কোন দেশী গাড়ল এ লোক? কোন দেশী?
গোত্র নেই, দেশ নেই তার। সে কি ছদ্মবেশী
শৃঙ্খলিত কিন্তু করজোড়ে তোতা পাখির মতন
ধন্যবাদ ধন্যবাদ বলে সারাক্ষণ।
কখনো বুকলতলা, নদী, ছেলেবেলা,
যৌবন মুখস্থ করে, কখনো দেখায় কত খেলা-
অতিশয় সরু
দড়ির ওপর হেঁটে যায় বারবার। বুকে মরু,
তবু শূন্যে গর্ত খুঁড়ে কী স্নিগ্ধ ফোয়ারা দ্যায় খুলে।
কখনো হোঁচট খেয়ে প’ড়ে গেলে, ভুলে
হঠাৎ বেরিয়ে এলে চক্ষুদ্বয়ে জল,
সকলের কাছে করজোড়ে ক্ষমা চায় সে গাড়ল।
গোলাপের কাছে তার ঋণ আছে; সঙ্গীতে, সে জানে
ঋণের চেয়েও বেশি কিছু থাকে। রমণীর টানে
বেলাবেলি ঘরে ফিরে দেখেছে সে বস্তুত শূন্যতা সীমাহীন।
দক্ষ ত্র্যাক্রোবেটের মতই কতদিন
ঘূর্ণ্যমান গোলকের ভেতরে দিয়েছে লাফ আর
ঘোড়ার পেছনে ছুটে, স্বেচ্ছায় মাটিতে প’ড়ে গিয়ে বারংবার
বাড়িয়েছে ফুর্তি দর্শকের; এভাবেই বেলা যায়।
নিঃসঙ্গতা নিত্যসঙ্গী, বিষাদের পাশে ব’সে বেহালা বাজায়।
খেলা শেষ হ’লেই সে শৃঙ্খলিত পুনরায় কেউ তার
চুল ধরে টানে কেউ কেউ ছোঁড়ে লাথি, যন্ত্রণার
রেখাবলী ফোটে মুখে। খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তাকে ভারি
মজা পায় নানা পথচারী,
ছুঁড়ে দ্যায় ছোলা কিংবা বাদামের খোসা কত ছলে,
সে শুধু ধ্যানীর মতো সর্বক্ষণ ধন্যবাদ ধন্যবাদ বলে।