Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » টক্কর || Subhra Saha Shelley

টক্কর || Subhra Saha Shelley

টক্কর

বোসগিন্নি আর গুহগিন্নির ছোটখাটো বিষয়ের রেষারেষির কথা পাড়াপ্রতিবেশী সবাই জানে। দুই পরিবারের মেলামেশা, ভাবভালোবাসারও যেমন অন্ত নেই তেমনি কে কাকে পদে পদে ট্ক্কর দেবে — সেটা নিজেদের মধ্যে চলতেই থাকে।

এই ধরুন বোসগিন্নি যখন প্রথম প্রথম গুহগিন্নিকে “দিদি ” বলে সম্বোধন করতো —গুহগিন্নিও তার উত্তরে বোসগিন্নিকে “বড়দি” বলে ডেকে নিজের মনের সুখ অনুভব করেছিলো। ব্যাপারটা যেহেতু বয়স নিয়ে তাই দুজনেই নিজেদের মধ্যে একটা আপোষ করে নেয়– “কেউ কাউকে দিদি বা বড়দি বলে ডাকবে না।”

এই পর্বে রফা হলেও শুরু হলো আসল পর্ব—

বোসগিন্নির নাতনি হবার পর নাম রাখলেন “মিঠাই”–

বছর কয়েকপর গুহগিন্নির ঠাম্মা হবার পালা। রোগা প্যাংলা নাতনির নাম শুধুমাত্র বোসগিন্নিকে টক্কর দিতে রাখলেন “গোল্লা”—

ছেলে বৌমা যদিও মায়ের এই নামকরণের স্কোর বোর্ডে গোল্লাই দিলো কিন্তু গুহকাকিমাকে যে মা জব্বর টক্কর দিয়েছে সে কথা বলতে ভুললো না— এবার গোল্লাকে রসে টইটুম্বুর করবে আর কে গোল্লার সামনে কাঁচা শব্দটি বসাবে সেটা তাদের ওপর ছেড়ে দেওয়া হলো।

গয়না , শাড়ি থেকে টক্কর নিতে নিতে শেষে নাতনিদের নামেও?— ভেবে যখন পাড়া প্রতিবেশী হাসাহাসি করছে ঠিক তখন বিষয়টি শুধুমাত্র গিন্নীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রইলো না।কর্তারাও ময়দানে নেমে পড়লেন।

বোসবাবু বাজারে সরস্বতী পূজোর আগে নতুন একখানা দোকান খুলে বসলেন নাম রাখলেন “ওহ্ মাই গড”—

এমন অদ্ভুত নামকরণের দোকান দেখে সকাল থেকে সন্ধ্যে জনতার ভীড়–

বিষ্ময় নিয়ে দোকানে ঢুকে উৎসাহী জনগন সরস্বতীপূজোর বাজার হাসিমুখে করে বেড়িয়ে আসছেন। এদৃশ্য দেখে গুহবাবুও নিজেকে স্হির রাখতে পারলেন না। জব্বর একটা টক্কর দেবার পরিকল্পনা করলেন।

যাহা ভাবা তাহা কাজ —

দিন পনেরোর মধ্যেই “ওহ্ মাই গড “দোকানের পাশের বন্ধ দোকানের ঝাঁপ খুলে ফেললেন গুহবাবু–সাথে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিলেন “ওহ্ মাই ডগ”—

শহরবাসীর এবার নাকানিচোবানি খাবার উপক্রম —
এ আবার কি ? নিন্দুকেরা তো কেউ কেউ ভেবেছিলেন “স্পেলিং মিসটেক “—

নিন্দুক বুদ্ধিজীবিরাও বার কয়েক টিভিতে নাম না উল্লেখ করে শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর কষাঘাত করতে ছাড়েন নি—নইলে এমন সামান‌্য একটা জিনিসেও এতবড় মিসটেক? অতি উৎসাহী জনগন বাইরে থেকে দোকানের ভেতরটা উঁকিঝুঁকি মারতে থাকেন।

নাহ্ তাতেও তেমন কোন সুরাহা হয় না—

এমন সময় শহরের নামজাদা পশুপ্রেমিক পলাশবাবুকে সহাস্যবদনে “ওহ্ মাই ডগ”থেকে বের হতে দেখেন প্রশ্নটা ছুঁড়েই দেন ” আচ্ছা দাদা কিসের দোকান বলুন তো?” বিগলিত হাসি হেসে পলাশবাবু “উফ্ মিষ্টার গুহকে ধন্যবাদ না জানিয়ে পারছিই না —এমন একটা দোকানের যে কি প্রয়োজন ছিলো কি বলবো।”

প্রশ্নকর্তার উত্তেজনার পারদ তখন চরচর করে উঠছে ” আরে মশাই আগে তো বলুন কিসের দোকান?” হাতের জিনিসগুলো দেখিয়ে পলাশবাবু বলেন “আরে সেটাই তো বলছি —বড় উপকার করলেন মিষ্টার গুহ।”

হাতে বকলেস ,পেডিগ্রি আরো অনেককিছু দেখে এবার একটু রেগে প্রশ্নকর্তা ভদ্রলোক বলেন “ভনিতা ছেড়ে একটু ঝেড়ে কাশুন না দাদা” পলাশবাবু তখন বলে চলেছেন “এতদিনে আমার লালু , ভুলু , টমিদের প্রয়োজনের কথা কেউ সত্যিই ভেবেছে ?”

মাথা চুলকে প্রশ্নকর্তার মুখ থেকে বেড়িয়ে আসে এতো দেখি “গলতি সে মিসটেক।”–

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress