কে তুমি?
হাড় হিম আবছায়া কাঁচে ঠিক চেনা যায় না তোমাকে
বিপদাপন্ন, ক্লান্ত, ঠুনকো এক রক্তাক্ত পুতুল!
শতছিন্ন আঁচলে ঢাকা মুখ, বোরখার গহ্বরে পুরোটা,
তুমি কী মানুষ? অভিধানে তুমি মানবী—-
তুমি কী শুধুই নারী, নাকি সর্বস্ব হারানো একা এক ঈশ্বরী?
রক্তাক্ত কাঁচা মাংস, উপভোগের উপকরণ কী নারী? আ-জন্ম?
শয়তানের ইশারায় নিষিদ্ধ ফলের আকর্ষণে কামনা জ্বলে উঠেছিল—
প্রথম পুরুষ আদম–প্রথম নারী ইভ শরীরের ভাষা খুঁজেছিল
ভোগের আরতী পরিনামহীন জেনেছিল,
ভালোবাসার প্রলেপ কী ছিল সেদিনের সেই সম্ভোগে? হয়তো না—
মিলন ছিল প্রথম শরীরের আবিষ্কারে,ঐকান্তিক চাওয়া কী ছিল না তাতে?
পরতে পরতে খুলে, ভোগে মত্ত ছিল প্রথম পুরুষ,
কাঁটাবনে উত্তপ্ত শিহরণে
প্রথম কুমারীত্ব হারিয়েও তৃপ্ত পূর্ণবয়স্ক এক নারী শরীর,
ধারণ করেছিল গহন গভীরে ইভ,হাজার মশাল জ্বেলে
আদম ছিঁড়ে–খুঁড়ে টুকরো করেনি লালসার উন্মাদনায়, প্রলোভনে——
বদলে গেছে দিন, আদমের চাওয়ার ধরন বদলেছে,
স্বেচ্ছায় দানের চেয়ে, ভোগ-দখলের মাদকতায় পুরুষত্ব আছে,
পাঞ্চালী আজ আর কুরু রাজসভায় আবদ্ধ নেই
আধুনিক সমাজের বুকে যথেচ্ছ ছড়িয়ে আছে—-
নারী–স্বাধীনতা নিয়ে হাজার একটা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে,
জেণ্ডার–ইক্যুয়েলিটি নিয়ে জেড–জেন শ্লোগান তুলছে,
ট্যাবু ভাঙতে ভীষণ টঙ্কারে প্রকাশ্যে যে নারী গলা ফাটাচ্ছে
সেই নারী-ই তো অটো শ্যায়ারে রাতের আঁধারে ধর্ষিতা হচ্ছে,
বাহ্ রে সমাজ! বাহ্ রে নারী স্বাধীনতা!
নীল ছবির দুনিয়ার কাল্পনিক শারীরিক দৃশ্য অঘটন ঘটাচ্ছে,
একটাই প্রশ্ন মনে, রেহাই পায় না কেন চার বছরের একরত্তি মেয়ে?
নষ্ট শিশুবেলা, যে জানে না, বোঝে না, শোনেনি সেক্স শব্দের মানে,
কে বুঝবে ওর অব্যক্ত শারীরিক, মানসিক, গভীর ক্ষতের যন্ত্রণা?
অস্থির শরীর নিয়ে চেয়ে রয় শূন্যে!!
আদম–ইভের বংশধরেরা জেনেছে নারী ভোগ্যা, মুদ্রার এপিঠ–ওপিঠ,
কাগজের পাতা জুড়ে ছড়ানো রোজ ধর্ষিতা মেয়েদের টুকরো টুকরো খবরে,
সভ্যতার এই শতাব্দীতে বহু শিশু আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভোগে
কবির “খুকু” তেলের শিশি কত টুকরোয় ভেঙ্গেছিল?
জন্ম–জন্মান্তরে “খুকু”র শাস্তি কে এমন দিলো?