ঢপের চপ
আজ আমি আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি অত্যন্ত জনপ্রিয় ঢপের চপের রেসিপি নিয়ে। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক সেই রেসিপি —
ঢপের চপ বানাতে 250গ্রাম ঢপের সাথে– একশোগ্রাম ঘটনাকে মিলিয়ে পরিমানমতো বুদ্ধি ব্যবহার করে ভালো চটকে মেখে নিন।তারপর পরিস্থিতি,পরিবেশ বুঝে গোল গোল চপের আকারে গড়ে নিন। একটা ঘোড়ার ডিম ফাটিয়ে ব্যাটার বানিয়ে তাতে এক চিমটি চমক মিশিয়ে কথার মারপ্যাঁচে ডুবিয়ে গরম তেলে ভালো করে ভেজে নিন।
তারপর সেটাকে সোনার পাথরবাটিতে কাঁঠালের আমসত্ত্ব সহযোগে মুচমুচে এই ঢপের চপ পরিবেশন করুন।
এমনতর ঢপের চপের ব্যবসা করে মিষ্টার স্বপ্নময় দে তার ব্যাঙ্ক ব্যালেন্সকে শূন্য থেকে শূন্যতর করে ফেলেছেন।
ভাবছেন এটা আবার কেমন কথা।তবে একটু পরিষ্কার করেই বলি।
জিরোব্যালেন্সের এ্যাকাউন্ট খুলে প্রথমে 100 টাকা রোজগার করেন তারপর থেকে তাকে আর শূন্যের পেছনে তাকিয়ে দেখতে হয় নি।একের পর এক শূন্য এসে তার এ্যাকাউন্টে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে।
তার অভিনব এই রেসিপি জগত বিখ্যাত হয়ে ওঠে।
ঢপবাজ জগতের কিছু নাগরিক একে রিমেক করে কি করে আরো মুচমুচে করে তুলে মিষ্টার স্বপ্নময়কে শূন্যে ছুঁড়ে ফেলা যায় তাতে তৎপর হয়ে ওঠেন।
শুরু হয় ঢপচপ বাজারে নতুন নতুন ঢপের চপের —নানা স্বাদের ঢপেরচপে বাজার ম ম করেছে।
এই ঢপের চপের এক অভিনব বিশেষত্ব — ব্যবসায়ীরা পরম যত্নে এই চপ জনগনকে খাইয়ে ভীষণ ভাবে তুষ্টি লাভ করেন।
এই চপ রাস্তায় ঘাটে ঠ্যালা থেকে শুরু করে পাঁচতারা হোটেল সর্বত্রই পাওয়া যায়।
ঠ্যালার ঢপেরচপ সবসময় জনগনের আশেপাশে ঘোরাফেরা করে।
যারা খাওয়ান তারা উদার মনে এই চপ বিতরণ করেন।
যারা খান তারাও এই চপ খাবার পর হেঁচকি তুলতে থাকেন।
বিজ্ঞাপন জগতেও এই চপের অবাধ আনাগোনা
ভ্যাবলবাবু টিভিতে এমন একটি মুচমুচে চপ খেয়ে নিজের নধর দেহখানি নাড়িয়ে দোকান থেকে নতুন চুলের আশায় “আশারবানী”কেশ তেল নিয়ে লাগাতেই তারমাথার বিয়াল্লিশটি চুল বারোতে এসে দাঁড়ায়।
গিন্নীর আব্দারে আনেন “আগলি” কোম্পানীর টুথ পেষ্ট যা কিনা পোকা খাওয়া দাঁতকে নতুন করে দেবে বলে ওয়াদা করেছিল।কিন্তু একমাস ব্যবহারের পর ভ্যাবলবাবুর স্ত্রীর টুথব্রাশের খরচ পাকাপাকিভাবে বেঁচে গিয়েছিল।
এহেন ঢপেরচপ মানবকুলে রমরমিয়ে বিকোলেও কীটপতঙ্গকূলের কাছে নিজেদের ক্ষমতা
প্রমাণ করার জায়গা।
একটু ভেঙ্গে বলি।সেদিন পটলা অফিস থেকে ফেরার সময় — “ইঁদুরের বাবা,দাদু সহ তিন পুরুষকে বিদায় করুন।ঘরের ত্রিসীমানায় ইঁদুরের ছবিও দেখতে পাবেন না”–এমন ডাকে মোহিত হয়ে তিনটি প্যাকেট একশো টাকায় কিনে ফেলে।
ভীষণ খুশি হয়ে সেগুলোকে ছড়িয়ে রাখে।
হঠাৎ রাত্রেবেলা কিচকিচ ,চিকচিক আওয়াজে ঘুম ভেঙ্গে দেখে বিকেলের আনা সেই প্যাকেট যেন ব্রিগেডের সমাবেশ।তার ওপরে চেপেই মিটি়ং চলছে।
কিছুক্ষণের মধ্যে দলে দলে বাহিনী এসে পটলার ওপর চড়াও হয়ে –“আমাদের তিনপুরুষকে বিদায় করা? দেখ তোর চোদ্দপুরুষকে কিভাবে কাটি “বলে দেওয়ালে টাঙানো বাবা ,ঠাকুরদার ছবির দিকে ছুটতে থাকে।
পটলা তাদের হাতে পায়ে ধরে সেই প্যাকেটকে ঘর থেকে বিদায় করে সে যাত্রায় নিস্তার পায় —একশো টাকার মুচমুচে ঢপের চপের নেতিয়ে যাওয়া আবেশে রাতটা কাটিয়ে দেয়।
পাঠকবর্গ আপনারা যদি এ জাতীয় ঢপের চপ খেতে পছন্দ করে থাকেন তবে সত্বর যোগাযোগ করুন ঢপের চপ কাউন্টারে ।
আপাতত সেখানে পাবেন বিভিন্ন স্বাদের,বিভিন্ন রকমের মুচমুচে ঢপের চপ।স্টক অঢেল।তবে সময় কম।তাই দেরী না করে তাড়াতাড়ি চলে আসুননননননননন।