Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » নীল প্রেম || Samarpita Raha

নীল প্রেম || Samarpita Raha

সাত সকালে নীল রোহিত ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছেন,আচ্ছা উনার বাবা মা কি সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা পড়তে ভালবাসতেন।নীলাঞ্জনা ভাবে সে তো চেনা ছাড়া কাউকে গ্রহণ করে না।নীলাঞ্জনার নীল শব্দটি খুব প্রিয়,তবে এক জ্যোতিষী বলেছেন নীল বস্ত্র পরতে না।নীল নাকি ওর জীবনে ধামাকা আনবে।সেটা খারাপ ও হতে পারে । আবার ভাল হতেও পারে। চালাক জ্যোতিষি ঠিক মাঝামাঝিতে আছেন।তাই জন্য মা নীল পরতে দেন না।
ভগবানের নাম করে ছেলটির বন্ধুত্ব গ্রহণ করে নীলাঞ্জনা।তারপর কত কারণ, অকারণ বকবকানি তে ক্রমশঃ জানতে পারে নীলাঞ্জনা ছেলেটার নাম নীলাদ্রি ।সে নাকি রুই মাছ ছাড়া কোন মাছ খাই না তাই ওর বন্ধুরা নীল রোহিত বলে।
নীলাঞ্জনা ব্যাঙ্গালোরে বি.টেক পড়ছে,নীলাদ্রি কোলকাতায় এম.টেক করে চাকরি করছে।দুজনার বাড়ির নাম নীল।নীলাঞ্জনা তন্ন করে ফেস বুকে নীলাদ্রির ছবি খুঁজেছে,কিন্তু পাইনি।এদিকেও নীলাঞ্জনা র সাথে মিল।নীলাঞ্জনার ও কোন ছবি নীলাদ্রি দেখতে পাইনি।
রাতে ঐ একটু করে কথা মেসেঞ্জারে।এই কথা বলতে বলতে প্রায় বি.টেক পড়া শেষ।সামনের মাসে হায়দরাবাদে চাকরি নীলাঞ্জনার।হঠাৎ নীলাঞ্জনা কে নীলাদ্রি বলে ,তুমি কলকাতায় আসলে আমার বাড়ি নীলকুঞ্জে এস।এতদিন এত কথা ও জ্ঞানের কথা আদান প্রদান হয়েছে ,কে কোথায় থাকে কারর বলা হয়ে ওঠে নি।
নীলাঞ্জনা জানে মা খুব রাগী ,কাউকে ঠিকানা দিয়েছি শুনলে বকবেন।তাই নীলাদ্রির কোথায় বাড়ি উৎসাহ দেখায় নি।

নীলকুঞ্জ সেটা আবার কোথায়?নীলাদ্রি বলে ওটা আমাদের বাড়ির নাম বন্ধু। নীলাদ্রি বলে তার বাড়ি ব্যারাকপুর ও বারাসাতের মাঝে নীলগঞ্জ বলে একটা জায়গা আছে সেখানে।নীলাদ্রি ,নীলাঞ্জনাকে বলে,তুমি নিশ্চয় ভাবছ,আমি মজা করছি।

নীলাঞ্জনা ভাবে আরে আমরা তো কাছাকাছি থাকি,সেটা বলব কি?আবার আমাদের বাড়ি চলে আসে তাহলে মা জ্যান্ত কবর দেবে।
নীলাঞ্জনা বলে ও তাই নাকি।নীলাঞ্জনা বলে তাহলে তুমি ব্যারাকপুর স্টশনে চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে থেকো সামনের রবিবার,আমি দেখা করে নেব।
নীলাদ্রি বলে তুমি ব্যারাকপুর চেনো? নীলাঞ্জনা বলে ঠিক আছে হাতে নীল জবা এনো,তাহলে চিনতে পারব। নীলাদ্রি বলে না না নীল জবা কোথায় পাব,নীলকন্ঠ হলেও হত।নীলাদ্রি বলে আমি নীল সার্ট পরব।তুমিও নীল জামা বা শাড়ি পরে এস।নীলাঞ্জনা বলে শাড়ি পরব,তবে আমার নীল পরা বারণ তাই নীল শাড়ি নেই,এমনকি নীল সালোয়ার ও নেই।ঠিক আছে মার শাড়ি যদি দেয় তাহলে পড়ে আসব।আচ্ছা আমি কিন্তু কুৎসিত,কালো।নীলাদ্রি বলে আমি বেঁটে ও কালো।
নীলাঞ্জনা কদিনের জন্য বাড়ি ফিরেছে।
নীলাঞ্জনা ব্যারাকপুরের প্রতিটি শাড়ির দোকানে নীল শাড়ি দেখা হয়ে গেছে।একটা দোকানে প্রায় নীল শাড়িটা পছন্দ,কি ব্লাউস পরব নীলাঞ্জনা ভাবছে।একজন সুদর্শন ছেলে ,বলে আপনি যদি না নেন তাহলে নেব।বাহ মেয়েটিতো খুব সুন্দর ,শাড়িটা পরলে মানাবে ভাল।আমি যার জন্য নেব সে তো কালো,তাকে হয়ত মানাবে না।
তারপর নীলাঞ্জনা শাড়িটা কিনে বাড়ি আসে।
মা বলে আজ তোকে এক পরিবার দেখতে আসবে বিকালে।কি বলো ,আমার নতুন চাকরি,আমি বিয়ে করব না। মা বলে না না ছেলেটিও বিয়ের পর হায়দরাবাদে বদলি নিতে পারবে,এখন অবশ্য কলকাতায় চাকরি করে। নীলাঞ্জনা ভাবে দেখলেই তো পছন্দ হবে তা তো নয়,অগত্যা বসে যায় পাত্রপক্ষের সামনেই।
বিকালে নীল শাড়িটায় পরে,মা বলে এই রঙ কেন পরলি,নীলাঞ্জনা বলে দেখোই না,জ্যোতিষীর কোন কথাটা ফলে।
পাত্র বলে আজ আপনি দোকানে ,সম্ভবত এই শাড়িটাই কিনতে গেছিলেন তাই না।ও আপনিও এই শাড়িটা পছন্দ করছিলেন তাই না।পাত্র বলে হুম,আমার বোনকে দেব বলে।কি জানি পাত্রকে ও পাত্রিকে উভয় পরিবারের পছন্দ হয়ে গেল।
নীলাঞ্জনা র বাবা ওনাদের ঠিকানা জিজ্ঞাসা করতেই,যা বললেন নীলাঞ্জনা চমকে ওঠে।নীলাঞ্জনা আস্তে করে বলে নীল রহিতদের বাড়ি।আপনার নাম নীলাদ্রি।আরে তুমি নীলাঞ্জনা।এই তুমি কালো,কুৎসিত।অমনি নীলাঞ্জনা বলে আর তুমি কালো বেঁটে।তারপর ওরা এতজোরে হাসতে থাকে দুই বাড়ির অভিভাবক মুখে হাত দিয়ে ভাবতে বসে,ব্যাপারটা কি হল!!
ওরা তো বিয়ে করতেই রাজি ছিল না।তারপর আর কি?শুভদিনে শুভ মুহূর্তে ওদের চারহাত একত্রিত হল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress