বৈষ্ণো দেবী দর্শন
এমার্জেন্সি সার্ভিস, ছুটি নেই, পাঁচদিনের লীভ নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম।
বৈষ্ণো দেবীর মন্দিরে যাওয়া হবে।
শুক্রবারের বিকেলের প্লেনে চেপে জম্মু ভায়া দিল্লী নেমেই কাটরার উদ্দেশ্যে রওনা।
মোহন কর্তার পুরানো অফিসের কলিগ, পোষ্টেড জম্মু।
এক্স আর্মি অফিসর, তার চেষ্টাতে অনুমতি পত্র পেয়ে গেলাম। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর।
অটো করে মুখে চলে গেলাম। ঘোড়া, পালকি পেলাম না। দুটি ফ্যামিলি ছিলাম। অসম্ভব ভীড়।
উঠতে আরম্ভ করলাম। মোহন দেখলো এভাবে চললে পৌঁছাতে দেরী হবে। ফিরতি ঘোড়া গুলোকে মাঝপথে ধরে আমাদের রওনা করিয়ে দিল, গঙ্গা ভবন। একটা ট্যানেলের কাছে এসে বলে মাইজি আমরা ওদিক যেতে পারবো না। চেকিং পয়েন্ট, ওদের অসুবিধে। আমরাও চিৎকার জুড়ে দিলাম। না অন্ধকারে টানেল দিয়ে যেতে পারবো না। মুখের কাছে চলো। চেকিং এর খানিকটা আগে নামিয়ে দিল।
মোহন পৌঁছে ঘর সব ঠিক করে রেখেছে। গরম জলের বালতিতে পা ডুবিয়ে বসলাম, গরম চা খেয়ে দূরে মন্দিরের দিকে দেখার চেষ্টা করলাম। অপূর্ব, সংগীত ভেসে আসছে, ভোর চারটে বাজে, কর্তারা সাড়ে ছটায় এসে পৌঁছেছে। গরম চা খেয়ে স্নান করে আধা ঘন্টা হেঁটে উঠলাম। ভি আই পি পাশ ছিল, মূল মন্দিরে উঠে স্ক্যান মেশিনে সবার পেন চিরুনি লিপস্টিক জমা হলো। আর গেট বন্ধ হয়ে গেল।
অপূর্ব দর্শন, মন ভরে গেল, কিন্ত নেমে দেখি পুরো পাহাড় লোকে লোকারণ্য। পেন বোমা পেয়েছে বলে সীল করলো। আর কেউ উঠতে পারবে না। আধা ঘন্টা হাঁটতে হবে। নাস্তা সারলাম আলুর পরোটা দিয়ে। আধা ঘন্টা হাঁটার পর ঠিক হলো হেলিকপ্টার ফিরবো, সেই মত আমরা পাঁচ জন ফিরলাম। সেখানে যে গাড়ি করে এসেছিলাম সেই গাড়ি চলে এলো।
বৈষ্ণো দেবী দেখতে সেই অর্থে খুব হাঁটতে হয় নি। কিন্তু অনভ্যাসের জন্য পা ফুলে ঢোল। গাড়ি করে জম্মুর পথে, লাইন দিয়ে লোক দাঁড়িয়ে আছে। ড্রাইভার দাদা বলছেন রেকর্ড ভীড়, আগে কখনো এরকম দেখিনি। যদিও তখন এন্ট্রি সীল করে দিয়েছেন প্রশাসক।
হোটেলে ঢুকে সকলে ঘুমিয়ে পড়লাম যখন চোখ মেললাম তখন হোটেলের থেকে নক করা হলে, রাতের খাবার এর পরে অর্ডার নেবে না। পরের দিন, যতটা পারলাম জম্মু দেখার চেষ্টা করলাম। কিন্তু পনের অগষ্ট থাকার জন্য সব জায়গায় নো এন্ট্রি।
মিলিটারি ও সি আর পি প্রতি রাস্তা মুড়ে রেখেছে। দোকান পাট বন্ধ। যতটুকু যেতে পারলাম ততটুকু ঘুরে বেড়ালাম। বাজারের দোকান সব বন্ধ, এক আধটা ঝাঁপ ফেলা, পিছনের গেট দিয়ে খদ্দেরদের ভিতরে প্রবেশ মিলছে কেনা কাটার জন্য।
পরের দিন একটু শিথীলতা ছিল। তাই সবার আগে কিছু গার্ডেন ও মন্দির দর্শন করেই সোজা এয়ার পোর্ট। মনের দুঃখ মিটলো কাঠের ঈগল ওখানের শপ থেকে কেনা।
আর অপূর্ব কারুকার্য্য।