চাহিদা পূরণ – পর্ব ১
ভোরের নরম আলো জানালার আরশি চুঁইয়ে ঘরে এসে পড়েছে, ঘুমটা ভেঙে যায় সুমেধার। আনমনে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে,সদর দরজার তালা খুলে সামনের বাগানের রাস্তা ধরে আলগা পায়ে হাঁটতে শুরু করে। সবুজ গাছের বাগান ,মাঝে মাঝে ফুটে আছে লাল গোলাপ,হলুদ বকুল, নীল অপরাজিতা । ফুলগুলো আলতো হাওয়ায় যেন হেসে হেসে বলছে সুপ্রভাত। ঘাসের ওপর বিন্দু বিন্দু শিশির গতরাতের সব আশঙ্কা,ক্লান্তিকে মুছে দিতে চায়। দূরের নির্মেঘ আকাশে একঝাঁক পাখি, সামনের রাধাচূড়া গাছে একটা অচেনা পাখি সুন্দর সুরে যেন নতুন সুন্দর সকালের শুভেচ্ছা শোনাতে চায়। আধা ঘন্টা পর রান্নাঘরে গ্রীন টি বানিয়ে সামনের বারান্দায় চেয়ারে বসে সুমেধা। গতরাতের দুঃস্বপ্নের কথা ভাবিয়ে তুলছে সুমেধাকে।
রাতে ঘুমাতে ঘুমাতে স্বপ্নে সুমেধা দেখে একটা সুন্দর পাহাড়ী রাস্তায় ওরা একসাথে হাত ধরে হেঁটে চলেছে,সাথীটির অবয়ব যেন খুব খুব চেনা কিন্তু অস্পষ্ট,হঠাৎ সামনে বিশাল খাদ সেই সময় পিছন থেকে কে যেনো ধাক্কা দেয়, ঘুমটা ভেঙে যায়,এসির মধ্যে ও বিন্দু বিন্দু ঘাম ফরসা গালে, চিবুকে…বিছানা থেকে উঠে চোখে মুখে জল দেয়, বারান্দায় গিয়ে পায়চারি করতে থাকে, দূরের চাঁদের দিকে তাকালে চাঁদকে মনে হয় বড়ো একা, নিঃসঙ্গ, একটা দীর্ঘশ্বাস নেমে আসে, ঘরে ফিরে আসে সুমেধা।বিছানায় তিন বছরের ছেলে জোজো অঘোরে ঘুমাচ্ছে,ওর চুলে আলতো করে চুমু খায়, জোজো মাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে থাকে। কিন্তু বাকি রাতটা আধোঘুমে অস্বস্তিতে কাটে। চা পান করতে করতে রাতের কথাটাই ভাবতে থাকে সুমেধা, মনটা যেন আবার ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। কিন্তু জোজোর স্কুল আছে তাই আর বসে ভাবার সময় নেই,উঠে পড়ে চেয়ার থেকে, ঘুমন্ত জোজোকে কোলে তুলে বাথরুমের দিকে এগিয়ে যায়।