আমার আপন টেলিফোন সেটটিকে
প্রত্যহ সস্নেহ দেখি। কখনও আলতো তুলে নিই
রিসিভার, কখনও-বা নিবিড় আবেগে
চেপে ধরি; সর্বক্ষণ নয়,
কখনও কখনও
সে খুব কঞ্জুস হয়ে ওঠে।
টেলিফোন মাঝে মাঝে বড়ই ব্যাকুল
কণ্ঠস্বরে শোনায় আমাকে
বসন্ত বাহার কিংবা বিধুর বেহাগ, দরবারি। তার দূর
ব্যালকনিটি বাসনা আর স্বপ্নময়তাকে
নিভৃতে ফুটিয়ে তোলে এবং গাছের মর্মরিত
পত্রালি আমার হৃদয়ের ধ্বনি হয়ে
আর পাখিদের নাচানাচি
আমার আনন্দ রূপে সকাল বিকেলে
তার বুকে ঠাঁই পেয়ে যায় অগোচরে।
টেলিফোন কখনও আমাকে
ফাল্গুনের উদ্ভাসিত গৌরবে সাজায়
নিমেষে সাদরে, কখনও-বা মাথায় পরিয়ে দেয়
কাঁটার মুকুট, যন্ত্রণায় হৃদয়ের
তন্ত্রী ছিঁড়ে যেতে চায়। আমার আপন টেলিফোন
ভোরবেলা ভাঙায় গভীর ঘুম তার,
কখনও জাগিয়ে তোলে সুখস্বপ্ন অথবা দুঃস্বপ্ন
থেকে, কথা ঢালে কানে ষড়জে নিখাদে।
কখন যে টেলিফোন সেট নিজেরই অজ্ঞাতসারে
শুরু করে স্বপ্ন দেখা আর
দিব্যি মগ্ন হয় আত্মকথনে এবং
আমার সুন্দরী দয়িতা প্রেমে গলে
একজন কবির তুখোড় প্রতিদ্বন্দ্বী বনে যায় ঠারে-ঠোরে
ফুল্ল ফোয়ারার মতো; নক্ষত্র পাড়ায় ওর নিয়ত উড়াল।