ভূমিকা
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস “চরিত্রহীন” অবলম্বনে শ্রুতিনাটকের ভূমিকা–
শরৎচন্দ্রের এই চরিত্রহীন উপন্যাস নিয়ে সে সময়ে প্রচুর সমালোচনা ও আলোরণ হয়েছিল।
বহুপঠিত, বহুচর্চিত, বহুসমালোচিত সে অনেক কথা….
পাণ্ডুলিপি প্রথম নষ্টও হয়েছিল।
স্বয়ং শরৎচন্দ্রও এ উপন্যাস নিয়ে নানা মন্তব্য করেছেন।
দ্বিতীয় সংস্করণে একটি ভূমিকাও লিখেছিলেন।
সময় কম, কিছু কোট করে বলি….
“……. লোকে যতই কেন নিন্দা করুক না, যারা যত নিন্দা করিবে , তারা তত বেশী পড়িবে। ওটা ভালো হোক মন্দ হোক একবার পড়িতে আরম্ভ করিলে পড়িতেই হইবে।
যারা বোঝে না, যারা artএর ধার ধারে না, তারা হয়ত নিন্দা করিবে।
কিন্ত, নিন্দা করিলেও কাজ হবে। তবে এটা Psychology এবং Analysis সম্বন্ধে যে খুব ভাল, তাতে সন্দেহই নেই।
এটা একটা সম্পূর্ণ ” Scientific Ethical Novel”।
এখন টের পাওয়া যাচ্ছে না।”
অর্থাত কালের গতিতে পাওয়া যাবে।
তিনি টলষ্টয়ের best seller book “Resarection” (যা কিনা একজন বেশ্যাকে নিয়ে)
উল্লেখ করেছেন। সাথে এও সাথে বলেছেন আমাদের দেশে এখনো অতটা art এর ধার বোঝার মতো পাঠকমন তৈরি হয় নি।
বাঙলা সাহিত্য প্রবন্ধে তিনি বলেছেন, বাঙালি লেখকদের হাত পা বাঁধা, তারা এদিক যেতে পারেন না। ওদিক যেতে পারেন না, কোন স্বাধীনতা নেই।
এমনই সংস্কার ও গেল গেল রব।
আরও, বলেছেন, উপন্যাসের নাম যখন– ” চরিত্রহীন “
তখন সেখানে নিশ্চয়ই গীতার টীকাভাস্য লেখা থাকবে না।
যাহোক
১৩২০ থেকে ১৩২১ সালে আংশিকভাবে “যমুনা” পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয় এবং পরে সম্পূর্ণ ভাবে পুস্তক প্রকাশিত হয় ১১ই নভেম্বর ১৯১৭( কার্তিক, ১৩২৪)।
প্রকাশ করেন– রায় এম সি সরকার বাহাদুর অ্যান্ড সন্স।
মূল্য ছিল সাড়ে তিন টাকা, বলা বাহুল্য, যথেষ্ট দামী। কিন্ত প্রথম দিনই
সাড়ে চারশো খণ্ড বিক্রী হয়ে যায়।
এ চরিত্রহীন উপন্যাস নামকরণ ও বিষয় বস্তু ঠিক তখনকার কালে, লেখা খুব সহজ ব্যাপার ছিল না।
শরৎচন্দ্র নিজে কোন বয়সে “রেজারাকসন” পড়েছিলেন জানা নেই।
খুব সম্ভব তিনি ঐ পুস্তক পাঠের পরই হয়ত বা দেবদাসের “চন্দ্রমুখী” ও আঁধারে আলোর ” বিজলী বাই” চরিত্র ওমন জাজ্বল্যমানভাবে চিত্রিত করতে পেরেছিলেন।
যথেষ্ট মনের জোর ও পাশ্চাত্য সাহিত্যিকদের মতো মনস্তাত্বিক বিশ্লেষক হলেই সমাজের এ চিত্রের রূপালেখ্য সৃষ্টি সম্ভব।
প্রসঙ্গত বলি আমার এ কাহিনীর নাট্যরূপ দিতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে সময়ও লেগেছে অনেক।
উপন্যাসের ২০/২২ টি চরিত্র থেকে মোটে আটটি চরিত্রের মাধ্যমে আমাকে বলতে হয়েছে। স্থান, কাল, চরিত্র বিশ্লেষণ, ঘটনা ইত্যাদি সব।
এটি আমার শরৎচন্দ্রের গল্প উপন্যাস অবলম্বনে আঠারো নম্বর শ্রুতি নাটক।
লিওনেল টলষ্টয় রাশিয়ান লেখক
9 সেপ্টেম্বর1828—- 20নভেম্বর1910
লেখার সময়সীমা 1847-1910
Resurrection — Leo Tolstoy
Translated (English )by Louise Maude— 1902
Debdas published 1917
“চন্দ্রমুখী ” র কথা আঁধারে আলো– 1915
“বিজলীবাই” এর আত্মকথন।