Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » দুই মা || Desha Mishra

দুই মা || Desha Mishra

রিয়া ঘুম থেকে ওঠে সাতটায়,তারপর ওর টিউশন থাকে।রিয়ার এবার ক্লাস এইট। ঘুম থেকে উঠেই চোখ না খুলেই ও মিমি মিমি বলে ডাকতে থাকে।মিমি ওর চেয়ে বয়সে অনেক বড় কিন্তু বাড়ির সবার কাছে এরকম ছোট থেকে শুনতে শুনতে ও এভাবেই মিমি কে নাম ধরে ডাকে।
এর মানে ওর জন‍্য সকালের নাস্তা তৈরী করো জলদি,তারপর স্কুলের টিফিনও।রিয়ার মা রাজশ্রী স্কুল টিচার বাড়ি থেকে তার স্কুল একটু দূরে তাই সে সকালে অল্প কিছু খেয়েই বেড়িয়ে যায়। সারাদিনের রান্না, রিয়া কি খাবে কি টিফিন নিয়ে যাবে এসব ভাবনা সব মিমির।রাজশ্রী তাই একরকম নিশ্চিন্ত থাকে।
মিমি এ বাড়ির কাজের মেয়ে,কাকলির মেয়ে তাহলেও ওকে কেউ ওভাবে কেউ দেখেনা।ও এই বাড়ির একজন।যখন রাজশ্রী নতুন বিয়ে হয়ে আসে তখন মিমি অনেক ছোট।ওর মায়ের সাথে রোজ আসতো।অসুস্থ হয়ে কাকলি মারা যাওয়ার পর ওর মাতাল স্বামী রাজশ্রীর কাছে মিমিকে রেখে অন‍্য কোথাও চলে যায়।রাজশ্রীর শাশুড়ি মা তখন বলেছিলেন -‘নে মা তোর হাতের পুতুল হল যেমন খুশী সাজিয়ে রাখিস’।সেই থেকেই মিমি এ বাড়িতেই থাকে।
রিয়া মিমিকে ধমকিয়ে কথা বলে।প্রচুর অন‍্যায় আবদার করে।মিমি ওর সব জোর জুলুম ধমক মুখ বুঁজে সহ‍্য করে।একটুও নালিশ জানায় না কখনও।রজশ্রী কিন্তু রিয়ার এই ব‍্যবহারে খুব দুঃখিত,রিয়া আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে বড়দের প্রতি আগামীতে ওর আচরণ কেমন হবে এটা তাকে খুব ভাবাই।কিন্তু এখনকার ছেলে মেয়েদের বেশি বকাবকিরও উপায় নেই।রাজশ্রী আড়ালে মিমিকে বলে ওর কথায় রাগ করিস না লক্ষী টি।মিমি ওর গোলাপ পাপড়ির মতো চোখ দুটো দিয়ে হাসে।

রিয়া ভীষন জোরে চিৎকার করে মিমি কে ডাকে-‘কেন তুমি আমার ঘর পরিস্কার করোনি?কেনো গোছাওনি সব?
সারাদিন কি কাজ করো?কোনো কাজই নেই তোমার খাও আর ঘুমাও।
কাল সকালেই সব যেন এ ওয়ান হয়ে যায়,জানোনা কাল আমার সব বন্ধুরা আসবে’ এই বলে সে ইচ্ছে করে কয়েকটা জামা আর বই বিছিনায় ছিটিয়ে রেগে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল।
কাল রিয়ার জন্মদিন।প্রতিবার রাজশ্রী রিয়ার পছন্দ মতো রান্না করে আর পায়েশ খাইয়ে বার্থডে উইশ করে।এবার রিয়া ওর কিছু বন্ধুদের ইনভাইট করেছে।আর রাজশ্রী ও মলয় (রিয়ার বাবা)তাদের কিছু বন্ধুদের কে বলেছে।ছোট্ট অনুষ্ঠান।
রাজশ্রী আর মিমি সব রান্না করেছে গেস্টদের।

কেক কাটল রিয়া,প্রথম টুকরোটা মিমির মুখের সামনে নিয়ে যেতেই সবাই এ ওর দিকে তাকাতে লাগল।রিয়া তাড়াতাড়ি মিমির মুখে খাইয়ে তারপর মা আর বাবা কে খাওয়ালো।রিয়ার বেস্ট ফ্রেন্ড নিকিতা ওকে চিমটি দিয়ে আস্তে করে বলল-‘ কি রে আগে মা কে দিবি তো’।
রিয়া বলল -মাতৃত্বের কোনো রূপ হয় না রে,ওই তো আসল মা,সারাদিন আমার জন‍্য ভাবে,আমার সব মুশকিল আসান করে।সবদিক দিয়ে আগলে রাখে।
রিয়ার কথা শুনে মিমি কাঁদতে লাগল,রাজশ্রী আর মলয়ের চোখে আনন্দের ধারা।সবাই রিয়াকে আশীর্বাদ করল।
রিয়া বলল আজ তোমাকে একটা দায়িত্ব দেব তার কাজ নিয়ম মতো করে আমাকে দেখাবে,কয়েকটা বই রিয়া মিমির হাতে তুলে দিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress