চাহিদা পূরণ – পর্ব ১২
রাতে অদ্ভুত একটা অস্বস্তি অনুভব করে সুমেধা, মনে হয় জানলার পাশে কি যেন একটা ছায়া, ভূতের ভয় কোনোদিন ছিল না সুমেধার, মনে মনে ভাবে জ্যান্ত ভূত চোর ছ্যাঁচড় নয় তো! সাহস করে এগিয়ে যায় বারান্দায়,ওহ একটা বাদুড় বোধহয় সামনের গাছে তার ছায়া পর্দার ওপর পড়েছে, নিশ্চিন্ত হলো সুমেধা। আনমনে রাতের আকাশ দেখতে থাকে সুমেধা, কলেজের দিনগুলো ভাবতে থাকে, একসাথে হৈ চৈ আড্ডা পড়াশোনা, মাস্টার্সের সময় তদ্ভব,ঋতম,নীনা একসাথে নোটস শেয়ার করেছে। একটু একটু করে তদ্ভব ওর কাছে আসছিল,তদ্ভব ক্যাম্পাসিং চান্স পাওয়া মাত্রই সুমেধাকে বলেছিল দুটো বছর আমায় সময় দিতে পারবি?ক্যাম্পাসিং এ তুইও চান্স পেয়েছিস তোর পক্ষে ও সুবিধা হবে।কোনো উত্তর দিতে পারেনি সুমেধা কারণ বাড়িতে আগেই জানিয়ে দিয়েছেন বাবা শহরের বাইরে কোথাও যাওয়া যাবে না। ফাইনাল পরীক্ষার দুসপ্তাহ পর মাসির মেয়ের বিয়েতে গিয়েছিল সুমেধা, বিয়ে বাড়িতে দেবাংশু সুমেধাকে দেখে, দেবাংশুর বাবা সুমেধার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেন। বাড়িতে এই সম্পর্কে সুমেধা ফোন করে তদ্ভবকে জানায়, কোনো উত্তর দেয় না তদ্ভব, চাকরির জন্য শহর ছেড়ে চলে যায়। তারপর সুমেধা বাধ্য মেয়ের মতো দেবাংশুর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারপর বিয়ে, চাকরি, সুখী দাম্পত্য, আজ নিজেকে বড়ো স্বার্থপর মনে হয়।ঘড়িতে রাত একটা প্রায়, কি মনে হয় নেট অন করে, দেবাংশু, তদ্ভবের গুডনাইট ম্যাসেজ পরপরই! দুজনকেই অসহ্য মনে হয় সুমেধার।নেট অফ করে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে।অ্যালার্মের শব্দে ঘুম ভাঙ্গার সাথে আকাশের ঝলমলে আলো পর্দা চুঁইয়ে মুখের ওপর এসে পড়ে। সুমেধা ঈশ্বরকে স্মরণ করে বলে হে ঈশ্বর শক্তি দাও, ধৈর্য দাও, আমি যেন ছেলেটাকে ভালো মানুষ গড়ে তুলতে পারি,নিজে যেন সঠিক পথ নির্ধারণ করতে পারি।