চাহিদা পূরণ – পর্ব ১৪
অফিস ক্যান্টিনের এসিতে সুমেধার ও যেন বেশ ঠাণ্ডা লাগছিল, কফির কাপে চুমুক দিয়ে তদ্ভবের দিকে তাকিয়ে সুমেধা বললো, তোমায় দেখে মনে হচ্ছে জ্বর এসেছে প্যারাসিটামল খেয়ে নাও।
তদ্ভব:হ্যাঁ, প্রচন্ড গা হাতে নেন অস্বস্তি লাগছে। প্যারাসিটামল মুখে নিয়ে অল্প হেসে বলল
হিমেল হাওয়ার তালে তালে
মনে হয় বিলন্বের অভিলাষ ,
সময়টা যদি রইতো থেমে
চিরস্থায়ী আড্ডার অবকাশ।
সুমেধার মনে হলো মুখে হাসি থাকলেও ভেতরে ভেতরে কষ্ট হচ্ছে তদ্ভবের, অজান্তেই আগের অনুভূতিগুলো যেন ফিরে আসছে। সুমেধা: আমি এবার উঠবো,আজ অনেক গুলো কাজ আছে,তদ্ভব(একটু ইতস্তত করে): একটা কথা বলবো, তুইতো হাওড়া যাবি,যদি ওলা বুক করি,আমায় পার্কস্ট্রীটে নামিয়ে দিয়ে যাস, মাথাটা যেন ঘুরছে,একা যেতে ভরসা পাচ্ছি না। সুমেধা একটু চুপ করে থাকে, তদ্ভবের দিকে তাকিয়ে কষ্ট হচ্ছিল, তারপর বলে ঠিক আছে একসাথেই বেরিয়ে চল। তদ্ভবের মুখে অল্প হাসি, পুরানো বন্ধু বলে কথা, চাইলেই কি সব মুছে ফেলতে পারিস!! ওলা বুক হয়ে গেলে ওরা একসাথে বেরিয়ে পড়ে। গাড়িতে উঠে,তদ্ভব সুমেধাকে বলে,জানিস, অদিতি তোর কথা জানে, ওকে বলেছি, সুমেধা:তোর বউয়ের ছবি দেখা,তদ্ভব মোবাইলে দুজনের বিয়ের ছবি দেখিয়ে বলে, অদিতি আমায় সান্ত্বনা দিয়ে বলেছিল কষ্ট পেয়ো না, অনেক সমবয়সী প্রেমই বিয়ের পরিণতি পায় না। মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখতে গিয়ে সুমেধা বোঝে তদ্ভবের জ্বর আছে। সুমেধা:তোরা সুখে থাক,এখন চুপ করে বোস, কাল অফিসে আসবি না,তদ্ভব চোখটা বুজে সিটে হেলান দিয়ে বলে ওঠে কিন্তু তুই আমার মনে চিরকাল আছিস, থাকবি।ড্রাইভার দা পিছনে ঘুরে সুমেধার দিকে তাকালে, সুমেধা জানালার বাইরের দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে নেয়, সুন্দর বিভিন্ন ধরনের ক্যান্ডেল বিক্রি হচ্ছে, বাড়িতে নিয়ে গেলে ভালো হতো, বিয়ের আগে বন্ধুরা একসাথে টুকিটাকি জিনিস নিয়ে যেত বাড়িতে ,কত সময় টাকা কম পড়তো তাই সাধ্যের মধ্যে সাধ পূরণ করতে হতো, কিন্তু এখন টাকার অভাব নেই কিন্তু কেনাকাটার কোন উপায় নেই! মনে পড়ে যায় হাসপাতালে তৃণা দির মেয়েকে দেখতে যেতে হবে,তদ্ভব এমন কান্ড বাধাবে ভাবতে পারে নি, শুধু সুমেধার দেখা পাওয়ার জন্য জ্বর গায়ে এসেছে, জীবনে উন্নতি করা সত্ত্বেও ওকে ভুলতে পারে নি,হায় নিয়তির পরিহাস…