আততায়ী অন্ধকার অতর্কিতে বর্বর, দাঁতাল
হিংস্রতায় গ্রাস করে পূর্ণিমাকে। মহিমার বিনাশে কাদার
কৃমিকীট, সরীসৃপ, পিশাচেরা উল্লসিত হয়। ইতিহাস
যাঁকে খোলা পথে ডেকে এনেছিল গভীর সংকেতে,
তিনি তো নিজেই মহা ইতিহাস। বুলেটের ঝড়
পারেনি মাহাত্ম্য তাঁর কেড়ে নিতে। বরং শোকার্ত অশ্রুকণা-
সমুদয় আজও আকাশের
নক্ষত্রণ্ডলী হয়ে জ্বলে আর গৈরিক প্রান্তরে,
ধূসর দিগন্তে খেয়াঘাটে চারণের কণ্ঠে প্রায়শ ধ্বনিত
দেশজ গৌরব-গাথা তাঁর।
আজীবন অক্লান্ত সাধনা ছিল তাঁর জীবনের
বলিষ্ঠ বিকাশ আর সৌন্দর্যের অকুণ্ঠ বিশদ প্রকাশের।
প্রগতি, কল্যাণ আর সুন্দরের
শক্র যারা, তারাই হেনেছে তাঁকে নব্য এই যেশাসকে, আর
তাঁর চার অনুসারী, বিশ্বস্ত, সাধনাদীপ্ত তাঁরাও কুটিল
নীল নকশা অনুসারে হয়েছেন অনুগামী তাঁর
আমারাতে একই পথে। তখন চৌদিকে
ছিল জানি লোভাতুর হিংস্র সব শ্বাপদের রাত।
সংহার করেও ঘাতকেরা তাঁর দিকে মরণের
আঁধার পারেনি ছুঁড়ে দিতে। তাঁর প্রাণের স্পন্দন
আছে জেগে অগণিত মানুষের বুকে। আমরা কি পুনরায়
হারিয়ে ফেলব পথ? তাঁর নাম, অমেয় খ্যাতির
নির্লজ্জ ব্যবসা দেখে ইদানীং, হায়,
শঙ্কা হয়, এই নাম কখনও ধুলোয় কিংবা পিচ্ছিল কাদায়
হঠাৎ ঢাকা না পড়ে। তাহলে বাংলার
সূর্যোদয় মুখ লুকোবার ঠাঁই খুঁজবে কোথায়?