Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » নিষিদ্ধ লোবান || Syed Shamsul Haque » Page 13

নিষিদ্ধ লোবান || Syed Shamsul Haque

হিন্দু

মৃতদের আমরা সৎকার করব।

অবলম্বনহীন দ্বিতলের মতো, অসংলগ্ন মেঘ ও চিত্রকণার মতো, অসম আকার ও গতিবেগের মতো এই বর্তমান অন্তঃস্থলে স্থির কিন্তু ভবিষ্যতের দিকে স্থাপিত। মানুষ তার নিগঢ় শক্তির সংবাদ রাখে না। যে সারল্য সে লালন করে তা কাচের মতো ভংগুর এবং একমাত্র হীরক, কঠিনতম পদার্থই তাকে দ্বিখণ্ডিত করতে পারে। তখন সারল্যের অংশগুলো বিস্মৃতির ভেতরে দ্রবীভূত হয়ে যায়।

প্ৰযুক্তি ব্যতীত জীবন নয়।

বস্তুতপক্ষে আঘাত বিনা প্রতিরোধ একটি অসম্ভব প্ৰস্তাব। বীভৎস বাস্তবের বিপরীতে গীতময় স্বপ্ন অথবা বধির দুঃস্বপ্নের বিপরীতে রৌদ্র ঝলসিত বাস্তব; মানুষকে এই বিপরীত ধারণ করতেই হয় এবং তার ভূমিকা, অন্তত এতে আর সন্দেহ থাকার কথা নয়, এক ব্যায়াম প্রদর্শকের, যে আয়নায় আপনারই প্ৰতিবিম্বের সমুখে একটি ইস্পাত খণ্ডকে বাকিয়ে তার দুই বিপরীত প্ৰান্ত নিকটতর করে আনবার পর অবসর কিংবা করতালি পায় না, অচিরে দ্বিতীয় ইস্পাত খণ্ড তার হাতে পৌঁছে যায়।

নিশ্চয় আমি মাটি থেকে মানুষকে উৎপন্ন করেছি। মাটি ভিন্ন মানুষের মৌলিক কোনো অভিজ্ঞতা নয়। এবং প্রত্যাবর্তনের সুদূরতম সম্ভাবনা নেই জেনেও মানুষ মাটির সঙ্গেই তার শ্রেষ্ঠতম সংলাপগুলো উচ্চারণ করে যায়। বস্তৃত উচ্চারণও মাটির তীব্র আকর্ষণ থেকেই কাতর কিংবা সুখের, যোগ অথবা বিয়োগ ধ্বনির–নামান্তর। জননীর কাছে পুত্ৰশোকও কালক্রমে সহনীয় হয়ে যায়, ইউলেসিস অমরত্ব লাভের প্ৰস্তাব হেলায় উপেক্ষা করে ফিরে আসে অনুর্বর ইথাকার।

মৃতদেহ আমরা সেই মাটিতে ফিরিয়ে দেব, নতজানু হয়ে মুঠো মুঠো মাটিতে ঢেকে দেব তাদের দেহ, আমরা কেশ মার্জনা করব না, আমরা মুখ সংস্কার করব না, জীবিত এই দেহে মাটির প্রলেপ ধারণ করে আমরা বিপন্ন বাস্তবের ভেতর দিয়ে জনপদের দিকে ফিরে যাব।

স্মৃতির চেয়ে সম্পদ আর কী আছে? জনপদে এখন কণ্টিকারী ও গুল্মলতার বিস্তার, শস্য অকালমৃত, ফল কীটদষ্ট, ইদারা জলশূন্য। সড়কগুলো শ্বাপদেরা ব্যবহার করে এবং মানুষ অরণ্যে লুকোয়। দিন এখন ভীত করে, রাত আশ্বস্ত করে। বাতাস এখনো গন্ধবাহ, তবে কুসুমের নয়, মৃত মাংসের। তবু, স্মৃতি বিনষ্ট অথবা নিঃশেষে ধৌত নয়। রমণীর গর্ভ বন্ধ্যা নয়। পুরুষের বীর্য ব্যৰ্থ নয়। গ্রন্থগুলো দগ্ধ নয়। প্ৰতিভা অন্তর্হিত নয়। মানুষ সেই লুষ্ঠিত জনপদেই স্মৃতি বীজের বাগান আবার করে।

বিলকিসও নিরুত্তর দাঁড়িয়ে থাকে।

বিলকিস ও সিরাজ দুটি আলাদা ঘরে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

একাকী ঘরে প্রশ্নের পর প্রশ্ন চলতে থাকে। তোমার নাম?

সিরাজ।

বাড়ি?

জলেশ্বরী।

তোমার বোনের নাম?

বিলকিস।

ধর্ম?

ঠিক আগেই বিলকিসের উল্লেখ ছিল, তাই মিথ্যা না বলেও নিরাপদ উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়। মুসলমান।

ইন্ডিয়া কবে গিয়েছিলে?

ইন্ডিয়া যাই নি।

ইন্ডিয়া থেকে কবে এসেছ।

আমি এখানেই ছিলাম।

ইন্ডিয়া থেকে কজন এসেছে?

জানি না।

ইন্ডিয়া থেকে কারা এসেছে?

জানি না।

তাদের নাম কী?

জানি না।

কোথায় আছে?

জানি না।

খালের পুলে ডিনামাইট কে পেতেছে?

জানি না।

সড়কে মাইন কে পেতেছে?

জানি না।

কী জান?

নীরবতা।

কলমা জান?

নীরবতা।

নামাজ জান।

নীরবতা।

গালে প্ৰচণ্ড একটা চড় বসিয়ে মেজর চিৎকার করে ওঠে, বোনের সঙ্গে শুতে জান?

স্তম্ভিত হয়ে যায় সিরাজ।

তার গালে চড় মেরে এক ধরনের উপশম হয় মেজরের। বিলকিসের শরীর এবং সম্ভাবনা তাকে অনবরত তাড়না করে চলেছিল। সৈনিককে সে নির্দেশ দেয় প্রহার চালিয়ে যাওয়ার জন্যে। দ্রুত পায়ে বেরিয়ে বিলকিসকে যে ঘরে রাখা হয়েছে, সেখানে ঢোকে।

সেখান থেকে সিরাজের তীব্র আর্তনাদ শোনা যায়। মেজর ঘরে ঢুকতেই বিলকিস তার দিকে দৃষ্টিপাত করে। না, তোমাকে প্রহার করব না। স্বীকারোক্তির জন্যে তোমাকে বাধ্য করব না। মেজর কাছে এগিয়ে আসে।

স্বীকারোক্তি তোমার ভাই করবে।

নীরবতা।

কোনো কিছুর জন্যেই তোমাকে বাধ্য করব না, এমনকি তোমার দেহের জন্যেও নয়।

বিলকিস মেজরের দিকে ঘুরে তাকায়।

মেজর নিঃশব্দে হাসে।

তুমি নিজেই আমার কাছে আসবে।

দ্রুত মুখ ফিরিয়ে নেয় বিলকিস।

দূরে সিরাজের আর্তনাদ এখন গোঙানিতে পরিণত হয়। তারপর হঠাৎ তা স্বন্ধ হয়ে যায়। দিনের সূর্য অস্ত যায়। রাতের চাঁদ উঠে আসে। ইস্কুলের মাঠে ফুটবলের গোলপোস্টকে আতিবিস্তৃত ফাঁসি কাষ্ঠের মতো দেখায়। টিনের ছাদের নিচে চামচিকে ঝুলে থাকে। দূরে কোথায় তক্ষক ডেকে ওঠে। বহুক্ষণ অনুপস্থিতির পর মেজর আবার আসে।

হাঁ, তুমি নিজেই আমার কাছে আসবে।

নীরবতা।

আমি বাধ্য করব না। কাউকে আমি বাধা করি না।

মেজর মনে করতে চায় না। কিন্তু মনে না করে পারে না তার নিজের একটি শারীরিক অক্ষমতার কথা। বড় দ্রুত ব্যয়িত হয়ে যায় সে। সেই অভাবটুকু তাকে পূরণ করতে হয় আত্মম্ভিরতা দিয়ে। রমণীর প্রতি একই সঙ্গে প্ৰবল আকর্ষণ ও গভীর বিরক্তি সে বোধ করে থাকে।

আসলে আমি অত্যন্ত সহৃদয়।

নীরবতা।

সহৃদয়তার পরিচয় তুমি পেয়েছ আমার সহিষ্ণুতায়। নিশ্চয়ই শুনেছি, আমার বন্ধুদের অনেকে রমণীদের বাধ্য করেছে। আমি করি নি।

নীরবতা।

তুমি স্বেচ্ছায় আমার সঙ্গে মিলিত হবে।

নীরবতা।

পানি দেওয়া হয়েছে, গোসল কর নি কেন?

নীরবতা।

খাবার দেওয়া হয়েছে, খাও নি কেন?

নীরবতা।

লেখাপড়া কতদূর করেছ? দেখে শিক্ষিত মনে হয়।

নীরবতা।

ইংরেজি বলতে পোর?

নীরবতা।

যে মেয়ে ইংরেজি বলতে পারে, আমি তাকে পছন্দ করি।

নীরবতা।

তারা বোঝে। মনের প্রয়োজন বোঝে। শরীরের বিভিন্ন প্রয়োজন বোঝে।

নীরবতা।

তুমি বিবাহিতা? অবশ্যই তুমি বিবাহিতা। তোমাকে দেখায় বিবাহিতা। তোমার স্বামী, কী বলে, তোমার সঙ্গে, কী বলে, একইভাবে প্রতি রাতে মিলিত হয়?

নীরবতা।

তোমার স্বামী কোথায়? ইন্ডিয়ায়? জান, হঠাৎ হাসি পেল কেন? আমাদের হাতে কেউ মৃত্যুদণ্ড পেলে আর তার আত্মীয়স্বজন খোঁজ নিতে এলে আমরা বলি–ইন্ডিয়ায় চলে গেছে।

নীরবতা।

একইভাবে না বিভিন্নভাবে?

নীরবতা।

মেজর ফ্লাক্স খুলে হুইস্কি ঢেলে নেয়। নিঃশব্দে পান করে অনেকক্ষণ ধরে। বিলকিসের থেকে চোখ এক মুহূর্তের জন্যে ফিরিয়ে নেয় না। বাইরে টহলদার সৈনিকদের পদচারণা শোনা যায়।

আচ্ছা, অন্তত একটা কথার উত্তর দাও। আমি তোমাকে আকৃষ্ট করি?

নীরবতা।

আমি অপেক্ষা করতে পারি। আজ রাতে আমার ডিউটি নেই। উত্তর পেলে কালও আমি ছুটি নিতে পারি। উর্দু না জানলে ইংরেজিতে উত্তর দাও। যারা ইংরেজি বলে আমি পছন্দ করি। তুমি আমাকে পছন্দ কর?

চেয়ার টেনে কাছে সরে আসে মেজর।

ভরসা দিতে পারি, তুমি আমাকে পছন্দ করবে।

মেজর আরো খানিকটা সুরা ঢেলে নেয়।

কেন করবে না? আমার বীজ ভালো। আমার রক্ত শুদ্ধ। রমণী স্বয়ং উদ্যোগী হলে অবশ্যই আমাতে তৃপ্ত হতে পারবে। আমি কি তোমাকে আকৃষ্ট করি? আমি তোমোয় সন্তান দিতে পারব। উত্তম বীজ উত্তম ফসল। তোমার সন্তান খাঁটি মুসলমান হবে, খোদার ওপর ঈমান রাখবে, আন্তরিক পাকিস্তানি হবে, চাও না সেই সন্তান? আমরা সেই সন্তান তোমাদের দেব, তোমাকে দেব, তোমার বোনকে দেব, তোমার মাকে দেব, যারা হিন্দু নয়, বিশ্বাসঘাতক নয়, অবাধ্য নয়, আন্দোলন করে না, শ্লোগান দেয় না, কমিউনিস্ট হয় না। জাতির এই খেদমত আমরা করতে এসেছি। তোমাদের রক্ত শুদ্ধ করে দিয়ে যাব, তোমাদের গর্ভে খাঁটি পাকিস্তানি রেখে যাব, ইসলামের নিশান উড়িয়ে যাব। তোমরা কৃতজ্ঞ থাকবে, তোমরা আমাদের পথের দিকে তাকিয়ে থাকবে, তোমরা আমাদের সুললিত গান শোনাবে। আমি শুনেছি, বাঙালিদের গানের গলা আছে। আমি কি তোমাকে আকৃষ্ট করি?

ঢক ঢক করে অনেকটা সুরা এবার গলায় ঢেলে নেয়। মেজর। এতক্ষণের বিরতি পুষিয়ে নেয় একবারে। স্মিত চোখে তাকিয়ে থাকে বিলকিসের দিকে। সেখান থেকে সাড়া আসে না। বিলকিস স্থির দৃষ্টিতে দেয়ালের দিকে নিবদ্ধ থাকে।

দেয়ালের গায়ে অকস্মাৎ গেলাস ছুঁড়ে দিয়ে মেজর চিৎকার করে বলে, আমি বলেছি, বাধ্য তোমাকে করব না। আমি এখন কুকুরের সঙ্গে কুকুরের মিলন দেখব।

শরীরের ভেতরে মেজর প্রবল আকর্ষণ বোধ করে নিজের হাতে বিলকিসকে বিবসনা করবার জন্যে। এক পা কাছেও আসে। কিন্তু অন্তঃস্থল থেকে দুর্বল বোধ করে সে। গুলি করতে ইচ্ছে হয়, করে না, তার বদলে আর্দলীকে ডাকে। নির্দেশটা তাকেই দেয়।

আর্দালি সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে রূঢ় গলায় বিলকিসকে উঠে দাঁড়াতে বলে। বিলকিস যেন শুনতে পায় নি। তখন তার বাহু ধরে হ্যাচক টান দেয় আর্দালি।

মেজর ঈষৎ বিরক্ত গলায় বলে, আহ, ধৈর্যের সঙ্গে কাজ কর।

আর্দালির বলবান দেহটিকে সে ঈর্ষা করে আর সেটা চাপা দেবার জন্যে আরো খানিকটা পান করে।

হাজার হাজার বছর কাপড় পরে মানুষের রক্তের ভেতর আচ্ছাদনের প্রয়োজনীয়তা ঢুকে গেছে। পোশাক তার দ্বিতীয় ত্বক। সেই ত্বকে টান পড়তেই বিলকিসের প্রতিক্রিয়া হয় বাধা দেবার। সে দেয়, কিন্তু সফল হয় না। আর্দালি অবিলম্বে তার শাড়ি হরণ করে নেয়।

আহ, ধৈৰ্য, ধৈৰ্য।

চেয়ারে বসে মেজর ক্রমাগত মাথা এপাশি-ওপাশ করতে থাকে।

আর্দালির হাতে বিলকিসের দেহ-স্পর্শ কল্পনা করে সে নিজের হাতের তালু অনবরত কচলাতে থাকে।

জুম্মা খাঁ, ধৈর্য।

বিবসনা হয়ে যায় বিলকিস। দৃষ্টিপাত করেই চোখ ফিরিয়ে নেয় মেজর। চোখের পাতা অন্তিম পর্যন্ত বুজে, হাত কচলে নগ্ন রমণীর স্মৃতি যেন সে পিষ্ট করে ফেলতে চায়। মুখ সম্পূর্ণ উল্টো দিকে ফিরিয়ে রেখেই আর্দালিকে সে কাছে ডেকে অস্ফুট স্বরে আদেশ করে সিরাজকে নিয়ে আসতে।

আর্দালি বেরিয়ে যেতেই মেজর ধীরে ধীরে মুখ ফেরায়, চোখ ফেরায়, প্রথমে মিটমিট করে, তারপর পরিপূর্ণ চোখে তাকিয়ে দ্যাখে। উঠে দাঁড়িয়ে বেশ দূরত্ব সত্ত্বেও কণ্ঠ না তুলে, ফিস ফিস করে বলে, সুন্দর দেহ!

খাটো বন্দুকধারী এক সৈনিক সিরাজকে ঘরের ভেতর নিয়ে আসে।

সিরাজ তার প্রহরাধীন বলে সৈনিক চলে যায় না। নগ্ন রমণী দেখে তার মুখে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। সে দরোজার কাছে সটান দাঁড়িয়ে থাকে দরোজার পাল্লার দিকে তাকিয়ে।

ঘরে ঢুকেই বিলকিসকে দেখে চোখ বুজে ফেলে সিরাজ। অবসন্ন দেহে চোখ বুজেই সে দাঁড়িয়ে থাকে। বিলকিস চোখে বোজে না। তার চোখ উন্মুক্ত এবং স্থির।

সিরাজের চারপাশে একবার ঘুরে আসে মেজর। তারপর আর্দালিকে নির্দেশ দেয় এবার উচ্চ কষ্ঠে, একেও ন্যাংটো কর।

চমকে উঠে সিরাজ চোখ খোলে। চোখ খুলতেই বিলকিসকে দেখতে পায়। সঙ্গে সঙ্গে চোখ বুজে সে দুহাত মুষ্টিবদ্ধ করে নিজের কোমরের নিচে চেপে ধরে।

আর্দালি তার শার্ট খোলার চেষ্টা করেও যখন পরাস্ত হয়, টান মেরে ছিঁড়ে ফেলে শার্ট। সঙ্গে সঙ্গে নতজানু হয়ে সিরাজ মুষ্ঠিবদ্ধ হাত কোলের ওপর চেপে ধরে মাথা নিচু করে গুটিয়ে রাখে নিজেকে। তার শরীর থরথর করে কাঁপতে থাকে।

তখন মেজর লাথি মেরে কাৎ করে দেয় তাকে। আর্দালি ঝাঁপিয়ে তার বুকের ওপর উল্টোমুখে বসে ট্রাউজারের বোতাম বদ্ধমুষ্ঠির ভেতর থেকে ছাড়াতে চেষ্টা করে।

সিরাজ চিৎকার করে ওঠে, না।

নিঃশ্বাসরুদ্ধ করে বিলকিস দাঁড়িয়ে থাকে। শরীর চৈতন্য থেকে স্বাধীন হয়ে যায় এবং তার শরীরও থরথর করে কাঁপতে থাকে।

নাআআ।

মেজর পা দিয়ে সিরাজের বুকের ওপর চেপে ধরে বলে, বাঙালিরা কুকুরের অধিক নয় কুকুরের ভাইবোন নেই।

সিরাজের হাত দুটো ছাড়িয়ে আর্দালি নিজের ভাঁজ করা দুই হাঁটুর তলায় চেপে ধরে রাখে। তারপর বোতামে হাত দেয়।

না না না।

পটপট করে বোতামগুলো খুলে ফেলে আর্দালি।

বিলকিস চোখ বন্ধ করে। একটু আগে সে থরথর করে কাপছিল, এখন স্থির হয়ে যায়।

আর্দালি প্রথম অনুধাবন করতে পারে না। মুহূর্তের জন্যে সে বিমূঢ় হয়ে যায়। তারপর লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে উত্তেজনায় চিৎকার করে বলে, স্যার, ইয়ে তো হিন্দু হ্যায়?

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress