দান করে গেছে।

আজ তারার চোখের ব‍্যান্ডেজ খোলা হবে।হঠাৎ তারার মার চোখে পড়ে পিসিকে।দেখো তোমার ছেলের জন্য আমার মেয়েকে আমেরিকাতে পাঠালাম।সব শেষ হয়ে গেল।কি জানি দেখতে পাবে কিনা??

তুমি চলে যাও।ভেবেছ তোমার ছেলের সাথে আমার বিয়ে দেব।
চিৎকার শুনে এক নার্স এগিয়ে এসে বলেন।এত শব্দ কেন??
উনার ছেলের চোখ আপনার মেয়ের চোখে।কি বলছেন??তাকিয়ে দেখে নয়নের মা চলে গেছে।
চোখের ব‍্যান্ডেজ খোলা হয়।হ‍্যাঁ দেখতে পাচ্ছে তারা।
নয়ন ও তারার মিলন হয়নি।কিন্তু তার চোখে তারা আজ দেখতে পাচ্ছে।আজ ও তারা জানে না তার নয়ন কোথায়???

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress