চাহিদা পূরণ – পর্ব ১০
জোজোকে স্কুলবাসে তুলে দিয়ে ওলাতে উঠে বসে সুমেধা। মোবাইলটা বেজে ওঠে,বসের ফোন, সুমেধা রিসিভ করে,বস বলেন নটার মধ্যে আসার চেষ্টা করো। সুমেধা:হ্যাঁ স্যার, পৌঁছে যাবো। রাস্তায় জ্যাম ছিল না,পৌনে নটায় অফিসে পৌঁছে যায় সুমেধা।বস তারপরেই এসে সুমেধাকে দেখে বলেন খুব ভালো হয়েছে এসে গেছেন ওনারা দশটার মধ্যে এসে পৌঁছবেন, আমি আপনাকে ডেকে নেবো, রিক্তা,সুবল আপনাকে অ্যাসিস্ট করবে।সুবল,রিক্তা কিছু সময় পরে এসে পৌঁছায়। কিছু সময় পর চারু দা এসে সুমেধাকে বলে স্যার আপনাকে ডাকছে। সুমেধা পেন ড্রাইভ, ফাইল নিয়ে রিক্তাকে বলে চল আয় স্যার থাকছেন, রিক্তা: তুমি এগিয়ে দেখো ওনারা এসেছেন কি, আমি,সুবল দা আসছি। সুমেধা সন্মতি জানিয়ে এগিয়ে যায়, একটু এগিয়ে রিসেপশন কাউন্টারের সামনে দেখে তদ্ভব এগিয়ে আসছে, সুমেধা সাময়িক ভাবে তদ্ভবের দিকে তাকিয়ে থাকে, চেহারা প্রায় আগের মতই, একটু স্থুলতা ধরা দিয়েছে, কিন্তু পরক্ষণেই মনে হয় অফিসে তদ্ভব কিভাবে! সাহস সীমা ছাড়িয়েছে, অনেকবার বারণ করা সত্তেও…মাথার শিরা উপশিরা দিয়ে যেন আগুনের হল্কা বয়ে যায় এসির মধ্যেও। তদ্ভব এগিয়ে এসে মুচকি হেসে আস্তে করে বলে ঠিক আগের মতই আছো, দুচোখের তৃষ্ণার অবসানে, একসাথে পেলাম দেখা দুজনে। সুমেধা চোয়াল শক্ত করে বলে, এটা ইয়ার্কির জায়গা নয় আমার অফিস, জাস্ট গেট আউট.. ঠিক সেই সময় বসের গলা আপনি এসে গেছেন গুপ্তাজি খুব ভালো হয়েছে। তদ্ভব ঘাড় ঘুরিয়ে সন্মতি সূচকভাবে বলেন জয়ন্ত স্যার within 10 minutes এসে পৌঁছবেন, আপনার সঙ্গে ইমেলে কথা হয়,আজ সামনে দেখে খুব ভালো লাগছে, আরো ভালো লাগছে আমার সহপাঠী বান্ধবী সুমেধাকে এখানে দেখে, আমার জন্য বিগ সারপ্রাইজ, নতুনভাবে যোগাযোগ হয়ে গেল, বোধহয় ওর জন্য ও, আড়চোখে সুমেধার দিকে তাকিয়ে।বস একটু আশ্চর্যভাবে সুমেধার দিকে তাকিয়ে বলে বাহ্, তবে তো খুব ভালো। সুমেধা নিজেকে সামলে নিয়ে আড়ষ্টভাবে হেসে বলে হ্যাঁ স্যার, আমরা একসাথে মাস্টার্স করেছি তারপর কোনো যোগাযোগ ছিল না। আপনারা এগোন আমি একবার আসছি বলে কোনোদিকে না তাকিয়ে সুমেধা অফিসের টয়লেটে ঢোকে। মুখে জলের ছিটে দিয়ে আয়নায় তাকিয়ে বলে সংযত হও, control yourself,be professional.টয়লেট থেকে বেরিয়ে এসে কেবিনের দিকে এগিয়ে যায়, রিক্তা ডাকে সুমেধা দি,আমায় কেমন লাগছে? অতিরিক্ত সেজেছে রিক্তা, সুমেধা অল্প হেসে বলে খুব সুন্দর। সেমিনার হলে পৌঁছে সুন্দরভাবে পিপিটি প্রেজেন্টেশন দেয় সুমেধা, রিক্তা। তদ্ভব একভাবে সুমেধাকে দেখে চলেছে,ব্যাপারটা বসের দৃষ্টিগোচর হয়, মিটিং এর পর উনি অল্প হেসে বলেন আজ আমরা সবাই একসাথে লাঞ্চ করবো, সুমেধা,তদ্ভবের খেয়াল রেখো। সুমেধা বলেন অবশ্যই স্যার। অফিস থেকে বেরোনোর আগে তদ্ভব সুযোগ বুঝে আস্তে আস্তে বলে তোমার চড় খাওয়ার ইচ্ছা অপূর্ণ রইলো,যদি কোন দিন বন্ধু ভেবে থাকো কাল বিকাল ৫টাতে তুমি আসবে অবশ্যই। গুপ্তাজির সঙ্গে তদ্ভব বেরিয়ে যআয়।বস সুমেধাকে বলেন খুব ভালো প্রেজেন্টেশন করেছো তোমরা, সুমেধার বন্ধু তদ্ভব খুব জেন্টিলম্যান। রিক্তা: স্যার আমাদের হাফ ডে তো? বস: হুম। রিক্তা তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে যআয়, সুমেধা আস্তে আস্তে ক্যাব বুক করে বেরিয়ে আসে, একটা অসম্ভব ক্লান্তিতে যেন অদ্ভুতভাবে আচ্ছন্ন শরীর মন, গাড়িতে আলতো ভাবে মাথা দিয়ে চোখ বুঝতেই তদ্ভবের মুখটা ভেসে ওঠে, চোখ খুলতেই মোবাইলে তদ্ভবের ম্যাসেজ, ভুলতে তোমায় দেবো না…