Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » একেনবাবু ও কেয়াদিদি || Sujan Dasgupta

একেনবাবু ও কেয়াদিদি || Sujan Dasgupta

প্রায় দু’সপ্তাহ হল আমি অ্যাপার্টমেন্টে একা। প্রমথ গেস্ট ফ্যাকাল্টি হয়ে পাঁচ মাসের জন্যে বস্টন ইউনিভার্সিটিতে গেছে। একেনবাবু সাধারণত বাইরে যান না। তিনিও হোমল্যান্ড সিকিউরিটির একটা মিটিং অ্যাটেন্ড করতে ওয়াশিংটন ডিসি তে গেছেন। প্রমথর সঙ্গে মাঝেমধ্যে কথা হয়। একেনবাবু অদৃশ্য হলে যোগাযোগ করা কঠিন। গত বছর প্রায় জোর করে একেনবাবুকে দিয়ে মোবাইল কেনানো হয়েছে। কিন্তু এদেশে মোবাইলে ইনকামিং কল এলেও চার্জ হয় –এই সত্যটা জানামাত্র একেনবাবু ফোন ‘অফ’ করে রাখছেন। নিজে যদি ফোন করেন, তাহলেই কথাবার্তা হতে পারে। সেটা এবার এখনও করেননি। তবে দু’- তারিখে ফেরার কথা, অর্থাৎ এই মঙ্গলবার। একা একা বেশ খারাপই লাগছে। প্রমথর তির্যক মন্তব্য আর একেনবাবুর উলটোপালটা প্রশ্ন আর বকবকানি –দুটোই মিস করছি। খাওয়াদাওয়া আর নিউজ ছাড়া বেশির ভাগ সময় কাটছে কম্পিউটারের সামনে।

রবিবার সকালে ঘরে বসে ই-মেল দেখছি। বেরোতে ইচ্ছে করছে না। কিন্তু আজ বাজার না করলেই নয়। চা, চিনি, রুটি –কিচ্ছু বাড়িতে নেই। বাজার করতে অবশ্য বেশি দূর যেতে হয় না। নীচে নেমে কয়েক পা হাঁটলেই পাড়ার রকমারি দোকান ‘হ্যাপি শপ’। তার গ্রোসারি সেকশানে মোটামুটি সবকিছুই পাওয়া যায়। দামটা একটু বেশি। মালিক ডেভ ব্রাউন আমার প্রায় বন্ধু হয়ে গেছে। আমার থেকে বয়সে অবশ্য অনেক বড়, কিন্তু দেখা হলেই খুব সম্মান দিয়ে ‘হ্যালো, প্রফেসর ডে’ বলে সম্বোধন করে। যেদিন কলেজে যাবার তাড়া থাকে ওখান থেকেই এক কাপ কফি আর চকলেট ক্রোঁসা তুলে নিয়ে কলেজে চলে যাই। ইদানীং অবশ্য প্রতিদিনই সেটা করছি, প্রমথ আর একেনবাবু না থাকায় শুধু নিজের জন্যে ব্রেকফাস্ট বানাতে ইচ্ছে করে না।

হ্যাপি শপে গিয়ে দেখি আজ দোকান ফাঁকা। ডেভ গল্প করতে ভালোবাসে আর খরিদ্দার না থাকলে তো কথাই নেই। বেশ খানিকক্ষণ একথা সেকথার পর জিজ্ঞেস

করল, “বাই দ্য ওয়ে, তুমি এজে ডাটকে চেনো?”

“না।”

“হি ইজ ফ্রম ইওর হোমটাউন!”

“কোলকাতা?”

“ইয়েস। ওর ওয়াইফের সঙ্গে পরিচয় হল। তোমার পাশের বাড়িতে কয়েকদিন হল এসেছে। আমি তোমাদের তিনজনের কথা বলেছি। এজে এখন কোলকাতায়, ক’দিন বাদেই ফিরবে। ইউ মাস্ট মিট।”

ডেভ এরকম মাঝে মাঝেই করে। কোনো ইন্ডিয়ান পাড়ায় এলেই আমার আর প্রমথর অজস্র প্রশংসা করে আর একেনবাবুর স্থান যে হারকিউল (বা এরকুল) পয়রোর পরেই সেটা বোঝায়। ভারি এমব্যারাসিং। এজে নিশ্চয় অজয়। ডাট যে দত্ত সেটা তো বুঝতেই পারছি। কিন্তু কোলকাতার লোক হলেই কি আত্মীয়তা করতে হবে। এক্ষেত্রে সহজ উত্তর হল, ‘হোয়াই নট’ বলা। তাই বললাম।

চা-চিনি-রুটি কিনতে গিয়ে অনেক কিছুই কিনে ফেললাম। বাজার সেরে যখন টাকা দিয়ে বেরচ্ছি, ডেভ এসে বলল, “বাই দ্য ওয়ে, এজের স্ত্রী কিন্তু ইন্ডিয়ান নয়।” তারপর একটু মুচকি হেসে বলল, “নাদিয়া ইজ ফ্রম রাশিয়া –এ রাশিয়ান ব্রাইড। খুব সুইট মেয়ে।”

এই মুচকি হাসার কারণ, রাশিয়ান ব্রাইডের অজস্র বিজ্ঞাপন পত্রপত্রিকায় চোখে পড়ে। ইন্টারনেটেও রাশিয়ান ব্রাইড নিয়ে বহু সাইট রয়েছে। গত রবিবারই নিউ ইয়র্ক টাইমসে বড় করে একটা লেখা বেরিয়েছিল এই নিয়ে। আসলে ডিমান্ড আর সাপ্লাইয়ের ব্যাপার। নিঃসঙ্গ আমেরিকান পুরুষদের সংখ্যা কম নয়। রাশিয়ান সুন্দরী পাওয়ার মোহে অনেকেই বিজ্ঞাপনে সাড়া দেয়। যোগাযোগ শুরু হয় ই-মেল বা টেক্সট পাঠিয়ে। এরপর ফোনে কথা, দেখাসাক্ষাৎ…কপালে থাকলে প্রেম, বিয়ে সবকিছুই ঘটে যেতে পারে। সতর্কবার্তাও ছিল লেখাটাতে। বিশেষ করে যখন অযাচিত ভাবে পুরুষদের কাছে ই-মেল আসে মেয়েদের তরফ থেকে। কলগার্ল ও প্রস্টিট্যুশন র‍্যাকেট এই ভাবেই চলে।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11
Pages ( 1 of 11 ): 1 23 ... 11পরবর্তী »

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress