তোর সাহসের গলাফোলা স্তব করবে না কেউ
কোনোদিন; ক্লান্ত তুই বিক্ষুব্ধ সমকালে ঢেউ
তুলিসনি, তোর ডাক শুনে কোনো অশান্ত তরুণ
ঝরায়নি বেপরোয়া তার দীপ্ত টগবগে খুন
রাজপথে, তোর জন্যে কস্মিনকালেও অনশন
ধর্মঘট করবে না কেউ কিংবা হবে না হরতাল
শহরে বন্দরে, কেউ বাজাবে না ট্রাম্পেট কর্তাল
স্বাগত জানাতে তোকে। দিকে দিকে উজ্জ্বল তোরণ
তুলবে না মাথা তোর নামে। পুষ্পিত বিগ্রহ তুই
নোস, তোর পায়ে কেউ করবে না অর্পণ কিছুই।
ক্লান্ত তুই, অবসন্ন শরীর ও মন দিয়ে তোর
কী ঝক্কি ঝামেলা আজ। আধিব্যাধি বড়ই নাছোড়।
থাকিস একলা পড়ে অন্ধকার কোণে, দুষ্ট ক্ষত
চেটে বেলা যায়, কাদা ঘেঁটে কী খুঁজিস অবিরত
অমন ব্যাকুল হয়ে? হঠাৎ কখনও সূর্যোদয়
সুদূর দিগন্ত ছেঁড়া সূর্যোদয় দেখে মনে হয়-
মাথার ভিতরে তোর এখনও গুঞ্জন কিছু আছে
বাকি, সব ফাঁকি, সব ভ্রান্তি উজিয়ে এখনও নাচে
শিরায় আহত দেবশিশু। তবে কেন অকস্মাৎ
মধ্যপথে কোন্ ভুলে এমন অবশ তোর হাত?
আকাশে নতুন আলো ফোটার আগেই, ওরে বোকা,
ভুলে গেলি বাজাতে আশার ডুগডুগি। কেন ধোঁকা
দিন না অম্লান মুখে দশজন পড়শিকে? চেয়ে
দ্যাখ চারপাশে কত লোক কী উল্লাসে যাচ্ছে বেয়ে
তা’ ধিন তা’ ধিন খেয়া, কাড়া-নাকাড়ার ধুন্ধৃমার
শব্দে দিকগুলি দিনরাত্রি কম্পমান বারবার।
ছায়ায় আছিস মিশে, রোদ্দুরে অরুচি অতিশয়;
হেলায় বিকিয়ে দিলি বাস্তুভিটা, বিষয়-আশয়।
তুই ভীরু, বড় ভীরু উদ্যমরহিত চিরদিন,
সঙ্গলিপ্সু তুই, তবু রয়ে যাবি নিঃসঙ্গ মলিন?