জীবন-মহাদেবের নৃত্য দেখতে কি পাস্, শুনিস্ কিরে কানে ?
মুগ্ধ কবি মগ্ন মোহের গানে !
বত্সহারা কোন্ সাহারা হাহা করে, কোথায় হাহা করে,
কোন্ সাগরে ঝড় উঠেছে, মেঘ-গরুড়ে আকাশ আড়াল করে ;
আবার কোথায় অন্ কি ওড়ে বন্ধ নালার জলে,
চড়ুই দুটি বাঁধ্ ছে বাসা কড়িকাঠের তলে !
বিসুবিয়াস্ বিষ খেয়ে কে উগ্ রে তোলে আগুন উগ্ রে তোলে,
গ্রহ-তারার ঘূর্ণিপাকে মাথা ঘুরে উল্কা পড়ে টলে ;
আবার কোথায় মাকড়শাতে বুন্ ছে বসে জাল,
মহুয়া-বন মাৎ করে ওই মৌমাছিদের পাল !
জীবন-মহাদেবের নৃত্য দেখতে কি পাস্ , শুনিস্ কিরে কানে ?
মুগ্ধ কবি মগ্ন মোহর গানে !
পুচ্ছে-বাঁধা অনল-জ্বালায় ধূমকেতু কে ছট্ ফটিয়ে ছোটে,
প্রবসব্যথায় কাঁদিয়ে আঁধার, আকাশ ফেটে নতুন তারা ফোটে ;
আবার কোথায় মৌটুস্ কি টুস্ কি মারে ফুলে,
প্রজাপতি হলুদ-ক্ষেতে বেড়ায় দুলে দুলে !
তেপান্তরে লাগ্ ল আগুন—ছুব্ লে আকাশ খুব্ লে নিলে আঁখি,
সৃষ্টিখানার ঝুঁটি ধরে কোন্ সে দানো দিচ্ছে কোথা ঝাঁকি ;
আবার কোথায় রোদ উঁকি দেয় পাতায় চিকের ফাঁকে,
কাঠবেরালির চমক্ লাগে বনশালিকের ডাকে |
জীবন-মহাদেবের নৃত্য দেখতে কি পাস্, শুনিস্ কিরে কানে ?
মুগ্ধ কবি মগ্ন মোহের গানে !
বাঁজা ডাঙ্গায় লড়াই বাধে, হাজার দাঁতে কাম্ ড়ে ছেঁড়ে টুঁটি
লক্ষ খুনীর খুন চেপেছে, কবন্ধ ধড় খাচ্ছে লুটোপুটি ;
আবার কোথায় নিশীথ রাতে প্রদীপ মিটমিটি,
রুদ্ধ-নিশাস পড়ছে বধূ প্রিয়তমের চিঠি |
বোল্ হাঙ্গরের লাগল গাঁদি, জাহাজ ডোবে ডুবো পাহাড় লেগে,
কোন্ দেশেতে লাগল মড়ক, ভাগাড় আঁধার শুক্ নি-ঝাঁকের মেঘে,
আবার কোথায় হাঁস চরে ওই শ্যাওলা-দীঘির ঘাটে
ঝিউড়ি মেয়ে ঘস্ তেছে পা খেজুর-গুঁড়ির পাটে
জীবন-মহাদেবের নৃত্য দেখতে কি পাস, শুনিস্ কিরে কানে ?
মুগ্ধ কবি মগ্ন মোহের গানে !
তাতা থিয়া, তাতা থিয়া—ঠোকাঠুকি নীহারিকার মালায়,
তাতা থিয়া,—সিন্ধু নাচে বক্ষে জ্বালা বাড়বানল-জ্বালায়
তারি সাথে যুগে যুগে দোলে, দোলে, দোলে,
নটরাজের নাচন্ চির-নারী-মাতার কোলে |