Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

চতুর্থ পর্ব

কর্ণপুত্র বৃষকেতু বতর্মানে ইন্দ্রপ্রস্থের প্রশাসক। কর্ণের মৃত‍্যুর পর যখন সত‍্যতা সামনে এলো তিনিও কুন্তিপুত্র তখন পাণ্ডবরা যথার্থই মানষিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পরেন , যুধিষ্ঠির হস্তিনাপুরের সিংহাসনে বসেই বৃষকেতুকে ইন্দ্রপ্রস্থের প্রশাসক পদে নিয়োগ করে কিছুটা হলেও পাপ স্খালনের চেষ্টা করেছেন।
পরদিন শ্রীকৃষ্ণ ও যুধিষ্ঠির ছদ্মবেশে ইন্দ্রপ্রস্থে প্রবেশ করলেন। নগর পরিকল্পনায় ইন্দ্রপ্রস্থ হস্তিনাপুর থেকেও ঐশ্বর্যশালী। অর্জুনের খাণ্ডব দহন থেকে বতর্মানের এই উন্নয়ন কুমার নকুলের হাত ধরে একথা সকল নাগরিকেরই জানা। তারা অর্জুন ও নকুলকে অত‍্যধিক ভালোবাসেন ঠিক ততটাই বিরক্ত যুধিষ্ঠিরের উপর। তের বছর পাণ্ডবদের এই দূর্ভোগ তাঁরই অবিমিশ্রকারিতার ফল। তাদের মতে দ‍্যুতক্রীড়ায় কোন সম্রাট তাঁর সাম্রাজ্য অনুগত ভাইদের নিজেকে এমনকি পত্নীকে পর্যন্ত পণ রাখতে পারেন আর যাই হোক যুধিষ্ঠিরের মতন সত‍্যবাদী ন‍্যায়নিষ্ঠ মানুষকে মানায় না।
বৃষকেতুকে প্রশাসক নিয়োগ করায় ইন্দ্রপ্রস্থের নাগরিকেরা খুশি হলেও তাঁর প্রতি এই ক্ষোভ ইন্দ্রপ্রস্থের রাজপথে পা রেখেই টের পেলেন যুধিষ্ঠির। দূঃখিত ভাবে বললেন ইন্দ্রপ্রস্থেও আমি সমালোচিত মাধব? সত‍্যি বলতে কি এই অপরিনাম দর্শিতার জন‍্য আমিই দায়ী। স্ত্রী ও ভাইদের প্রতি যে অন‍্যায় আমি করেছি তার পাপভার আমারই।
শ্রীকৃষ্ণ মৃদু হাসলেন বললেন চলুন মহারাজ এবার আমরা কুরুক্ষেত্রের দিকে যাত্রা করি •••
এই সেই কুরুক্ষেত্র!!!
অষ্টাদশ দিন ব‍্যাপি সেই মহা সংগ্রামের ক্ষেত্র। আঠারো অক্ষৌহিনী সেনার রক্ত রঞ্জিত প্রান্তর পিতামহ ভীষ্ম গুরু দ্রোণ কর্ণ জয়দ্রথ দূঃশাসন দূর্যোধন প্রত‍্যেকটা মৃত‍্যুর সাথে জড়িয়ে আছে মর্মান্তিক কাহিনী।
যুদ্ধক্ষেত্রের কাছেই এক পিপ্পলী বৃক্ষের নিচে বসলেন দুজন। আকাশে মধ‍্যাহ্নের সূর্য দীপ‍্যমান। একটু পরে আরও দুজন অশ্বারোহী উপস্থিত হলেন সেখানে। পরষ্পর সম্ভাষনের পর প্রথম অশ্বারোহী জিজ্ঞাসা করলেন, মহাশয়রা কি এখানকার নাগরিক?
শ্রীকৃষ্ণ বললেন না না আমরা দ্বারকা থেকে এই ভয়ানক যুদ্ধক্ষেত্র দর্শনে এসেছি,
দ্বিতীয় অশ্বারোহী বললেন আমরা মদ্ররাজ‍্যের মানুষ তারপর খুবই লঘুস্বরে বললেন এই ভয়ংকর যুদ্ধে বেশিরভাগ যোদ্ধাই ভীম অর্জুনের হাতে নিহত হলেও আমাদের রাজাকে পরাজিত ও হত‍্যা করেছিলেন সম্রাট যুধিষ্ঠির। অথচ কি আশ্চর্য দেখুন যুদ্ধে প্রায় সকলের কাছেই তিনি পরাজিত হয়েছিলেন বারবার তাঁকে অর্জুন ভীম এরাই রক্ষা করেছেন। সবচেয়ে লজ্জার কথা দ্রোণাচার্যের চক্রব‍্যুহের দিন। অর্জুনের অনুপস্থিতিতে যখন যুধিষ্ঠিরের পরাজয় আসন্ন , শুধু নিজের জীবন রক্ষা করার জন্য ওই বিপদ সংকুল চক্রব‍্যুহে অভিমণ‍্যুকে প্রবেশের অনুমতি দিয়ে দিলেন, অথচ
তিনি জানতেন অভিমণ‍্যু শুধু চক্রব‍্যুহে প্রবেশ করতেই জানে বেড়িয়ে আসার পদ্ধতি তার অজানা। একজন অপরিনত বালককে যুদ্ধে এভাবে নিয়োগ করা কখনই রাজোচিত নয়। এর জন্য মহারাজ যুধিষ্ঠিরের অনুতপ্ত হওয়া উচিৎ।
মাথা নিচু করে বসে আছেন যুধিষ্ঠির, সামান্য বিশ্রাম নিয়ে অশ্বারোহী দুজন চলে গেছে। যুধিষ্ঠির সজল চোখে চাইলেন শ্রীকৃষ্ণের দিকে তারপর মৃদুস্বরে বললেন বিশ্বাস করুন মাধব আমি চাইনি অভিমণ‍্যু প্রবেশ করুক চক্রব‍্যুহে কিন্তু ঘটনা এত দ্রুত ঘটে গেল আমি বাধা দিতে পারিনি, অভিমণ‍্যুর জন‍্য অর্জুনের মতো আমিও পুত্রহীন হয়েছি, যুধিষ্ঠিরের দু চোখে তখন জলের ধারা •••

Pages: 1 2 3 4 5 6 7

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress