আহা সে পায়নি কিছু, না প্রেম, না প্রতিষ্ঠার সুখ
বহুকাল আগে এক মৃত কবি, দগ্ধ আয়ু, অপর ভাষার
সরু নদীটির পাশে সে এক নারীর দুই বিস্তীর্ণ ঊরুতে
রাখা খাতা,
না-লেখা অক্ষরে এসে শুতে চায়…
না, এটা কবিতায় কোনো ভূতের গল্প নয়। দৃশ্যটি স্পষ্ট দেখতে পাই আমি,
অকস্মাৎ। ফার্নান্দো পেসোয়া, পতুর্গিজ, ক’জনই বা চেনে এ দেশে! আমিও
পড়েছি যৎসামান্য। ক্ষীণকায়, দুর্যোগতাড়িত, হাহাকারময় এক কবিতা-সর্বস্ব
জীবন। এ কালের ঐ নারীটিকেও তেমন চিনি না, কখনো সে নিজে কিছু লেখে,
কখনো প্রিয় কবিতা বুকে তুলে নেয়, কখনো সে শব্দ-পংক্তির নেশায় কাঁদে।
দুই দেশ, মধ্যে কত নদী পর্বত-অরণ্য, সেসব পার হয়ে সেই অভিমান-হত কবিটি
ছায়া মূর্তি হয়ে এই রমণীটির কোলের খাতার মধ্যে শুয়ে, নিতে চায় আদর।
আমি তাকে দিতে চাই আয়ু, সে জীবন্ত হোক,
আনুক উত্তাপ
দু’জনের আঙুলে আঙুল…
সত্যিই দিতে চাই? নাকি ভাবের ঘরে চুরি? মাঝে মাঝে নিজের ব্যর্থতাবোধ এত
তীব্র, যেন একটা অলঙ্ঘনীয় পাহাড় এসে দাঁড়ায় সামনে, কবিতা মুচড়ে দিচ্ছে বুক,
তবু খুঁজে পাচ্ছি না ঠিক শব্দ, অসহ্য ছটফটানি, তখন মনে হয়, আমার বদলে
লিখুক না অন্য কেউ…
অথবা উঠুক জেগে সপ্তর্ষি ও পাতাল-যামিনী
এক সঙ্গে, বাতাসের বিভাজন, রণরঙ্গ, শব্দ শব্দ খেলা
হে কবি, হে কবিতা-মথিত নারী, আরও গাঢ়
দৃশ্যমান হও
দু’জনের আঙুলে আঙুল
আমাকে বাঁচাও, আমি ব্যর্থতার গ্লানি ধুতে তোমাদের কবিতায়
ড়ুব দিতে চাই!