Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » রামায়ণ : উত্তরাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা » Page 51

রামায়ণ : উত্তরাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা

এতেক বলিয়া মুনি সানন্দা হৃদয়।
শত্রুঘন মুনি দোঁহে কথাবার্ত্তা কয়।।
কথোপকথনে দোঁহে বঞ্চিলা রজনী।
প্রভাতে উঠিয়া যায় করিয়া সাজনি।।
মুনিকে প্রণমি চলে শত্রুঘন বীর।
ভার্গবের বাটী গেল যমুনার তীর।।
মুনিরে প্রণমি করে যুক্তি সমুচিত।
মুনি বলে সুমন্ত্রণা করিব বিহিত।।
লবণ নামেতে দৈত্য সংগ্রামে দুর্জ্জয়।
কিরূপে মারিব তারে শত্রুঘন কয়।।
মুনি বলে, অতিশয় দুষ্ট সে লবণ।
কহি হিত উপদেশ শুন শত্রুঘন।।
রজনী প্রভাতে যাবে মৃগের উদ্দেশে।
আপনা পাসরে যাবে মৃগের উদ্দেশে।
আপনা পাসরে বেটা ভক্ষণের আশে।।
জাঠাগাছ থুয়ে যায় শিবপূজার ঘরে।
ফিরে আসি নিবাসে দিবস দ্বি-প্রহরে।।
হিত উপদেশ বলি শুনহ সত্বর।
মৃগয়াতে গেলে বেড়ে রহ তার ঘর।।
কোন মতে জাঠাগাছ না পায় রাক্ষস।
লবণে মারিতে তবে করহ সাহস।।
জাঠা বন্দী করিতে না পার শত্রুঘন।
না হবে তোমার শক্তি মারিতে লবণ।।
শত্রুঘন পাইয়া এতেক উপদেশ।
লবণে মারিতে যায় মুথরার দেশ।।
প্রভাতে লবণ গেল করিতে আহার।
শত্রুঘন সসৈন্যে যমুনা হৈল পার।।
জাঠাগাছের ঘর গিয়া কটকেতে বেড়ে।
মৃগভার স্কন্ধেতে লবণে আসে গড়ে।।
সৈন্যেতে সকল পথ রহিল আগুলে।
কুপিল লবণ বীর মৃগভার ফেলে।।
মধুদৈত্য-পুত্র সেই মথুরাতে থানা।
বিক্রমে নাহিক অন্ত রাবণ-ভাগিনা।।
লবণ বলে মিছা কি যুড়িব ধনুর্ব্বাণ।
তোর মত কত বেটার লয়েছি পরাণ।।
কহিছেন শত্রুঘন লবণ-বচনে।
কাটিব তোমার মুণ্ড এই ধনুর্ব্বাণ।।
মামা তোর বীর ছিল সেই অহঙ্কার।
আমার ভ্রাতার হাতে তাহার সংহার।।
সেই রামের ভাই আমি তোর তত্ত্বে বুলি।
তোর মাথা কাটিয়া রামেরে দিব ডালি।।
খাইয়া মানুষ গরু পূর্ণ হৈল কাল।
তোরে মেরে মথুরা বসাব চালে চাল।।
লবণ বলিছে ক্রোধে শুন শত্রুঘন।
তোরে মারি ঘুচাইব মায়ের ক্রন্দন।।
মামারে মারিল তোর জ্যেষ্ঠ সহোদর।
মায়ের ক্রন্দন শুনি জ্বলি নিরন্তর।।
সেই তাপে আজি তোর হবে সর্ব্বনাশ।
মরিতে মানুষ বেটা এলি মোর পাশ।।
তোর বংশে যত রাজা তৃণ হেন বাসি।
মান্ধাতারে পোড়ায়ে করেছি ভস্মরাশি।।
শত্রুঘন কহেন এসেছি সেই কোপে।
তোর মাথা কাটিব রাখিবে কার বাপে।।
মারিয়াছ সূর্য্যবংশে মান্ধাতা-ভূপতি।
তার শোধ পাঠাইব যমের বসতি।।
রামের কনিষ্ঠ আমি বীর-অবতার।
তোরে মেরে শোধিব বংশের যত ধার।।
শত্রুঘ্নের বচনেতে রুষিল লবণ।
মানুষ বেটার কথা সব কতক্ষণ।।
হাতে হাত চাপিয়া দন্তের কড়মড়ি।
শীঘ্রগতি চলিল আনিতে জাঠাবাড়ি।।
লবণের মন বুঝি শত্রুঘন হাসে।
মনে কি করেছ বেটা ফিরে যাবে বাসে।।
শুনিয়া লবণ বীর সিংহ হেন গর্জ্জে।
গর্জ্জন করিয়া আসে যুঝিবার সাজে।।
গাছ পাথর মারে লবণ সঘনে উপাড়ি।
শত্রুঘ্নের মাথে মারে দুহাতিয়া বাড়ি।।
সেই ঘায়ে শত্রুঘ্ন হইল অচেতন।
ভয়ঙ্কর শব্দে লবণ করিছে গর্জ্জন।।
শত্রুঘন পড়ে সৈন্য করে হাহাকার।
ঘরে যায় লবণ লইয়া মৃগভার।।
পুনঃ উঠে শত্রুঘন সমরে দুর্জ্জয়।
ধনুক পাতিয়া যুঝে নাহি করে ভয়।।
বিষ্ণুবাণ শত্রুঘন যুড়িল ধনুকে।
স্থাবর জঙ্গম মেরু দিকপাল কাঁপে।।
উল্কাপাত হয় যেন সেই বিষ্ণুবাণে।
প্রলয় হইল দেখি ভাবে দেবগণে।।
আচম্বিতে সৃষ্টিনাশ হয় কি কারণ।
শুনিয়া প্রলয়-শব্দ কাঁপে দেবগণ।।
কোন যুগে এমত শব্দ কভু নাহি শুনি।
প্রলয় হইল কি নিশ্চয় নাহি জানি।।
ব্রহ্মা বলে, দেবগণ না করিহ ডর।
লবণে বধিতে গর্জ্জে শত্রুঘন-শর।।
সৃজিলেন বাণ বিষ্ণু আপনার হাতে।
মৈল মধুকৈটভাদি সেই বাণাঘাতে।।
বাণের উপরে বিষ্ণু হন অধিষ্ঠান।
সেই বাণাঘাতে কারো নাহি রহে প্রাণ।।
বিষ্ণু-বাণ উপরেতে ব্রহ্ম-অগ্নি জ্বলে।
সেই বাণ ব্যর্থ নাহি হয় কোনকালে।।
বিষ্ণুবাণ শত্রুঘন এড়িল লবণে।
শূন্যমার্গে থাকিয়া দেখেন দেবগণে।।
সিংহনাদে করি ডাকে বীর শত্রুঘন।
কোথা আছ ওরে বেটা দেহ আসি রণ।।
বাণের গর্জ্জন শুনি লবণের ডর।
কহিতেছে শত্রুঘনে ত্রাসিত অন্তর।।
ক্ষণেক ক্ষমহ মোরে খাই ভক্ষ্য পানি।
বাহুড়িয়া আসি যুদ্ধ করব এখনি।।
মনে ভাবে জাঠা আছে দেবপূজার ঘরে।
লইব সবার প্রাণ জাঠার প্রহারে।।
তাহার মনের কথা পায় শত্রুঘন।
কহিতে লাগিল বীর করিয়া তর্জ্জন।।
করিবি ভোজন তুই আমি উপবাসী।
দোঁহে উপবাসে যুদ্ধ আমি অভিলাষি।।
এখন ভোজন আর উচিত না হয়।
ভোজন করিবি বেটা গিয়া যমালয়।।
কুপিল লবণ বীর দুর্জ্জয় প্রতাপ।
আহার করিতে নাহি দিলি মহাপাপ।।
রঘুবংশে জন্ম তোর সর্ব্বলোকে জানে।
রঘুকুল উজ্জ্বল করিলি এতদিনে।।
শত্রুঘনে মারিবারে আইল লবণ।
সন্ধান পূরিয়া বাণ এড়ে শত্রুঘন।।
মহাশব্দে যায় বাণ জ্বলন্ত আগুনি।
লবণের বুকে বিন্ধি সান্ধায় মেদিনী।।
বিষ্ণুবাণ বুকে ঠেকি পড়িল লবণ।
দেবতার জাঠাগাছ গেল ততক্ষণ।।
শক্তিমান জাঠাগাছ গেল অন্তরীক্ষে।
পড়িল লবণ বীর সর্ব্বলোকে দেখে।।
জয় জয় শব্দ করে যত দেবগণ।
শত্রুঘন উপরে করে পুষ্প বরিষণ।।
স্বর্গেতে দুন্দুভি বাজে নাচে বিদ্যাধরী।
আনন্দে হইল মগ্ন যত সুরপুরী।।
শত্রুঘ্নের তরে ব্রহ্মা কহিলা তখন।
বর মাগ মহাবীর যাহা লয় মন।।
নিজ বাহুবলে বীর লবণে মারিলে।
স্বর্গ মর্ত্ত্য পাতালের শঙ্কা নিবারিলে।।
যে বর মাগিবে তুমি দেবতার স্থানে।
সে বর তোমারে দিবে সর্ব্ব দেবগণে।।
কহিছেন রামানুজ যুড়ি দুই পাণি।
মথুরাতে বসতি হউক পদ্মযোনি।।
তথাস্তু বলিয়া বর দিল ততক্ষণ।
বর দিয়া স্বর্গে গেল যত দেবগণ।।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83
Tags:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress