Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » চোরাই ধন || Purabi Dutta » Page 3

চোরাই ধন || Purabi Dutta

চোরাই ধন – তৃতীয় অংক

তৃতীয় অংক
অজিত,সুধীর, বিভাবতী

অজিত– বুঝলে বিভা, সুধীর ছেলেটি বেশ মেধাবী।

বিভাবতী– তুমি ত দুজনকেই পড়াচ্ছ, মেয়ে সুনেত্রাই বা কম কি?

অজিত– তা বটে , ওদেরকে অধ্যাপনা করাতে ভালই লাগে। ফলিত জ্যোতিষে বেশ বিশ্বাস ও বুৎপত্তি হচ্ছে।

বিভাবতী– তুমি ত ফলিত জ্যোতিষে পণ্ডিত অধ্যাপক অথচ বাল্যকাল কেটেছে চতুষ্পাঠির আবহাওয়ায়।

অজিত– তাতে কি? আরে আমার পিতা ছিলেন পাক্কা নৈয়ায়িক। ঈশ্বর তার মতে অসিদ্ধ। আমিও তাই।

বিভাবতী– গ্রহ নক্ষত্রের প্রভাব মানো অথচ দেবদেবী মানো না, এ আমার ভালো লাগে না।

অজিত– সবার কি একই রকম বিশ্বাস হয়? ও তুমি বুঝবে না। আস্ট্রনমি, অ্যাস্ট্রলজির ব্যাপার , গ্রহ নক্ষত্রই সব, ওসবই মানুষের জীবন নিয়ন্ত্রণ করে।

বিভাবতী– তাই, আর দেবদেবী?

অজিত–সেই ত…. তোমার দেবদেবীতে বিশ্বাস। আর আমার বিজ্ঞান , গ্রহ নক্ষত্রের সব প্রভাব।

বিভাবতী– আমাদের বিবাহও কিন্ত দেবদেবীর ইচ্ছানুসারে হয়েছিল। এসব মানুষেরা বুঝবে কি করে?

অজিত — ও, তাই, আমি তাহলে অমানুষ, শোনো, গ্রহ নক্ষত্রের প্রভাব মিলিয়েই বিবাহ হওয়া উচিত, তাই অ্যাস্ট্রলজি বুঝে ঠিকুজি কুষ্ঠী মেলাতে হয়।

বিভাবতী–ঠিক এইখানেই তোমার সাথে আমার প্রভেদ।

অজিত– কেমন কেমন?

বিভাবতী– আমি মানি আমার ইষ্টদেবতাকে। জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে– তিন বিধাতা নিয়ে।

অজিত–হা হা হা, তাই নাকি?

বিভাবতী– তুমি ভয়ে ভয়ে পেয়াদাগুলোর কাছে সেলাম ঠুকে বেড়াও। আর আমি মানি স্বয়ং রাজাকে।

অজিত– ঠকবে ঠকবে,রাজা থাকলেও যা, না থাকলেও তা…. লাঠি ঘাড়ে নিশ্চিত আছে পেয়াদার দল।

বিভাবতী–ঠকব ,সেও ভালো। তাই বলে দেউড়ির দরবারে গিয়ে নাগরা জুতোর কাছে মাথা হেঁট করতে পারব না।

অজিত– হা হা হা

[গান– সারা জীবন দিলো আলো সূর্য গ্রহ চাঁদ, তোমার আশীর্বাদ হে প্রভু , তোমার আশীর্বাদ….]

অজিত–আরে। এসো এসো, ঐ দেখো বিভা — সুধীর এসেছে।

বিভাবতী– ও সুধীর এসেছো, সুনেত্রা বোধহয় ওর পড়ার ঘরেই আছে।

সুধীর– আমি কিন্তু আপনার সাথেই কথা বলতে এলাম, মা।

অজিত– ও তাই, তাহলে আমি যাই। তোমরা কথা বলো।

সুধীর– মা, আমি নিজের মাকে হারিয়েছি অনেকদিন, বোধবুদ্ধি হবার আগেই।

বিভাবতী– জানি ।অধ্যাপকের কাছে পড়তে এলেও, তুমি অনেক দিন ধরেই আমার ঘরের ছেলে।

সুধীর– মা, তোমার নেই ছেলে আর আমার নেই মা। তাই…

বিভাবতী– হু, কি কথা বলবে, একটু বুঝতে পারছি বটে।

সুধীর– তুমি মা। তুমি ত বুঝবে। মা তোমার মেয়ে দিয়ে আমাকে দাও তোমার ছেলের জায়গাটি।

বিভাবতী– সুনেত্রার মন বুঝেছ?

সুধীর– হ্যাঁ মা,

বিভাবতী– আর অধ্যাপকের?

সুধীর– তোমার সম্মতি পেলে, তার পরে পায়ে ধরব অধ্যাপকের।

বিভাবতী– আগে বলো , তোমার জন্মলগ্নের ঠিকুজি আছে ত?

সুধীর– হ্যাঁ, তা এক আছে বোধহয়।

বিভাবতী–তোমার অধ্যাপক মহাশয় ওটাই আগে চাইবেন ।

সুধীর– মানে?

বিভাবতী– হ্যাঁ। ওখানে গড়মিল হলে কোনমতেই অধ্যাপক বিবাহে মত দেবেন না। আর….

সুধীর– আর?

বিভাবতী– আর অধ্যাপকের কন্যাটিও ঐ একই ধাতুতে তৈরি।

সুধীর– ও, তাই, তাহলে…. আমার ও সুনেত্রার ঠিকুজি ঠিক ঠাক না মিললে আমাদের বিবাহ হবে না!

বিভাবতী– হু, তাই

সুধীর– মা আমি এ আঘাত সইব কিভাবে? তোমাকেও যে মা বলে মেনে নিয়েছি।

বিভাবতী– রোসো বাছা… কাল একবার চুপেচাপে আমার সাথে দেখা কোরো।

সুধীর– আচ্ছা মা, কিন্ত কেন?

বিভাবতী– আমি তোমায় লুকিয়ে আমার কন্যার ঠিকুজির এক খসড়া দেবো।

সুধীর– আচ্ছা। তারপর ওটি নিয়ে কি করব আমি?

বিভাবতী– তা আমি কাল বলব তোমায়। এখন এসো।

সুধীর– আচ্ছা, কাল তাহলে এই সময়েই আসব , মা

বিভাবতী– চুপ, কেউ যেন না জানতে পারে। আমার ইষ্ট দেবতা তোমার মঙ্গল করুন।

সুধীর– আসি মা।

[গান– অশান্তি আজ হানল…]

Pages: 1 2 3 4 5 6

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress