Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

এরই মধ্যে একদিন মতি-মুচিনী অতি অসহায় অবস্থায় এসে পৌঁছলো ওদের গাঁয়ে।

সকালে হাবু এসে বললে—মতি-দিদিকে দেখে এলাম মা, কাপালীদের বাড়ী বসে আছে। ওর চেহারা বড় খারাপ হয়েছে।

অনঙ্গ-বৌ বললে—কি রকম দেখে এলি?

—রোগা মত।

—জ্বর হয়েছে?

—তা কি জানি! দেখে আসবো?

হাবু আবার গেল, কিন্তু মতিকে সেখানে না দেখে ফিরে চলে এল।

আর দুদিন ওর কথা কারো মনে নেই, একদিন সকালে মতি হাবুদের বাড়ীর সামনে একটা আমগাছের তলায় এসে শুয়ে পড়লো। ওর হাত-পা ফুলেছে, মুখ ফুলেছে, হাতে একটা মাটির ভাঁড়। সারা দুপুর সেখানে শুয়ে জ্বরে ভুগেছে। কেউ দেখে নি, বিকেলের দিকে গঙ্গাচরণ বাড়ী ফিরবার পথে ওকে দেখে কাছে গিয়ে বললে, কে?

ওকে চিনবার উপায় ছিল না।

মতি অতি কষ্টে গেঙিয়ে গেঙিয়ে বললে—আমি দাদাঠাকুর—

—কে, মতি? এখানে কেন? কি হয়েছে তোর?

—বড্ড জ্বর দাদাঠাকুর, তিন দিন খাই নি, দুটো ভাত খাবো।

—তা হয়েচে ভালো! তুই উঠে আয় দিকি, পারবি?

উঠবার সামর্থ্য মতির নেই। গঙ্গাচরণ ওকে ছোঁবে না। সুতরাং মতি সেখানেই শুয়ে রইল। অনঙ্গ-বৌ শুনতে পেয়ে ব্যস্ত হয়ে উঠলো কিন্তু সেও অত্যন্ত দুর্বল। উঠে মতির কাছে যাওয়ার শক্তি তারও নেই।

বললে—ওগো মতিকে কিছু খেতে দিয়ে এসো—

—কি দেবো?

—দুটো কলাইয়ের ডাল আছে ভিজনো। এক মুঠো দিয়ে এসো।

—ও খেয়ে কি মরবে? তার জ্বর আজ কতদিন তা কে জানে? মুখ হাত ফুলে ঢোল হয়েচে। কেন ও খাইয়ে নিমিত্তের ভাগী হবো!

—তবে কি দেবো খেতে? কি আছে বাড়ীতে?

খুব ব্যস্ত হয়ে পড়লো অনঙ্গ। কিন্তু অন্য কিছুই ঘরে নেই। কি খেতে দেওয়া যায়, এক টুকরো কচু ঘরে আছে বটে কিন্তু তা রোগীর খাদ্য নয়। হাবু পুবপাড়ার জঙ্গলের মধ্যে থেকে ওই কচুটুকু আজ দু’দিন আগে তুলে এনেছিল, দুদিন ধরেই এক এক টুকরো সিদ্ধ খেতে খেতে ওই এক ফালি অবশিষ্ট আছে।

ভেবেচিন্তে অনঙ্গ-বৌ বললে—হ্যাঁগা, কচু বেটে জল দিয়ে সিদ্ধ করে দিলে রুগী খেতে পারে না?

—তা বোধ হয় পারে, মানকচু?

—জঙ্গুলে মানকচু।

—তা দাও।

সেই অতি তুচ্ছ খাদ্য ও পথ্য একটা কলার পাতায় মুড়ে হাবু মতির সামনে নিয়ে গেল। অনঙ্গ-বৌ অতি যত্ন নিয়ে জিনিসটা তৈরী করে দিয়েছে। হাবুকে বলে দিয়েছে ওকে এখানে নিয়ে আসবি, বাইরের পৈঁঠেতে বিচুলি পেতে পুরু করে বিছানা করে দিলেই হবে। আমতলায় শুয়ে থাকলে কি বাঁচে?

হাবু গিয়ে ডাকলে,—ও মতি-দিদি, এটুকু নাও—

মতি ক্ষীণ সুরে বললে—কি?

—মা খাবার পাঠিয়েচে—

—কে?

—আমার মা। আমার নাম হাবু, চিনতে পারচো না?

মতি কথা বলে না—খানিকক্ষণ কেটে গেল।

হাবু আবার বললে—ও মতি-দিদি?

—কি?

—খাবার নাও। মা দিয়েচে পাঠিয়ে।

—শালিক পাখী শালিক পাখী, ধানের জাওলায় বাস—

—ও মতি-দিদি? ওসব কি বলচো?

—কে তুমি?

—আমি হাবু। ভাতছালায় আমাদের বাড়ী ছিল, মনে পড়ে?

—বিলির ধারের পদ্মফুল,

নাকের আগায় মোতির দুল—

—ও রকম বোলো না। খেয়ে নাও, গায়ে বল পাবে।

—কি?

—এই খাবার খেয়ে নাও—

—কে তুমি?

—আমি হাবু, আমার বাবার নাম গঙ্গাচরণ চক্রবর্তী, পণ্ডিত মশাই ছিলেন, মনে পড়ে না?

—হুঁ।

—তবে এই নাও খাবার। মা পাঠিয়েচে।

—ওখানে রেখে যাও।

—কুকুরে খেয়ে ফেলবে। তুমি খেয়ে নাও, নিয়ে আমাদের বাড়ী চলো, মা যেতে বলেচে।

—কে তুমি?

—আমি হাবু। আমার বাবার নাম—

মতি আর কথা বললে না। যেন ঘুমিয়ে পড়লো। হাবু ছেলেমানুষ, আরও দু-তিনবার ডাকাডাকি করে কোনো উত্তর না পেয়ে সে কচু বাটাটুকু ওর শিয়রের কাছে রেখে চলে এলো।

অনঙ্গ-বৌ বললে—কিরে, মতি কই? নিয়ে এলি নে?

—সে ঘুমুচ্চে মা। কি সব কথা বলে, আবোল-তাবোল, আমার তো ভয়ই হয়ে গেল। খাবার রেখে এসেচি তার শিয়রে।

—আর একবার গিয়ে দেখে আসবি একটু পরে।

—বাবাকে একটু যেতে বোলো, বাবা ফিরলে।

—তুই আর একটু পরে গিয়ে খাবারটুকু খাইয়ে আসবি—

আরও কিছুক্ষণ পরে হাবু গিয়ে দেখে এল মতি সেইভাবেই মুখ গুঁজে পড়ে আছে। উঠলোও না বা ওর সঙ্গে কোনো কথাও বললে না। কচুবাটা সেইভাবে ওর শিয়রের কাছেই পড়ে। হাবু অনেক ডাকাডাকি করলে, ও মতি-দিদি, ও মতি-দিদি—সন্ধ্যা হয়ে এল। অন্ধকার ঘনিয়ে আসবার সঙ্গে সঙ্গে আকাশে মেঘ দেখা দিলে, বোধ হয় জল হবে। হাবু খুব ব্যস্ত হয়ে পড়লো বিষ্টিতে ভিজবে এখানে বসে থাকলে। মতি-দিদিও এখানে শুয়ে থাকলে ভিজে মরবে। এখন কি করা যায়?

মাকে এসে ও সব কথা বললে।

অনঙ্গ-বৌ বললে, ময়নাকে নিয়ে যা, দুজনে ধরাধরি করে নিয়ে এসে বাইরের পৈঁঠেতে শুইয়ে রেখে দে—

ময়না হাসিখুশি-প্রিয় চঞ্চলা মেয়ে!

সে বললে—আমরা আনতে পারবো? কি জাত কাকীমা?

—মুচি।

ময়না নাক সিঁটকে বললে—ও মুচিকে ছুঁতে গেলাম বই কি এই ভরসন্দেবেলা! আমি পারবো না, আমি না বামুনের মেয়ে? বলেই হাসতে হাসতে হাবুর সঙ্গে বেরিয়ে চলে গেল।

দুজনে গিয়ে দেখলে মতি সেইভাবেই শুয়ে আছে, সেই একই দিকে ফিরে। ওর মাথার শিয়রে সেই কচুবাটা, পাশে একটা মাটির ভাঁড়।

ময়না গিয়ে ডাকলে, ও মতি—

কোনো সাড়া-শব্দ নেই।

ময়না হাবুর চেয়ে বয়সে বড়, বুদ্ধিসুদ্ধি তার আরও একটু পেকেচে, সে আরও কাছে এগিয়ে গিয়ে ভালো করে দেখে বললে, কাকাবাবু বাড়ী থাকেন তো ডেকে নিয়ে আয় দিকি।

হাবু বললে—কেন?

—আমার যেন কেমন কেমন মনে হচ্ছে হাবু, একজন কোনো বড় লোককে ডেকে নিয়ে আয় দিকি!

এমন সময়ে দেখা গেল কাপালীদের ছোট-বৌ সে পথে আসচে। ময়না বললে—ও মাসি, শোনো ইদিকে—

—কি?

—এসে দেখে যাও, মতি-দিদি কথাবার্তা বলচে না, এমন করে শুয়ে আছে কেন?

ছোট-বৌ তাড়াতাড়ি এগিয়ে এসে ভালো করে দেখলে।

মতি মারা গিয়েচে। সে আর উঠে কচুবাটা খাবে না, ভাঁড়েও আর খাবে না জল। তার জীবনের যা কিছু সঞ্চয়, তা পথের ধারেই ফেলে রেখে সে পরপারে চলে গিয়েচে।

ছোট-বৌ আর ময়নার মুখে সব শুনে অনঙ্গ-বৌ হাউ হাউ করে কাঁদতে লাগলো।

গ্রামে থাকা খুব মুশকিল হয়ে পড়লো মতি মুচিনীর মৃত্যু হওয়ার পরে। অনাহারে মৃত্যু এই প্রথম, এর আগে কেউ জানত না বা বিশ্বাসও করেনি যে অনাহারে আবার মানুষ মরতে পারে। এত ফল থাকতে গাছে গাছে, নদীর জলে এত মাছ থাকতে, বিশেষ করে এত লোক যেখানে বাস করে গ্রামে ও পাশের গ্রামে, তখন মানুষ কখনো না খেয়ে মরে? কেউ না কেউ খেতে দেবেই। না খেয়ে সত্যিই কেউ মরবে না।

কিন্তু মতি মুচিনীর ব্যাপারে সকলেই বুঝলে, না খেয়ে মানুষে তাহলে তো মরতে পারে। এতদিন যা গল্পে-কাহিনীতে শোনা যেতো, আজ তা সম্ভবের গণ্ডির মধ্যে এসে পৌঁছে গেল। কই, এই যে একটা লোক মারা গেল না খেয়ে, কেউ তো তাকে খেতে দিলে না? কেউ তো তাকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে পারলে না? সকলের মনে বিষম একটা আশঙ্কার সৃষ্টি হল। সবাই তো তাহলে না খেয়ে মরতে পারে!

দুর্গা ভটচায সেদিন দাওয়ায় বসে মতি মুচিনীর মৃত্যুদৃশ্য দেখলে। মনে মনে ভাবলে এবার আমার এতগুলো ছেলেমেয়েকে খেতে দেবে কে? এদের ঘরে তো খাবার নেই, কোনোদিন এক খুঁচি কলাইয়ের ডাল, কোনোদিন বা একটা কুমড়ো, তাই সবাই মিলে ভাগ করে খাওয়া। দুর্গা ভটচায বুড়ো মানুষ, ওর তাতে পেট ভরে না পেটে খিদে লেগেই আছে, খিদে কোনোদিন ভাঙে না। দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়চে। এমন ভাবে আর কদিন এখানে চলবে?

মতির মৃতদেহ আমতলাতেই পড়ে আছে। কত লোক দেখতে আসচে। দূর থেকে দেখে ভয়ে ভয়ে চলে যাচ্ছে। আজ যা ওর হয়েচে, তা তো সকলেরই হতে পারে! ও যেন গ্রামের লোকের চোখ ফুটিয়ে দিয়ে গেল। একটি মূর্তিমান বিপদের সংকেত স্বরূপ ওর মৃতদেহটা পড়ে রয়েচে আমগাছটার তলায়। অনাহারে প্রথম মৃত্যুর অশনি-সংকেত। দুর্গা ভটচায বললে—তাই তো ভায়া, এখন কি করা যায়?

গঙ্গাচরণ সন্তুষ্ট ছিল না ওর ওপর। একপাল ছেলেমেয়ে নিয়ে এসে ঘাড়ে বসে খাচ্চে এই বিপদের সময়। স্ত্রীর ভয়ে কিছু বলতেও পারা যায় না।

বিরক্ত সুরে বললে—কি আর করা যাবে, সকলের যা দশা, আমাদেরও তাই হবে—

—না খেয়ে আর কডা দিনই বা চলবে তাই ভাবচি। একটা হিল্লে না হলি যাই বা কোথায়?

—একটা হিল্লে কি এখানে বসে হবে, চেষ্টা করে দেখতে হবে।

অনঙ্গ-বৌ কাপড়ের ছোট্ট এতটুকু একটা পুঁটুলি হাতে ওদের দেখিয়ে দেখিয়ে বললে—এতে কি আছে বলো তো? জ্যাঠামশাই বলুন তো এতে কি?

—কি জানি কি?

এতে আছে শসার বীজ, নাউয়ের বীজ আর শাঁকআলুর বীজ। কাপালীদের ছোট-বৌ দিয়ে গিয়েচে। এ পুঁতে দেবো আমাদের উঠানে।

গঙ্গাচরণ বললে—সে আশায় এখন বসে থাক। কবে তোমার নাউ-শসা ফলবে আর তাই খেয়ে দুঃখ এবার ঘুচবে। সবাইকে মরতে হবে এবার মতির মত।

অনঙ্গ-বৌ বললে—হ্যাঁগা, মতির দেহটা ওখানে পড়ে থাকবে আর শেয়াল-কুকুরে খাবে? ওর একটা ব্যবস্থা কর!

—কি ব্যবস্থা হবে?

—ওর জাতের কেউ এ গাঁয়ে নেই?

—থাকলেও কেউ আসবে না। কেউ ছোঁবে না মড়া।

—না যদি কেউ আসে, চলো আমরা সবাই মিলে মতির সৎকার করি গে। ওকে ওভাবে ওখানে পড়ে থাকতে দেবো না। ও বড় ভালোবাসতো আমায়। আমারই কাছে মরতে এলো শেষকালে। ভালোবাসতো বড্ড যে হতভাগী—

অনঙ্গ-বৌ আঁচলের ভাঁজ দিয়ে চোখ মুছলে।

হৃদয় সকলের থাকে না, যার থাকে তার আনন্দও যত, কষ্টও তত। অনঙ্গ-বৌ ছটফট করচে মতির মৃতদেহটা ওভাবে পড়ে থাকতে দেখে। কিছুতেই ওর মনে স্বস্তি পাচ্চে না। তার নিজের যে সে অবস্থা নয়, তাহলে সে আর ময়না দুজনে মিলে মৃতদেহটার সৎকার করে আসতো।

দুর্গা ভটচায বললে—চলো ভায়া, আমরা দুজনে যা হোক করে ওটির ব্যবস্থা করে আসি।

গঙ্গাচরণ একটু অবাক হয়ে গেল। দুর্গা ভটচাযের মুখে এত পরোপকারের কথা! কিন্তু কার মধ্যে কি থাকে বোঝা কি যায়? সত্যিই সে তা করলেও শেষ পর্যন্ত! দুর্গা ভটচায আর গঙ্গাচরণ আর কাপালীদের ছোট-বৌ।

আরও দু’দিন কেটে গেল।

শোনা গেল গ্রাম ছেড়ে অনেক লোক পালাচ্চে।

রাত্রির মধ্যে অর্ধেক লোক চলে গিয়েচে কাপালীপাড়া থেকে।

কাপালীদের ছোট-বৌ সকালে এসে জানালে অনঙ্গ-বৌকে, সে চলে যাচ্চে।

অনঙ্গ-বৌ বললে—কোথায় যাবি রে?

—সবাই যেখানে যাচ্চে—শহরে! সেখানে গেলে গোরমেন্টো নাকি খেতে দেচ্চে।

—কে বললে?

—শোনলাম, সবাই বলচে।

—কার সঙ্গে যাবি? তোর স্বামী যাবে?

—সে তো বাড়ী নেই। সে আজ দিন পাঁচ-সাত বেগুন বেচতে গিয়েচে শহরের হাটে। আর আজও তো ফিরল না।

—কোথায় গেল?

—তা কি করে বলবো? তুমিও যেখানে, আমিও সেখানে।

—তুই যেতে পারবি নে। আমার কথা শোন ছুটকি, তোর অল্প বয়স, নানা বিপদ পথে মেয়েমানুষের। আমার কাছে থাক তুই। আমি যদি খেতে পাই তুইও পাবি। আমার ছোটবোনের মত থাকবি। যদি না খেয়ে মরি, দুজনেই মরবো।

কাপালী-বৌ সাতপাঁচ ভেবে চুপ করে রইল। অনঙ্গ-বৌ বললে—কথা দে, যাবি নে!

—তুমি যখন বলচো দিদি, তোমার কথা ঠেলতে পারি নে। তাই হবে।

—যাবি নে তো?

—না। দাঁড়াও দিদি, আমি চট করে এক জায়গা থেকে আসি। এখুনি আসচি।

ইটখোলার পাশে অশথতলায় যদু-পোড়া অপেক্ষা করচে। বেলা আটটার বেশি নয়। ওকে দেখে বললে—এই বুঝি তোমার সকালবেলা? ইটখোলার কুলিদের হাজরে হয়ে গেল, বেলা দুপুর হয়েচে। ওবেলা কখন গাড়ী নিয়ে আসব? সন্দের সময়?

ছোট-বৌ বললে—আনতে হবে না।

যদু-পোড়া আশ্চর্য হওয়ার সুরে বললে—আনতে হবে না গাড়ী? তার মানে কি? হেঁটে যাবে? পথ তো কম নয়—

ছোট-বৌ হাত নেড়ে নেড়ে বেশ ভঙ্গি করে কৌতুকের সুরে বললে—হাঁটবোও না, যাবোও না—

—যাবে না মানে?

—মানে, যাবো না।

যদু-পোড়া রাগের সুরে বললে—যাবে না তবে আমাকে এমন করে নাচালে কেন?

—বেশ করিচি।

কথা শেষ করেই কাপালী-বৌ ফিরে চলে আসবার জন্যে উদ্যত হয়েচে দেখে যদু-পোড়া দাঁত খিঁচিয়ে বললে—না খেয়ে মরছিলে বলে ব্যবস্থা করছিলাম। না যাও, মরো না খেয়ে।

কাপালী-বৌ কোনো উত্তর না দিয়ে হন হন করে চলে গেল।

যদু-পোড়া চেঁচিয়ে ডাক দিলে—শুনে যাও, একটা কথা আছে—

কাপালী-বৌ একবার দূর থেকে চেয়ে দেখলে পিছন ফিরে। একটু ইতস্তত করলে। তারপর একেবারেই চলে গেল।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13
Pages ( 13 of 13 ): « পূর্ববর্তী1 ... 1112 13

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress