Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » অমূল্য সময় || Rimpa Laha

অমূল্য সময় || Rimpa Laha

অমূল্য সময়

হাঁসফাস রোদে ঘেমে নেয়ে মুখ রক্তবর্ণ করে স্কুল থেকে ফেরার সময় বুবুন লক্ষ্য করে আয়ানের মা কত আদর করে ঘাম মুছে জামা খুলিয়ে দিচ্ছে আয়ানকে। বুবুনের বন্ধু আয়ান । ওর ক্লাসেই পড়ে । বাড়ি ফেরার পথে আয়ানদের বাড়িটা পড়ে । রোজ ওর মা ওকে দিয়ে আসে নিয়ে আসে । আর বুবুনকে দেওয়া নেওয়া করে নমিতা দি মানে ওদের কাজের মাসি । বুবুনের বাবা শহরের বড় উকিল । ওনার সময় খুব কম । আর মা ডাক্তার । কাজেই নমিতা দিই বুবুনের দেখাশোনা করেন ।
বাড়ি ফিরে স্কুল ড্রেস খুলতে খুলতে আয়ানের কথা মনে পড়ে বুবুনের । আমার মাও যদি ওরাম আদর করে আমার ড্রেস খুলে দিত । দুঃখ পায় বুবুন মনে মনে । যতক্ষণ স্কুলে থাকে আনন্দে থাকে বুবুন কিন্তু বাড়ি ফিরলেই খুব একা লাগে তার । সময় কাটতে চায়না । নমি খেতে দে খুব খিদে পেয়েছে । নমিতা নুডুলস বানিয়ে নিয়ে এলে
বুবুন চিৎকার করে ওঠে । কতবার না তোকে বলেছি রোজ নুডুলস খেতে আমার ভালো লাগে না । আমি আজ স্যান্ডউইচ খাবো । আমি পারবো না ।
আমার হয়েছে যত জ্বালা । এই রেখে গেলাম। খেতে হয় খাও আর না খেতে হয় না খাও । চোখে জল আসে বুবুনের । পপিনের মা আজ টিফিনে স্যান্ডউইচ বানিয়ে দিয়েছিল । বুবুন কয়েকবার বলেছিল মাকে বানিয়ে দিতে কিন্তু উনি সময় পাননি । কয়েকদিন ধরে একটা ক্রিটিকাল কেস নিয়ে খুব ব্যস্ত । রোদে ক্লান্ত বুবুন না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়ে । নমিতা নুডুলস এর বাটিটা তুলে নিজেই খেয়ে নেয় ।
সন্ধ্যেবেলা মা বাড়ি ফিরলে জড়িয়ে ধরে বুবুন । ছাড় বেটা ছাড় , খুব tired লাগছে । বলে দুহাতে সরিয়ে দেয় বুবুনকে । আচ্ছা মা আজ আমায় স্যান্ডউইচ বানিয়ে দেবে ? ছলছল চোখে বলে বুবুন । ছেলের চোখের জল অনুভব না করেই মা বলে আজ হবে না বুবু , কাল একটা important o.t. আছে । তাই একটু case study করতে হবে । পরে একদিন ঠিক বানিয়ে খাওয়াবো দেখিস ।
খানিক বাদে বুবুনের বাবা বাড়ি ফেরেন , ক্লান্ত – অবসন্ন । সবে fresh হয়ে laptop নিয়ে দরকারী কাজে বসেছেন এমন সময় বুবুন একরাশ আবেগ নিয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলতে যায় , জানো বাবা আজ আমি সারাদিন কিচ্ছু খাইনি । তার কথা শেষ হবার আগেই বাবা তাকে থামিয়ে বলে , বুবুন , বিরক্ত কোরো না , দরকারি কাজ করছি ।মাম্মার কাছে যাও । কাঁদতে কাঁদতে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় ছোট্ট বুবুন ।
নিজের ঘরে গিয়ে তার সব থেকে প্রিয় টেডিবিয়ারটাকে জড়িয়ে ধরে হাউ হাউ করে কাঁদতে থাকে । জানিস রণি ( টেডিবিয়ারের আদরের ডাক নাম ) আমার কথা কেউ ভাবে না ।
কেউ আমায় ভালোবাসে না । আমি সারাদিন যে খাইনি তাতে ওদের কিচ্ছু যায় আসে না । আজ থেকে আমি তোকেই আমার সব মনের কথা বলব । কাঁদতে থাকে বুবুন ।
আড়াল থেকে বুবুনের মা সবটা শোনে এবং বুবুনের বাবাকেও ডেকে এনে শোনায় । দুজনেই মনে মনে অনুতপ্ত হন । খানিক পরে দুজনেই বুবুনের ঘরে আসে এবং ওদের হাতে গরম গরম স্যান্ডউইচ এর প্লেট । আচ্ছা বুবু সোনা দেখনা আমি এগুলো আমার বেটাকে নিজের হাতে খাইয়ে দেবো শুনে ওমনি হিংশুটে বাবাটাও এসে খাওয়াবে বলে । তুই ঠিক করে দে তো বেটা কার হাতে তুই খাবি । বুবুন দুজনকেই কিসি দিয়ে বলে আমার দুজনকেই চাই । দুজনেই খাওয়াবে আমায় । বুবুনকে জড়িয়ে ধরে মা- বাবা । দুজনের চোখেই জল । বুবুনের চোখে মুখে স্মিত হাসি ……… !

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress