নরম মাটির গন্ধে, এরোপ্লেন, নিঃশব্দে নেমে আসছে নিচুতে
দরজা খোল মা, আমি ফিরে এসেছি আবার তোমার সেই পুরোনো ছেলে
আমি তো গৌতম নই, রাস্তায় কোনো
মৃতদেহ দেখলেই আলোর জন্যে অন্য কোথাও ছুটে যাবো—এক ভিড়
অন্ধকারে, সারাদিন আজ ঘুরে বেড়িয়েছি—সারা শরীর নুন-বাতাসে
আজ ভর্তি হয়ে গ্যাছে—চোখের তলায় চিৎ হয়ে শুয়ে আছে পক্ষীরাজ
দরজা খোল মা, আমি ফিরে এসেছি আবার তোমার সেই পুরোনো ছেলে
পরিব্রাজকের মতো চোখ, আজ সন্ধেবেলা গাঢ় জবাফুলের সামনে
ঝুঁকে পড়েছিলাম একটু হলে—ঠিক সে মুহূর্তে, ঘূর্ণিঝড়ে ঘূর্ণিঝড়ে
যেন অসম্ভব ক্ষয়ে গেছি আমি—সাত লাফে সরে এসে রাস্তার বাঁ-পাশ দিয়ে
হনহন করে হেঁটে গেছি—এ দিক ও দিক থেকে, কতো মানুষ পিছলে
সরে গ্যালো যে তখন
কতো ট্রাম-বাস ছুটে এলো এ দিক ও দিক থেকে, কতো মহিলা অদ্ভুতভাবে
হেসে উঠলো ও রাত এলো
আমি কোনো কিছুর শব্দই পেলাম না
বছর বছর ধরে মিউজিয়মের
কাচের বোতলে যেন উবু হয়ে আমি বসেছিলাম
বছর বছর ধরে ইস্কুলের ছেলেমেয়ে ও তাদের মাস্টারমশাই ও দিদিমণি
ইস্কুলের ছেলেমেয়ে ও তাদের বাবা-মা ও ভাই-বোন—উৎসুকভাবে
তাকিয়ে ছিলো আমার দিকে
আজ সেই কাচের বোতল আমি ভেঙে ফেলে বেরিয়ে এসেছি—আমি আজ
ভয়ঙ্কর ভাঙা কাচ চারিদিকে ছুঁড়ে ফেলে
নিজেরই শরীরে ঢুকে, কুঁজো হয়ে, লুকিয়ে আছি রাত্তিরবেলা
দরজা খোল মা, আজ সারাদিন যতোক্ষণ একা একা ঘুরে বেড়িয়েছি
একজোড়া গম্ভীর লাল চোখ—সারাক্ষণ আমার পেছন পেছন
আমাকে তাড়া করে ফিরেছে।