মালঞ্চ ০৬
রমেন দরজার কাছ থেকে জিজ্ঞাসা করলে, “বউদি, ডেকেছ কি।” নীরজা রুদ্ধ গলা পরিষ্কার করে নিয়ে উত্তর দিলে, “এসো।”
ঘরের সব আলো নেবানো। জানলা খোলা, জ্যোৎস্না পড়েছে বিছানায়, পড়েছে নীরজার মুখে, আর শিয়রের কাছে আদিত্যের দেওয়া সেই ল্যাবার্নম গুচ্ছের উপর, বাকি সমস্ত অস্পষ্ট। বালিশে হেলান দিয়ে নীরজা অর্ধেক উঠে বসে আছে, চেয়ে আছে জানালার বাইরে। সেদিকে অর্কিডের ঘর পেরিয়ে দেখা যাচ্ছে সুপুরি গাছের সার। এইমাত্র হাওয়া জেগেছে, দুলে উঠছে পাতাগুলো, গন্ধ আসছে আমের বোলের। অনেক দূর থেকে শব্দ শোনা যায় মাদলের আর গানের, গোরুর গাড়ির গাড়োয়ানদের বস্তিতে হোলি জমেছে। মেঝের উপর পড়ে আছে থালায় বরফি আর কিছু আবির। দারোয়ান দিয়ে গেছে উপহার। রোগীর বিশ্রামভঙ্গের ভয়ে সমস্ত বাড়ি আজ নিস্তব্ধ। এক গাছ থেকে আর-এক গাছে “পিয়ুকাঁহা” পাখির চলেছে উত্তর প্রত্যুত্তর, কেউ হার মানতে চায় না। রমেন মোড়া টেনে এনে বসল বিছানার পাশে। পাছে কান্না ভেঙে পড়ে এই ভয়ে অনেকক্ষণ নীরজা কোনো কথা বললে না। তার ঠোঁট কাঁপতে লাগল, গলার কাছটাতে যেন বেদনার ঝড় পাক খেয়ে উঠছে। কিছু পরে সামলে নিলে, ল্যাবার্নম গুচ্ছের দুটো খসে-পড়া ফুল দলিত হয়ে গেল তার মুঠোর মধ্যে। তার পরে কোনো কথা না বলে একখানা চিঠি দিলে রমেনের হাতে। চিঠিখানা আদিত্যের লেখা। তাতে আছে-
“এতদিনের পরিচয়ের পরে আজ হঠাৎ দেখা গেল আমার নিষ্ঠায় সন্দেহ করা সম্ভবপর হল তোমার পক্ষে। এ নিয়ে যুক্তি তর্ক করতে লজ্জা বোধ করি। তোমার মনের বর্তমান অবস্থায় আমার সকল কথা সকল কাজই বিপরীত হবে তোমার অনুভবে। সেই অকারণ পীড়ন তোমার দূর্বল শরীরকে আঘাত করবে প্রতিমুহূর্তে। আমার পক্ষে দূরে থাকাই ভালো, যে পর্যন্ত না তোমার মন সুস্থ হয়। এও বুঝলুম, সরলাকে এখানকার কাজ থেকে বিদায় করে দিই, এই তোমার ইচ্ছা। হয়তো দিতে হবে। ভেবে দেখলুম তা ছাড়া অন্য পথ নেই। তবু বলে রাখি, আমার শিক্ষা দীক্ষা উন্নতি সমস্তই সরলার জেঠামশায়ের প্রসাদে; আমার জীবনে সার্থকতার পথ দেখিয়ে দিয়েছেন তিনিই। তাঁরই স্নেহের ধন সরলা সর্বস্বান্ত নিঃসহায়। আজ ওকে যদি ভাসিয়ে দিই তো অধর্ম হবে। তোমার প্রতি ভালোবাসার খাতিরেও পারব না।”
অনেক ভেবে স্থির করেছি, আমাদের ব্যবসায়ে নতুন বিভাগ একটা খুলব, ফুল সবজির বীজ তৈরির বিভাগ। মানিকতলায় বাড়িসুদ্ধ জমি পাওয়া যেতে পারবে। সেইখানেই সরলাকে বসিয়ে দেব কাজে। এই কাজ আরম্ভ করবার মতো নগদ টাকা হাতে নেই আমার। আমাদের এই বাগানবাড়ি বন্ধক রেখে টাকা তুলতে হবে। এ প্রস্তাবে রাগ কোরো না এই আমার একান্ত অনুরোধ। মনে রেখো, সরলার জেঠামশায় আমার এই বাগানের জন্যে আমাকে মূলধন বিনাসুদে ধার দিয়েছিলেন, শুনেচি তারও কিছু অংশ তাঁকে ধার করতে হয়েছিল। শুধু তাই নয়, কাজ শুরু করে দেবার মতো বীজ, কলমের গাছ, দুর্লভ ফুলগাছের চারা, অর্কিড, ঘাসকাটা কল ও অন্যান্য অনেক যন্ত্র দান করেছেন বিনামূল্যে। এতবড়ো সুযোগ যদি আমাকে না দিতেন, আজ ত্রিশটাকা বাসাভাড়ায় কেরানীগিরি করতে হত, তোমার সঙ্গে বিবাহও ঘটত না কপালে। তোমার সঙ্গে কথা হবার পর এই প্রশ্নই বার বার মনে আমার উঠেছে, আমিই ওকে আশ্রয় দিয়েছি, না আমাকেই আশ্রয় দিয়েছে সরলা? এই সহজ কথাটাই ভুলে ছিলেম, তুমিই আমাকে দিলে মনে করিয়ে। এখন তোমাকেও মনে রাখতে হবে। কখনো ভেবো না সরলা আমার গলগ্রহ। ওদের ঋণ শোধ করতে পারব না কোনো দিন, ওর দাবিরও অন্ত থাকবে না আমার ‘পরে। তোমার সঙ্গে কখনো যাতে ওর দেখা না হয় সে চেষ্টা রইল মনে। কিন্তু আমার সঙ্গে ওর সম্বন্ধ যে বিচ্ছিন্ন হবার নয় সে কথা আজ যেমন বুঝেছি এমন এর আগে কখনো বুঝি নি। সব কথা বলতে পারলুম না, আমার দুঃখ আজ কথার অতীত হয়ে গেছে। যদি অনুমানে বুঝতে পার তো পারলে, নইলে জীবনে এই প্রথম আমার বেদনা, যা রইল তোমার কাছে অব্যক্ত।”
রমেন চিঠিখানা পড়লে দুইবার। পড়ে চুপ করে রইল।
নীরজা ব্যাকুলস্বরে বললে, “কিছু একটা বলো ঠাকুরপো।”
রমেন তবু কিছু উত্তর দিলে না।
“ঠাকুরপো , তোমার মন জোরালো, তুমি কিছুতে বুঝবে না আমার বিপদ। বেশ জানি যতই আঁকুবাঁকু করছি ততই ডুবছি অগাধ জলে, সামলাতে পারছি নে।”
“বউদি, একটা কথা বলি শোনো। যতক্ষণ মনে করবে তোমার ধন কেউ কেড়ে নিয়ে যাচ্ছে ততক্ষণ বুকের পাঁজর জ্বলবে আগুনে। পাবে না শান্তি। কিন্তু স্থির হয়ে বসে বলো দেখি একবার–”দিলেম আমি। সকলের চেয়ে যা দুর্মূল্য তাই দিলেম তাঁকে যাঁকে সকলের চেয়ে ভালোবাসি”–সব ভার যাবে একমুহূর্তে নেমে। মন ভরে উঠবে আনন্দে। গুরুকে দরকার নেই; এখনি বলো–”দিলেম, দিলেম, কিছুই হাতে রাখলেম না, আমার সব কিছু দিলেম, নির্মুক্ত হয়ে নির্মল হয়ে যাবার জন্যে প্রস্তুত হলেম, কোনো দুঃখের গ্রনিথ জড়িয়ে রেখে গেলেম না সংসারে”।”
“আহা, বলো, বলো ঠাকুরপো, বার বার করে শোনাও আমাকে। তাঁকে এ পর্যন্ত যা-কিছু দিতে পেরেছি তাতেই পেয়েছি আনন্দ, আজ যা দিতে পারছি নে, তাতেই এত করে মারছে। দেব, দেব, দেব সব দেব আমার-আর দেরি নয়, এখনি। তুমি তাঁকে ডেকে নিয়ে এসো।”
“আজ নয় বউদি, কিছুদিন ধরে মনটাকে বেঁধে নাও, সহজ হোক তোমার সংকল্প।”
“না, না, আর সইতে পারছি নে। যখন থেকে বলে গেছেন এ বাড়ি ছেড়ে জাপানি ঘরে গিয়ে থাকবেন তখন থেকে এ শয্যা আমার কাছে চিতাশয্যা হয়ে উঠেছে। যদি ফিরে না আসেন এ রাত্তির কাটবে না, বুক ফেটে মরে যাব। অমনি ডেকে এনো সরলাকে, আমি শেল উপড়ে ফেলব বুকের থেকে, ভয় পাব না–এই তোমাকে বলছি নিশ্চয় করে।”
“সময় হয় নি বউদি, আজ থাক্।”
“সময় যায় পাছে এই ভয়। এক্ষনি ডেকে আনো।” পরমহংসদেবের ছবির দিকে তাকিয়ে দু হাত জোড় করে বললে, “বল দাও ঠাকুর, বল দাও, মুক্তি দাও মতিহীন অধম নারীকে। আমার দুঃখ আমার ভগবানকে ঠেকিয়ে রেখেছে, পূজা অর্চনা সব গেল আমার। ঠাকরপো, একটা কথা বলি আপত্তি কোরো না।
“কী বলো।”
“একবার আমাকে ঠাকুরঘরে যেতে দাও দশ মিনিটের জন্যে, তা হলে আমি বল পাব, কোনো ভয় থাকবে না।”
“আচ্ছা, যাও, আপত্তি করব না।”
“আয়া।”
“কী খোঁখী।”
“ঠাকুরঘরে নিয়ে চল্ আমাকে।”
“সে কী কথা। ডাক্তারবাবু–”
“ডাক্তারবাবু যমকে ঠেকাতে পারবে না আর আমার ঠাকুরকে ঠেকাবে?”
“আয়া, তুমি ওঁকে নিয়ে যাও, ভয় নেই, ভালোই হবে।”
আয়াকে অবলম্বন করে নীরজা যখন চলে গেল এমন সময়ে আদিত্য ঘরে এল।
আদিত্য জিজ্ঞাসা করলে, “ এ কী, নীরু ঘরে নেই কেন।”
“এখনি আসবেন, তিনি ঠাকুরঘরে গেছেন।”
“ঠাকুরঘরে! ঘর তো কাছে নয়। ডাক্তারের নিষেধ আছে যে।”
“শুনো না দাদা। ডাক্তারের ওষুধের চেয়ে কাজে লাগবে। একবার কেবল ফুলের অঞ্জলি দিয়ে প্রণাম করেই চলে আসবেন।”
নীরজাকে চিঠি লিখে যখন পাঠিয়ে দিয়েছিল তখন আদিত্য স্পষ্ট জানত না যে, অদৃষ্ট তার জীবনের পটে প্রথম যে-লিপিখানি অদৃশ্য কালিতে লিখে রেখেছে, বাইরের তাপ লেগে সেটা হঠাৎ এতখানি উঠবে উজ্জ্বল হয়ে। প্রথমে ও সরলাকে বলতে এসেছিল–আর উপায় নেই, ছাড়াছাড়ি করতে হবে। সেই কথা বলবার বেলাতেই ওর মুখ দিয়ে বেরল উলটো কথা। তার পরে জ্যোৎস্নারাত্রে ঘাটে বসে বারবার করে বলেছে-জেীবনের সত্যকে আবিষ্কার করেছে বিলম্বে, তাই বলেই তাকে অস্বীকার করতে পারে না। ওর তো অপরাধ নেই, লজ্জা করবার নেই কিছু। অন্যায় তবেই হবে, যদি সত্যকে গোপন করতে যায়। করবে না গোপন, নিশ্চয় স্থির; ফলাফল যা হয় তা হোক। এ কথা আদিত্য বেশ বুঝেছে যে, যদি তার জীবনের কেন্দ্র থেকে কর্মের ক্ষেত্র থেকে সরলাকে আজ সরিয়ে দেয়, তবে সেই একাকিতায়, সেই নীরসতায় ওর সমস্ত নষ্ট হয়ে যাবে, ওর কাজ পর্যন্ত যাবে বন্ধ হয়ে।
“আজ সেই কথাটাই যদি গোপন করি তা হলেই মিথ্যাচরণের অপরাধ হবে। আমি মুখ তুলেই বলব।”
“গোপনই বা করতে যাবে কী জন্যে, আর সমারোহ করে প্রকাশই বা করবে কেন। বউদিদি যা জানবার তা তিনি আপনিই জেনেছেন। আর ক’টা দিন পরেই তো এই পরম দুঃখের জটা আপনিই এলিয়ে যাবে। তুমি তা নিয়ে মিথ্যে টানাটানি কোরো না। বউদি যা বলতে চান শোনো, তার উত্তরে তোমারও যা বলা উচিত আপনিই সহজ হয়ে যাবে।”
নীরজাকে ঘরে আসতে দেখে রমেন বেরিয়ে গেল।
নীরজা ঘরে ঢুকেই আদিত্যকে দেখেই মেজের উপরে লুটিয়ে পড়ে পায়ে মাথা রেখে অশ্রুগদগদ কণ্ঠে বললে, “মাপ করো, মাপ করো আমাকে, অপরাধ করেছি। এতদিন পরে ত্যাগ কোরো না আমাকে, দূরে ফেলো না আমাকে।” আদিত্য দুই হাতে তাকে তুলে ধরে বুকে করে নিয়ে আস্তে আস্তে বিছানায় শুইয়ে দিলে। বললে, “নীরু, তোমার ব্যথা কি আমি বুঝি নে।” নীরজার কান্না থামতে চায় না। আদিত্য আস্তে আস্তে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগল। নীরজা আদিত্যের হাত টেনে নিয়ে বুকে চেপে ধরলে, বললে, “সত্যি বলো আমাকে মাপ করেছ। তুমি প্রসন্ন না হলে মরার পরেও আমার সুখ থাকবে না।”
“তুমি তো জান নীরু, মাঝে মাঝে মনান্তর হয়েছে আমাদের মধ্যে, কিন্তু মনের মিল কি ভেঙেছে তা নিয়ে।”
“এর আগে তো কোনোদিন বাড়ি ছেড়ে চলে যাও নি তুমি। এবারে গেলে কেন। এত নিষ্ঠুর তোমাকে করেছে কিসে।”
“অন্যায় করেছি নীরু, মাপ করতে হবে।”
“কী বল তার ঠিক নেই। তোমার কাছ থেকেই আমার সব শান্তি, সব পুরস্কার। অভিমানে তোমার বিচার করতে গিয়েই তো আমার এমন দশা ঘটেছিল–ঠাকুরপোকে বলেছিলুম, সরলাকে ডেকে আনতে, এখনো আনলেন না কেন।”
সরলাকে ডেকে আনবার কথায় ধক্ করে ঘা লাগল আদিত্যের মনে। সমস্যাকে অন্তত আজকের মতো কোনোক্রমে পাশে সরিয়ে রাখতে পারলে সে নিশ্চিন্ত হয়। বললে, “রাত হয়েছে, এখন থাক্।” এমন সময় নীরজা বলে উঠল, “ঐ শোনো, আমার মনে হচ্ছে ওরা অপেক্ষা করছে দরজার বাইরে। ঠাকুরপো, ঘরে এসো তোমরা।”
সরলাকে নিয়ে রমেন ঘরে ঢুকল। নীরজা বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়াল। সরলা প্রণাম করলে নীরজার পা ছুঁয়ে। নীরজা বললে, “এসো বোন, আমার কাছে এসো।”
“সরলার হাত ধরে বিছানায় বসাল। বালিশের নীচে থেকে গয়নার কেস টেনে নিয়ে একটি মুক্তোর মালা বের করে সরলাকে পরিয়ে দিলে। বললে, “একদিন ইচ্ছে করেছিলুম, যখন চিতায় আমার দাহ হবে এই মালাটি যেন আমার গলায় থাকে। কিন্তু তার চেয়ে এই ভালো। আমার হয়ে মালা তুমিই গলায় প’রে থেকো শেষদিন পর্যন্ত। বিশেষ বিশেষ দিনে এ মালা কতবার পরেছি সে তোমার দাদা জানেন। তোমার গলায় থাকলে সেই দিনগুলি ওঁর মনে পড়বে।”
“অযোগ্য আমি দিদি, অযোগ্য, কেন আমাকে লজ্জা দিচ্ছ।”
নীরজা মনে করেছিল, আজ তার সর্বদানযঞ্চের এও একটা অঙ্গ। কিন্তু তার অন্তরতর মনের জ্বালা যে এই দানের মধ্যে দীপ্ত হয়ে প্রকাশ পেল সে কথা সে নিজেও স্পষ্ট বুঝতে পারে নি। ব্যাপারটা সরলাকে যে কতখানি বাজল তা অনুভব করলে আদিত্য। বললে, “ঐ মালাটা আমাকে দাও-না সরলা। ওর মূল্য আমার কাছে যতখানি, এমন আর কারো কাছে নয়। ও আমি আর কাউকে দিতে পারব না।”
নীরজা বললে, “আমার কপাল। এত করেও বোঝাতে পারলুম না বুঝি। সরলা, শুনেছিলেম এই বাগান থেকে তোমার চলে যাবার কথা হয়েছিল। সে আমি কোনোমতেই ঘটতে দেব না। তোমাকে আমি আমার সংসারের যা কিছু সমস্তর সঙ্গে রাখব বেঁধে, এই হারটি তারই চিহ্ন। এই আমার বাঁধন তোমার হাতে দিয়েছিলুম যাতে নিশ্চিন্ত হয়ে মরতে পারি।”
এই বলে সরলা দ্রুতপদে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। আদিত্য নিজেকে ধরে রাখতে পারলে না, সেও গেল চলে।”
“ঠাকুরপো, এ কী হল ঠাকরপো। বলো ঠাকুরপো, একটা কথা কও।”
“এইজন্যেই বলেছিলেম আজ রাত্রে ডেকো না।”
“কেন, মন খুলে আমি তো সবই দিয়ে দিয়েছি। ও কি তাও বুঝল না।”
“বুঝেছে বৈকি। বুঝেছে যে,মন তোমার খোলে নি। সুর বাজল না।”
“কিছুতে বিশুদ্ধ হল না আমার মন! এত মার খেয়েও! কে বিশুদ্ধ করে দেবে। ওগো সন্ন্যাসী, আমাকে বাঁচাও না। ঠাকুরপো, কে আমার আছে, কার কাছে যাব আমি।”
“আমি আছি বউদি। তোমার দায় আমি নেব। তুমি এখন ঘুমোও।”
“ঘুমোব কেমন করে। এ বাড়ি থেকে আবার যদি উনি চলে যান তা হলে মরণ নইলে আমার ঘুম হবে না।”
“চলে উনি যেতে পারবেন না; সে ওঁর ইচ্ছায় নেই, শক্তিতে নেই। এই নাও ঘুমের ওষুধ, তোমাকে ঘুম পাড়িয়ে তবে আমি যাব।”
“যাও ঠাকুরপো, তুমি যাও, ওরা দুজনে কোথায় গেল দেখে এসো, নইলে আমি নিজেই যাব, তাতে আমার শরীর ভাঙে ভাঙুক।”
“আচ্ছা, আচ্ছা, আমি যাচ্ছি।”