জীবনের মাইক্রোফোনের আয়ু বাড়ে না, কখন ও।
সবকিছু ঠিকঠাক চলছে মনে করিস,
তার মাঝে হঠাৎ করেই শুনতে পাবি মহাশূন্যে ভেসে যাওয়ার ডাক।
এবাবা এও কি সম্ভব?
এখনো তো বাকি আছে কতো জরুরি কাজ;
ছেলেটাকে মানুষ করতে হবে, বাড়িটা রং করাবো, বাবার শরীরটা ভালো যাচ্ছে না আজকাল,
ডাক্তার দেখিয়ে নিতে হবে, ক্লাবের হিসেবপত্র ………
আমাদের ফর্দ আর শেষ হয় না।সংসারি মানুষ যে!
হুট করে কোথাও যেতেই পারি না।
এ যে চিরতরে হারিয়ে যাওয়া!!!
কিন্তু???
ছেলে টা হারিয়ে গেল চিরদিনের জন্য?
জীবনের সব লেনদেন বন্ধ করে, উড়ে গেল মহাশূন্যে।
শূন্য সিঁথি জানান দিচ্ছে সে আর নেই!
মায়ের জলে ভেজা চোখ বলে সে আর নেই!
ওমা বাবা কখন আসবে গো! ও ঠাম্মা ,
বাচ্চা ছেলেটার জিজ্ঞাসার উত্তর নেই কোথাও কোনখানে।
তার বাবা রোজ সন্ধ্যায় মোড়ের মাথায় দাঁড়িয়ে থাকে, পথচলতি সব লোককে ডেকে ডেকে বলে,
বুবাই ফিরবে তো,তাই অপেক্ষা করছি।
কেউ হয়তো কিছুক্ষণ পর তার বাবাকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে যায়।
তার ভালোবাসার মানুষটা কে সবাই নানা ভাবে সান্ত্বনা দিতে থাকে।
সময় গড়িয়ে যায়,শোকের মধুচন্দ্রিমা শেষ হয়।
শূন্য সিঁথি নিয়ে জীবন যুদ্ধে নামে মেয়ে টি,
কোথাও একটু বসার সময় নেই তার..
জীবন নদী বইতে থাকে বইতে থাকে বইতেই থাকে….
কখনো কখনো ভরা পূর্ণিমার আলো ভরা মায়াবী রাতের অন্ধকারে ফিরে আসে ছেলে টা,
তার ভালোবাসার মানুষটার কাছে,
তার ক্লান্ত চোখের উপর এঁকে দিয়ে যায় স্বপ্ন।
জানি স্বপ্ন দিয়ে পেট ভরে না,কেনা যায় না বাবার ওষুধ।
ছেলের বই, রবারের বল কিংবা রঙিন ঘুড়ি।
তবে স্বপ্ন দেখতে জানলে সহজেই পের হতে পারি এবড়ো খেবড়ো পথ,
ঝড়- ঝঞ্ঝায় ভরা বিশাল সমুদ্দুর।