Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

শেষ অধ‍্যায় (পর্ব – ২)

শ্রীকৃষ্ণ ও কর্ণের সংলাপের মাঝে একটা কথা অর্জুনের কাছে ভীষন অর্থবহ মনে হলো। “যুধিষ্ঠিরই হস্তিনাপুরের প্রকৃত উত্তরসূরি আমি বেঁচে থাকলেও হস্তিনাপুরের সিংহাসন আমার জন্য ছিল না।”
অর্জুন ভেবে পেলেন না হস্তিনাপুরের সিংহাসনের উপর কর্ণের অধিকার কিভাবে জন্মায়?
শ্রীকৃষ্ণ বারবার ইঙ্গিত করছেন মুমূর্ষু কর্ণের পাদস্পর্শ করার জন‍্য, ঠিক তখনই অর্জুনের মনে হলো বহুদিন আগে হস্তিনাপুর রাজসভায় দূর্যোধন ও কর্ণের শ্লেষাত্মক কথায় তিনি বাধ‍্য হয়েছিলেন ধনুকে জ‍্যা আরোপন করতে। এরফলে তার বিরুদ্ধে রাজদ্রোহের অভিযোগ এনে তাকে নির্বাসন দণ্ড দেওয়া হয়, অবশেষে কর্ণের পদধৌত করে তিনি দণ্ডমুক্ত হন। সেদিনের পর থেকে কর্ণকে তিনি মনেপ্রাণে ঘৃণা করতেন কিন্তু এই মুহূর্তে তার মনে কোন ঘৃণার উদ্রেক হলো না। তিনি স্বাভাবিক ভাবেই কর্ণের পাদস্পর্শ করলেন। মৃদু স্বরে কর্ণ বললেন অর্জুন তুমি আমার ভাইএর মতো এ যাবৎ কাল আমার যে আচরনে তুমি কষ্ট পেয়েছ তার জন‍্য ক্ষমা করো আমাকে!
ক্ষমা!!! নাহ, অর্জুন মনে মনে ভাবলেন দুজন যোদ্ধ পরষ্পরের বিরুদ্ধে স্পর্দ্ধা দেখাবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু দ‍্যূত সভায় আর অভিমণ‍্যূ বধে কর্ণের ভূমিকাকে সমর্থন করতে পারেন না তিনি!
কর্ণ বুঝতে পারলেন ক্ষমার প্রশ্নে অর্জুনের মনে দ্বিধা আছে, তিনি স্মিত হেসে বললেন, জানি আমি যা করেছি তাতে তোমার কাছে ক্ষমা চাওয়াটাই অন‍্যায়, কিন্তু কেন করেছি সেটা তুমি কখনও ভেবে দেখনি। দ‍্যুত সভায় আমি তোমাদের বারবার উত্তক্ত করেছি কারণ আমি জানতাম দূর্যধনের অভিসন্ধি, আমি চেয়েছিলাম যুধিষ্ঠির ক্রুদ্ধ হয়ে পাশা খেলা বন্ধ করে দিক । পাঞ্চালীর প্রতি অশালীন কথা বলেছি যাতে তোমরা প্রতিবাদ করো কিন্তু একমাত্র ভীম ছাড়া তোমরা সেভাবে কেউ প্রতিবাদই করলে না, তোমরা যদি রাজসভায় সম্মিলিত ভাবে প্রতিবাদ করতে তবে দ্রৌপদীকে ওইভাবে লাঞ্ছিত হতে হতো না।
অভিমণ‍্যুকে আমি নিজে শেষ আঘাত করেছি কারণ দূর্যোধনরা তাকে আরও যন্ত্রণাময় ম‍ৃত‍্যূ দিতে চেয়েছিল, কিন্তু আমি তা চাইনি তাই অভিমণ‍্যুর ম‍ৃত‍্যুকে ত্বরান্বিত করতে শেষ আঘাত আমাকে করতে হয়েছিল। যদিও এসব কথা বলে আমার অন‍্যায়কে লঘু করতে চাই না, কথা বলতে বলতে কর্ণের শরীর এলায়িত নিশ্বাস বন্ধ চক্ষু স্থির হয়ে এলো, যুদ্ধের সপ্তদশ দিবসে সূর্যাস্তের সাথে সাথে কর্ণের জীবনদীপ নির্বাপিত হয়ে গেল। অর্জুন দুহাতে কর্ণের মাথাটা নিজের কোলে তুলে নিলেন ইতিমধ্যে যুধিষ্ঠির সহ পাণ্ডব ও কৌরবরা চলে এসেছেন। দূর্যোধন অর্জুনকে শ্লেষাত্মক কথা বলতেই শ্রীকৃষ্ণ তাকে থামিয়ে দিলেন। কারন তিনি জানেন এখুনি রণক্ষেত্রে আসবেন কুন্তি, তারপর অন‍্য এক কাহিনী রচিত হবে….

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress