ঝিকিমিকি বেলা ;
গাছের ছায়া কাঁপে জলে ,
সোনার কিরণ করে খেলা ।
দুটিতে দোলার’পরে দোলে রে ,
দেখে রবির আঁখি ভোলে রে ।
গাছের ছায়া চারি দিকে আঁধার করে রেখেছে ,
লতাগুলি আঁচল দিয়ে ঢেকেছে ।
ফুল ধীরে ধীরে মাথায় পড়ে ,
পায়ে পড়ে , গায়ে পড়ে ,
থেকে থেকে বাতাসেতে ঝুরু ঝুরু পাতা নড়ে ।
নিরালা সকল ঠাঁই ,
কোথাও সাড়া নাই ,
শুধু নদীটি বহে যায় বনের ছায়া দিয়ে ,
বাতাস ছুঁয়ে যায় লতারে শিহরিয়ে ।
দুটিতে বসে বসে দোলে ,
বেলা কোথায় গেল চলে ।
হেরো , সুধামুখী মেয়ে
কী চাওয়া আছে চেয়ে
মুখানি থুয়ে তার বুকে ।
কী মায়া মাখা চাঁদমুখে ।
হাতে তার কাঁকন দুগাছি ,
কানেতে দুলিছে তার দুল ,
হাসি-হাসি মুখখানি তার
ফুটেছে সাঁঝের জুঁই ফুল ।
গলেতে বাহু বেঁধে
দুজনে কাছাকাছি —
দুলিছে এলো চুল ,
দুলিছে মালাগাছি ।
আঁধার ঘনাইল ,
পাখিরা ঘুমাইল ,
সোনার রবি-আলো আকাশে মিলাইল ।
মেঘেরা কোথা গেল চলে ,
দুজনে বসে বসে দোলে ।
ঘেঁষে আসে বুকে বুকে ,
মিলায়ে মুখে মুখে
বাহুতে বাঁধি বাহুপাশ ,
সুধীর বহিতেছে শ্বাস ।
মাঝে মাঝে থেকে থেকে
আকাশেতে চেয়ে দেখে ,
গাছের আড়ালে দুটি তারা ।
প্রাণ কোথা উড়ে যায় ,
সেই তারা পানে ধায় ,
আকাশের মাঝে হয় হারা ।
পৃথিবী ছাড়িয়া যেন তারা
দুটিতে হয়েছে দুটি তারা ।