Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » কবির লড়াই || Kazi Nazrul Islam

কবির লড়াই || Kazi Nazrul Islam

(পল্লিগ্রামে এক রকম লড়াই আছে,তাকে বলে কবির লড়াই। এতে একজন দেয় চাপান আর একজন দেয় কাটান। আমাদের এই লড়াই-এর প্রথম কবিয়াল যে লোকটিকে আসর থেকে করেছিল, সে ছিল কয়ালি অর্থাৎ সে ধান মাপত, সে ভুল করে কবিয়ালের খাতার বদলে ধানের হিসাবের খাতা এনে বলে যাচ্ছে, আর কবিয়ালও তাই গেয়ে যাচ্ছে। প্রথমে ঢুলির বাজনা হচ্ছে।)

কবি – বড় সংকটে পড়েছি মা গো, দাও মা পদতরি
তরে যাই
প্র– ১৩২৫ শে পৌষ গুজরতে খোদ খেদু মোড়ল,
সাড়ে সতেরো আড়ি ধান –
কবি – ১৩২৫ শে পৌষ গুজরতে খোদ খেদু মোড়ল
সাড়ে সতেরো আড়ি ধান –
ওরে নারে নারে ওরে নারে নারে
কয়ালি কি কওয়ালি, ধানের খাতার হিসাব বলে
কুল মান মোর সব খোয়ালি, কয়ালি কি কওয়ালি।
ষাঁড়ের মাথার ঢুস্ মারতে এসেছে ওই ভেড়া,
পাহাড়ে মাথা ঠুকতে এল টেকো মাথা নেড়া।
(লাগাও চাঁটি টাক ভেঙে যাক)
পেরথম ভাগ পড়েননি কো, এলেন কবি-গান গাইতে,
নামতে নারে ডোবায়, এলো সমুদ্দুরে নাইতে।
(নাকানি চোপানি নাকানি চোপানি)

চাপান দিয়ে বাবুরা সব শুন অতঃপর
এই চাপানেই কাঁপন দিয়ে আসবে বাছার জ্বর।
(ধর ধর লেপ ঠেসে ধর, ধর ধর লেপ ঠেসে ধর মালোয়ারি জ্বর)
বলি ভূতের বাপের নাম কী, আর ডিম দেয় কোন ঘোড়ায়,
দশটা মুণ্ড নিয়ে রাবণ কেমন করে ঘুমায়?
শিবের মাথায় গঙ্গা, হয় না কেন সর্দি,
বলতে পারলে বলব কবি, নয় একদম রদ্দি।
(মুড়ি কুড় কুড় কাঁকুড় কাঁকুড়
মুড়ি কুড় কুড় কাঁকুড় কাঁকুড়
ঝিনেদা চলে যা ঝাঁ।
ঝিনেদা চলে যা ঝাঁ।
ঝিনেদা চলে যা ঝাঁ।

(যার সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছিল, তার নাম গুমানি)
কবি – বলি গুমানি নাম নিয়ে তুই গুমান করিস এত,
ওই নামের প্রথম অক্ষর কী, জানে সকলে তো।
(হায় হায় মরি মরি গুমানি করি রে)
গুমানি তোর মানি গেলে রইবে বাকি কি,
পায়ে মাড়ালে নাইতে যে হয়; বলব না নাম ছিঃ
(ধর ধর ল্যাজ ঠেসে ধর–
ধর ধর ল্যাজ ঠেসে ধর–
নাক টেনে ধর ল্যাজ ঠেসে ধর;
মিনসে জবরজং মিনসে জবরজং
মিনসে কেমন সং॥)
(গুমানি এসে চাপানের কাটান দিচ্ছে)
নেই কো ডানা উড়ে এলি সাবাস, জীবন উড়ে।
আমার ভয়ে জীবন এবার যায় বুঝি তোর উড়ে॥
(উড়ে উড়ে যাক, উড়ে উড়ে যাক,
জীবন উড়ে উড়ে যাক,
উড়ে কটকে পুরীতে উড়ে যাক
উড়ে যাক উড়ে যাক উড়ে যাক॥)
বুড়ো বলদ লড়তে আসে এঁড়ে দামড়ার সাথে,
আর ব্যাং বলে আজ চিত করব হাতিকে এক লাথে॥
ভূতের বাপের নাম? আবাগে, আর তাইতে মহাশয়
আবাগের বেটা ভূত, গাল দিয়ে লোকে কয়।
ভেবেছিলি ঘোড়ার ডিমের প্রশ্নে করিব ঠান্ডা,
ঘোড়ার মধ্যে পক্ষীরাজ ঘোড়াতে দেয় আন্ডা॥

(হলি ঠান্ডা, গণ্ডা গণ্ডা ঘোড়ার আন্ডা দেখে যা
দেখে যা দেখে যা দেখে যা
দেখে যা দেখে যা দেখে যা॥)
বেলের আঠায় শিবের জটায় ওয়াটার প্রুফ হয়ে
ওরে, বেলেস্তারা হয়ে –
সর্দি হয় না শিব ঠাকুরের গঙ্গা মাথায় লয়ে
শিবের গঙ্গা মাথায় লয়ে।
(আর) রাবণ রাজার দশ মুণ্ডের নয়টা ছিল শোলার,
ভয় দেখাতে এই মতলব ওই রাক্ষসেরই পোলার॥
শোবার সময় শোলার মুখোস-মাথা রাখত খুলে
এবার আমি যদি চাপান দিই তুই ছুটবি রে লেজ তুলে
(ছোট ছোট লেজ তুলে ছোট কাছা খুলে ছোট
বনে ও বাদাড়ে, পগারে পাহাড়ে ছুটে যা
ছুটে যা, ছুটে যা, ছুটে যা॥)
মোর গুমানি নামের প্রথম আখর নিয়ে –
বাহাদুরি করলি তো খুব একবার আমি শোনাই ইয়ে।
তোর গুরুর গোড়ায় কী, তোর গুরুর গোড়ায় কী,
তোর সাগুর শেষে কী? আর মাগুর মাছের মাঝে কী খাস?
বেগুনের মাঝখানে খাস, তারে কি কয় ছিঃ –
ওরে ছিঃ, গুড়ের প্রথম অক্ষর কি, ছিঃ, ওরে ছিঃ –
তোর গুরুর গোড়ায় কী, তোর গুরুর গোড়ায় কী?
(খাস খাস পাতি হাঁস, খাস খাস)
যাবা বাপ দিল্লি যাবা, দিল্লিকা ওই লাড্ডু খাবা
কুমড়ো ছাঁচি কুমড়ো, কুমড়ো চালকুমড়ো
বজ্রযোগিনী যাবা না ভগিনী
যাবিনে যাবিনে যা, যাবিনে যাবিনে যা॥)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress