Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » আত্মগ্লানি || Rana Chatterjee

আত্মগ্লানি || Rana Chatterjee

আত্মগ্লানি

” তুমি যে ভুল টা করেছো আমি শুভাকাঙ্খি হিসাবে বলছি দেখো একদিন তোমায় পস্তাতে হবেই”-আপন মনেই বিড়বিড় করে এমন কিছু বুলি সব সময় আউরে যাচ্ছে নিশা,তবে কি সে পাগল হয়ে যাচ্ছে! তল পেটটা চিনচিনে ব্যথা কাল সন্ধ্যা থেকে। পাশের রুম মেট নমিতা কে বলতে গিয়েও পারে নি গত দু মাস আগে তার প্রাণের ঋভু ঠিক কি করেছে তার সাথে। আর বলবেই বা কি করে ঋভু কে নিয়ে কম কাটাকাটি তো তার হয় নি এই মেসের পায়েলের সাথেও। নমিতা,পায়েল যেদিন পার্কে ঋভুকে দেখে নিশার সঙ্গে সেদিন রাতেই ঝাঁপিয়ে পড়ে “তুই কার সাথে ঘুরছিস নিশা,তুই চিনিস ওকে? নিশা ঝাঁজ দেখিয়ে বলেছিল তোরা জোটাতে পারিস নি বলে হিংসা করছিস! ওরা এমন পাল্টা আক্রমণের কবলে পরেও নিশাকে বোঝানোর চেষ্টা করে কিন্তু বিফল হয়।

আজ নিশা বেশ বুঝছে ওটা ওদের হিংসা ছিল না, ছিল প্রাণবন্ত বন্ধুত্ব।বন্ধু কে বাঁচানোর একটু চেষ্টা যাতে পিছলে না যায়।পায়েল তো আর কথাই বলে না,চাকরি পেয়ে সামনের মাসে চলে যাচ্ছে মেস ছেড়ে আর নিকিতা এ বিষয়ে আর কি শুনবে ঋভু ঠিক কি করেছে তার সাথে!নিশার আর বলার মুখও নেই ওর সাথে কি কান্ড ঘটিয়ে মুখে চুনকালি মাখিয়ে ঋভু কেটে পড়েছে।

নিকিতা আর শুনলেও কেমন যে প্রতিক্রিয়া দেবে, ছড়িয়ে যাবে না তো দাবানলের মতো খবরটা এই আতঙ্ক কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে নিশাকে । এক দুঃসহ গুমোট পরিবেশ, গলায় যেন কিসের একটা দলা পাকানো ব্যথা । পুরানো আমলের এই মেস ঘরটা যেন পাগলা গারদ লাগে নিশার। খেয়াল পড়লো আরে একি টেবিলে তার কালকের রাতের খাবার যে এখনো ঢাকা, তবে কি সেটাও খায় নি ! কি আশ্চর্য্য নিশা কেন যে সব ভুলে যাচ্ছে তবে কি স্মৃতি ভ্রম! আজকাল একটা যেন ঘোরের মধ্যে থাকে সে।ব্রেন তার কোনো কাজই ঠিক ঠাক করছে না কি উদ্বিগ্ন হলো আরো। এলোমেলো চুলে জট, চোখের নিচে কালি,বয়স যেন এক লহমায় বেড়ে গেছে! যেন সে মেসে নয় একটা কয়েদে বসে থাকা অতৃপ্ত আত্মা। কষ্টে মা গো বলে গলা থেকে আওয়াজ টা বেরুতেই কে যেন বিদ্রুপ করলো নিশাকে!

বিছানা থেকে উঠে বাথরুমের দিকে যেতে গিয়েও মাথাটা ঘুরে গেল!পেট টা কেমন ভারী ভারী লাগছে দুমাস নিয়মিত মাসিকও থমকে।তবে কি সেও নষ্টা মেয়ের তকমায় সমাজে চিহ্নিত হবে! মা তুমি আমায় ক্ষমা করো,বাবা তোমাদের আমি ঠকাতে চাই নি। গ্রাজুয়েশন করে যখন বাবা তুমি বললে বাড়ি থেকে দুরশিক্ষায় মাস্টার ডিগ্রি করো মা আর আমি তোমায় যাচ্ছেতাই করে বলে প্রটেস্ট করেছিলাম। নারী শিক্ষার বড়ো বুলি আউরে গ্রাম থেকে এত বড়ো শহরের অপরিচিত মহল্লার মেসে একাকী জিদ করে উঠেছিলাম।তবু শিক্ষা হয় নি আমার যখন বাইরের রূপ দেখে ঋভুর অমায়িক ব্যবহারে সকল কে অবিশ্বাসের চোখে দেখেছিলাম আর ওকে আপন। আজ বেশ বুঝেছি সবাই ছিল আমার আসল কাছের আপনজন-আমি নিজেই নিজের কাছে, নিজের লক্ষ্যের কাছে হেরে গেছি।আমি আবার নতুন করে বাঁচতে চাই মা,খুব শীঘ্র ঘরে ফিরছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *