স্পর্শ
কৈশোরের স্মৃতির আলপথে
ধূসর রোদমাখা দিনগুলো
যদি কখনো ফিরে আসে
যদি ফিরে আসে বাবার শাসন,
সেই স্মৃতিময় কুটির ,
ভেসে আসে মা’র সুমধুর কন্ঠের
লক্ষ্মীর ব্রতকথা, সাধের পেয়ারা গাছে
পাখি এসে করে কোলাহল,তাহলে কি
অস্তমিত সূর্যের লাল আভা
আগের মতই ছুঁয়ে যাবে হারাধন কাকার
খড়ের চালের বসতবাড়ি ?
তৃষ্ণা
মাকে দেখতাম নদীর চরের বুক থেকে
বালি সরিয়ে মাটির কলসী ভরে
জল আনতেন ঘরে ;
উদাসী কদম গাছের পাশে
নদীঘাট, নদীর চর
আছে কি আগের মত ?
এখনো কি মা’র মত কেউ কলসী কাঁখে
শীতল জলের মত একবুক স্বপ্ন
ভরে ফিরে ঘরে ?
আর আমার মত কেউ
দুহাতের গণ্ডুষে জল ভরে মেটায়
এক বুক তৃষ্ণা ?
আনন্দ
শহর না গ্রাম তখন ঠিক বুঝিনি
চেষ্টাও করিনি কখনো ,
তিন মাইলের পথ হেঁটে রোজ
স্কুলে যাওয়া আর টিফিনে
দশ পয়সার কাঠি লজেন্স
কিংবা কালিদার চায়ের দোকানে
পঁচিশ পয়সার সিঙাড়া
ভাগ করে খাওয়ার উদ্দাম উচ্ছ্বাস ,
আর সারা টিফিন জুড়ে
চোখে মুখে এক পরম
তৃপ্তির ছায়া লেগে থাকা,
এর নামই কি ছিল আনন্দ ?
প্রেম
তখন একটু বড় হওয়া,
একা একা বন্ধুদের সাথে অষ্টমী মেলা
ঘুরে নাগরদোলায় চড়া,
মেলা থেকে এক টাকার একটি শঙ্খের
আংটি কিনে অতি সংকোচে
প্রিয় বান্ধবীর দিকে হাত বাড়িয়ে
উপহার দেওয়া, দুজনের চোখে
অপলক নিষ্পাপ হাসির চাওনি
মুখে একরাশ নিস্তব্ধতা..
বুকে এক শিহরণ বয়ে যাওয়া,
এর নামই কি ছিল প্রেম?