গ্রহন(পর্ব-১)
ভাগীরথীর কূলের এক ছোট্ট জনপদ,,,,,কেউবলে ,,মৌগ্রাম, কেঊ বলে মোরগ্রাম।নামে যাই হোক না কেন,বড় শান্তির জায়গা এটা।প্রান্তিক মানুষ জনের বসতি।স্বাচছন্দ্য না থাকলে ও, সুখ আছে,শান্তি আছে।সেন রাজা দের বাংলায় এখন বড় অরাজগতা।
বল্লাল সেনের কৌলিন্য প্রথার আঘাতে সারা সমাজ যেন ঘুণ ধরা কাঠের মতো ভঙ্গুর। সমাজ ব্যবস্হায় প্রবেশ করেছে কালিমা।ভোগবাদী জীবনদর্শন শেষ করে ফেলেছে মানুষের মনুষ্যত্ব কে। ঘরে ঘরে একাধিক স্ত্রী! সেবাদাসী ও দাসী তো পণ্য মাত্র।মনুষ্যত্বের এই অপমানে সারা দেশ মুহ্যমান।
এই আখ্যায়িকার শুরু এমনই এক বসন্তপ্রভাতে ,,,,,,,॥
মন্দক ও গুঞ্জা দুই কিশোর কিশোরী চলেছে গঙ্গার ঘাটে।মৌগ্রামের বাসিন্দা ওরা।অষ্টাদশী কিশোরী গুঞ্জা যেন সাক্ষাত রাইকিশোরী,,,,খালি গাত্রবর্ণেই শ্যামলী!লাবণ্য ঢল ঢল চেহারা।একমাথা ঢেউ খেলানো চুল।দুপায়ে নাচের ছন্দ। মন্দক যেন কুমার কন্দর্প । পাথর কেটে তৈরী করা মূর্তির মতো চেহারা।বড় সুকন্ঠ ওর॥ ভারী সুন্দর গান করে ও।
এদের বন্ধুত্ব ছেলেবেলা থেকেই।মন্দকের মা ওষধী ও ধাত্রী বিদ্যা জানেন। সমাজে তাঁর খুব মান! মন্দকের কোন ভাইবোন নেই। একমাত্র সন্ত।ন, কিন্তু গান পাগোল॥মাঝে মাঝেই ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে পথে প্রান্তরে।আউল বাউল দের স।থে ঘুরে বেড়া য় ।মা বাবার চিন্ত।র শেষ নেই।যদিগুঞ্জার ভালো বাসার টানে ও সংসারে ফেরে,তাই ওদের বিয়ে দিতে চায় মন্দকের মাবাবা॥গুঞ্জার বাবা চাষী। ওর এক দাদাও আছে। দাদার ইচ্ছানয় যে মন্দকের মত বাউণ্ডুলে ছেলের সাথে বোনের বিয়ে হয় ॥তাই দাদার চোখ কে ফাঁকি দিয়ে দুজনে দেখা করে । গুঞ্জার জগৎ জুড়ে আছে মন্দক। রোজ নদীর ঘাটে আসে গুঞ্জা,,,,,,দেখে নদীতে চলা জলযান গুলোকে,,,,,।যাত্রিবাহী ময়ূরপঙ্খী দে খলে ওর মনপবনের নাও কল্পনার নদীতে ভেসে পড়ে ॥
নৌকার পালের সাথে ভেসে চলে ওর বাউল্ মন॥
বসে বসে ভাব তেই থাকে ও ॥ বন্ধুরা বলে খেপী॥
এই ঘাটেই ওর আলাপ সুমতির সাথে,,,,মধ্যবয়স্কা
সুমতি এ সেছে লক্ষণাবতী থেকে॥ ও নাকি মানুষের মুখ দেখে ভবিষ্যত বলতে পারে॥
বন্ধুদের সাথে গুঞ্জা কে দেখে প্রথম দিনই ও বলেছিলো গুঞ্জা রাজরানি হবে॥সহজ ,সর ল মেয়ে
গুলো নাগরিকার ক থার জালে জড়ি য়ে পড়ে ॥
আজ মন্দক কে নিয়ে চলেছে গুঞ্জা ওর ভবিষ্যত জানতে।ঘাটে এসে দেখে অনেক ভীড় সুমতির কাছে॥ ঘাটের সামনে ছাউনি টাঙ্গানো হয়েছে॥
নিচে ব সেছে দর্শনার্থী,,,আবাল বৃদ্ধ বনিতা॥
ছাউনির এক প্রান্তে বসে পড়ে দুজনে॥
ভীড় একটু কমুক,,,,তখন দেখা করবে সুমতির সঙ্গে॥ এতোটা পথ এক রকম দৌড়ে ই এসেছে, দাদার নজর ফাঁকি দিয়ে,,,,,, একটু বিশ্রাম চায় ওরা॥
সূর্যদেব মাথার ওপর ওঠেন ,,,,,,ভীড় পাতলা হয় ॥
সুমতির নজর পড়ে গুঞ্জার ওপর ! হাসিতে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে মুখ ,,,,,”এসো, এসো বলে স্বাগত জানায় দুজনকে॥ নৌকায় নিয়ে ওঠে ॥
নৌকায় দুটি ঘর!একটিতে সুমতি থাকে, অন্যটিতে
পরিচারিকারা!সুমতির ঘরটি খুব সুন্দর সাজানো ,সুরভিত॥
তিন জনে বসে সেখানে!দাসীকে সরবত আন্ তে বলে!কিছুক্ষণ পর নিজেই উঠে গিয়ে সরবত আনে,,,,তুলে দেয় দুজনের হাতে॥ সরবত পান করার কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই চোখে অন্ধকার নেমে আসে॥আর কিছু মনে নেই গুঞ্জার ! যখন জ্ঞান ফেরে তখন নৌকো ভাস ছে মাঝ নদীতে।মন্দক নেই!ওই ঘরে ও একা!দরজা বাইরে থেকে বন্ধ॥
ভয়ে বুক শুকিয়ে আসে ওর ,,,,চিৎকার করতে চেষ্টা করে,,,,গলা দিয়ে স্বর বেরোয় না!