Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » এরই নাম সংসার || Mrinmoy Samadder

এরই নাম সংসার || Mrinmoy Samadder

হ্যাঁগো তুমি কি কিছুই করবেনা বলে ঠিক করেছ?
রাগে গজগজ করতে করতে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করলেন শ্রীমতি ভয়ঙ্করী। এদিকে বেচারা শ্রীমান কাঁচুমাচু মুখে বসে রয়েছে। কী করবে বুঝে উঠতে পারছে না।
এদিকে শ্রীমতি ভয়ঙ্করী ঘরে ঢুকেই একের পর এক বাক্যবর্ষণ চালু করে দিলেন। বাক্য বর্ষণের কারণে বেচারা শ্রীমানের খড়কুটোর মতো উড়ে যাবার অবস্থা। এই দেখে শ্রীমতি ভয়ঙ্করী আরো উৎসাহিত হয়ে একের পর এক ছক্কা হাঁকাতে লাগলেন। আর বেচারা শ্রীমান ছক্কা খাবার ভয়ে একের পর এক ওয়াইড বল করতে লাগলো। ওভার আর শেষই হতে চায় না। কি সমস্যা! এই সমস্যা কিভাবে মিটবে চিন্তা করতে করতে আবার বল করতে গেল এবং আবার ওয়াইড।
বেচারা শ্রীমানের আজ অফিস ছুটি। ভেবেছিল একটু ঘুমিয়ে বেশ আয়েশ করে দিনটা কাটাবে। এতদিন অফিসে যা হুজ্জুতি হল। কিন্তু তা আর হলো কই? সেই সাতসকালে ঘুম থেকে তুলে হাতে বাজারের থলেটা ধরিয়ে দিয়েছে শ্রীমতি ভয়ঙ্করী । অতএব কোনরকমে হাত মুখ ধুয়ে বাজারের উদ্দেশ্যে বেরোতে হলো বেচারি শ্রীমানকে। বাজার নিয়ে এসে রাখতে না রাখতেই প্রশ্নবাণ।
কি নিয়ে এলে বাজার থেকে?
বেচারা শ্রীমান থলে থেকে একে একে সব আনাজপাতি বের করে রাখল তারপর এক পাশে মাছের থলেটা সরিয়ে রাখলো।
মাছের থলেটা দেখেই শ্রীমতি ভয়ঙ্করী বলে উঠলেন কি মাছ এনেছো? যে কোন মাছ কিন্তু আমি খাব না। আমার বাপের বাড়িতে কিন্তু সব ধরনের মাছ চলেনা। মাছের পিসগুলো ঠিকঠাক এনেছ তো? নাকি তোমাদের বাড়ির মত। জীবনে তো কিছুই খাওনি। যা কিছু খাওয়া শিখলে তো আমার পাল্লায় পড়ে। তোমার বাবা তো শুধু টাকাই কামিয়ে গেছে। ছেলেকে যে খাওয়া শেখাতে হয় সেটাও জানত না। বুড়ো ওপরে চলে গিয়ে ভালোই হয়েছে না হলে আমি ওই বুড়োকে কথা শোনাতে শোনাতে মারতাম।
বেচারা শ্রীমান এবার খুব রিস্ক নিয়ে একটু মুখ খুলল দেখেই নাও না মাছগুলো। আর যে নেই তাকে নিয়ে কথা না বললেই কি চলছিল না।
ব্যাস আর যায় কোথায়। গরম তেলে যেন জলের ফোঁটা পড়ল। চিড়বিড়িয়ে শ্রীমতি ভয়ঙ্করী বলে উঠলেন তার মানে তুমি কি বলতে চাইছো আমি পড়াশোনা জানিনা? আমি অশিক্ষিত? আমার বাবা তোমাকে কিনে নিয়েছে। যেসব জিনিস ব্যবহার করছ সবই আমার বাপের বাড়ির দেওয়া। তোমাকে থাকতে দিয়েছি এই তোমার বাপের ভাগ্যি। একটু বেশি কথা বললে বাড়ি থেকে বার করে দেব।
বেচারা শ্রীমান আর কি করে। মুখ বুজে বাজারের জামা কাপড় পালটে নিল। আজ সকাল থেকে এক কাপ চাও খাওয়া হয়নি। ভাগ্যিস বাজারে রবীনের সাথে দেখা হয়ে গেছিল। তাই চা সিগারেটটা ফ্রিতে হয়ে গেছিল।
এদিকে বেচারা শ্রীমানের চুপ থাকার কারণে শ্রীমতি ভয়ঙ্করী আরো তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলেন। কি চাইছো কি তুমি? সংসার ঠিকঠাকভাবে করবে নাকি আমি এই সংসার ছেড়ে চলে যাব? সেই ভোরবেলা থেকে উঠে এখনো পর্যন্ত একটু চুপ করে বসতে পারিনি। আর তুমি বাজার নিয়ে এসে থলে ফেলে দিয়ে ঘরের ভেতর চলে গিয়ে ফ্যানের হাওয়া খাচ্ছো? এই শোনো বাজারটাকে গুছিয়ে নিয়ে ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখ।
বেচারা শ্রীমান আর কি করে শ্রীমতি ভয়ঙ্করীর কথায় সব ফ্রিজে তুলে রাখলো।
হঠাৎ কানের পাশে চিৎকার শুনতে পেল যেখানকারটা সেখানেই রাখ। হতভম্ব বেচারা শ্রীমান তাই করল। ঘর থেকে চিৎকার ভেসে আসছে একের পর এক বাক্যবাণে বিদ্ধ হচ্ছে বেচারা শ্রীমান। মনে মনে গজগজ করলেও কিছু বলার মত পরিস্থিতি নেই। অতএব চুপ থাকাই শ্রেয়। বাক্য বর্ষণ চলছে হঠাৎ কোথা থেকে যেন কালবৈশাখীর মেঘ শ্রীমতি ভয়ঙ্করীর চোখে মুখে চেপে বসলো। সেই কালবৈশাখীর মেঘ কাটতে না কাটতেই শ্রীমতি ভয়ঙ্করী দাঁতকপাটি লেগে গেল। এত বাক্যবাণ শুনবার পরও সেই বেচারা শ্রীমান তৎপর হয়ে পড়ল শ্রীমতি ভয়ঙ্করীকে সুস্থ করে তুলতে। অনেক জলের ঝাপটা দেবার পর শ্রীমতি ভয়ঙ্করী সুস্থ হয়ে উঠলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress