কপাল-খোঁদাই
এখন আর রান্না ঘরে ঢুকতে ভালো লাগে,না।তাই দুবেলা রাধুনি মাসি এসে রান্না করে রেখে যায়। কিন্তু মশলা পিষতে গিয়েই তার বিরক্তি ধরে শিল নোড়া দেখে। বলে তোমাদের এদিকে শিল কাটানোওয়ালা আসে না। শিলটা তেলা হয়ে গেছে। মশলা পেষা যায় না। বললাম করোনার জন্য হয়তো আসে না। আমি কিন্তু রোজ শিল কাটাও বলে হেঁকে যেতে শুনি। তুমি যে হাঁকটা শোন ওটা পাখি নকল করে বলে। কারো সাধ্যি নেই আসল নকল পার্থক্য করে।
ভাবতে ভাবতে সেদিন অন্যস্বরে শিল কাটাও হাঁক শুনে মাসি দৌড়ে গিয়ে সদর দরজা খুলে লোকটাকে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞেস করে শিল নোড়া কাটতে কত নিবি? মাথা নীচু করে বলল ১৬০ টাকা লাগবে শুধু শিল আর নোড়া ৪০ টাকা। মাসি বলল ৫০ টাকার বেশি দেব না। তাতে পোষায় কেটে দিয়ে যাও। তার শিল খোঁদাই দেখতে আমরা বারন্দায় তালা দিয়ে ভিতরে দাঁড়িয়েছিলাম। ঠিক সেই সময় আমার পতিদেবতা সাইকেলে চাবি না দিয়ে সদরে সাইকেলটি রেখে বাড়িতে ঢুকলেন।শিল কাটা হয়ে যেতেই টাকা মিটিয়ে দিলাম। শিলটা ধুয়ে ঘরে তুলে রাখলাম। পরক্ষণেই সদর খুলে জঞ্জাল ফেলতে গিয়ে দেখলাম সাইকেলটা সেখানে নেই। এভাবে সাইকেল দিনের পর দিন পরে থাকে।বাড়ির সামনে দিয়ে কত রকমের ফেরিওয়ালা যায়। সাইকেল কখনো চুরি হয়নি। শিল কাটানো লোকটা ছাড়া পাড়ায় তখনও কেউ আর আসেনি।তবে আর কে নিতে পারে?