Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

ঝড়ের কাছে কেউ ঠিকানা রেখে যায় না, বরং অনেকে ঠিকানাই ঝড়ের মাঝে হারিয়ে যায়!

১-

রেমাল ঝড়ের রাতে আকন্ঠ মদ খেয়ে সুনীল বেহুঁশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। তারপর মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেল প্রবল চিৎকার চেঁচামেচির শব্দে। ঘুম চোখে দরজা খুলে বাইরে এসে দেখল তার ঘরের উপর বড় আমগাছটা ভেঙে পড়েছে। পাশের বিমলদের বাড়ির লোকজন চিৎকার করছে যাতে ঘরের বাইরে নিরাপদে বেরিয়ে আসে সুনীল। এই বিমলদের সঙ্গে অথচ সুনীলদের বহুদিনের কোর্ট কাছারি , মামলা মোকদ্দমা বাড়ির সীমানা নিয়ে । এতদিন দুই বাড়ির মধ্যে কথা বন্ধ ছিল।

২-

আয়লার সময় বাড়ি ঘরদোর, স্বামীকে হারিয়ে ছেলের হাত ধরে এক বস্ত্রে শহরে চলে এসেছিল গীতা । সাগরদ্বীপ থেকে এসে মাধব বাবুদের ফ্ল্যাটে সর্বক্ষণের কাজ আর থাকা খাওয়ার জায়গা পেয়েছিল গীতা আর তার ছেলে। তারপর থেকে এটাই তার আর ছেলের ঠিকানা। তাই বড় ঝড় উঠলে গীতার বুকটা কেঁপে ওঠে এক অজানা আশঙ্কায় ছেলেকে জড়িয়ে ধরেন ,যাতে আর কিছু হারাতে না হয়।

৩-

এরকমই এক ঝড়ের রাতে মারাত্মক পথ দুর্ঘটনায় ছেলে আর ছেলের বউকে হারিয়েছেন গৌতম বাবু। তাই এই ঝড়ের রাতগুলোতে ঘরের দরজা-জানলা বন্ধ করে একমাত্র নাতিকে আগলে রাখেন গৌতম বাবু।

৪-

এক সন্ধ্যায় এরকমই এক ঝড়ের মধ্যে বিয়ের আসর পন্ড হতে যেতে বসেছিল মৌসুমীর। কিন্তু ঈশ্বরের করুণায় সেই যাত্রায় মোটামুটি সুষ্ঠুভাবেই বিয়েটা সম্পূর্ণ হয়েছিল তাদের। তাই প্রতিবছর ঝড়ের সময় তাদের বিয়ের সন্ধ্যের কথা মনে পড়ে মৌসুমীর।

৫-

রেলের মোটরম্যান ছিলেন সেনবাবু, ঝড় বৃষ্টি, হরতাল, কোন কিছুতেই ছুটি ছিল না সেন বাবুর। ডিউটিতে যেতেই হতো। আজ রিটায়ারমেন্টের প্রায় বছর দুয়েক পর সেনবাবু ঝড়ের রাতে বাড়িতে বসে ভাবছেন, তিনি কিভাবে এত প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও এতদিন চাকরি করে এসেছেন? তারপরই আবার ভাবলেন, জীবিকার জন্য ডিউটি করেছিলেন বলেই আজ তিনি এই দুর্যোগের মধ্যে নিজের ঘরে নিশ্চিন্তে বসে থাকতে পারছেন।

৬-

পাড়ার তিয়াশা আর তার মা -বাবা ভীষণ উত্তেজিত,কারণ তিয়াশাকে দেখা যাবে ঝড়ের লাইভ টেলিকাস্ট করতে টিভি চ্যানেলে। এও যেন এক যুদ্ধকালীন তৎপরতা , কোনো বড় খেলার কমেন্ট্রির থেকে কোনো অংশে কম নয়। আর তিয়াশারা সেইভাবেই ঝড়ের লাইভ কমেন্ট্রি করেছিল , টিআরপি বাড়ানোর জন্য, চ্যানেল-এর উপরওয়ালার নির্দেশে।

এই টিআরপি বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় এই ভোটের বাজারে অবশ্য অনেকেই সামিল হয়েছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress