শুধু হাসি মুখখানা মনে পড়ে তাঁর,
জীবন যুদ্ধে চায়নি মানতে হার।
আঘাত লেগেছিল কোমরে বাইক দুর্ঘটনায়,
সেই হতে মাঝে মধ্যেই কষ্ট পেতেন যন্ত্রণায়।
চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ চলছিল যথাযথ,
সাময়িক উপশম হলেও কষ্ট পেতেন সতত।
একদিন অসহ্য যন্ত্রণায় যখন হলেন কাতর,
সন্দেহাতীত হয়ে ডাক্তার বিশেষ কিছু টেষ্ট দিলেন সত্বর।
টেষ্ট রিপোর্টে জানা গেল আক্রান্ত মারণরোগ ক্যান্সারে,
অঙ্গময় ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাধি, শেষ পর্যায় একেবারে।
শুরু হলো রোগের চিকিৎসা, সংশয়ে ভারাক্রান্ত মন,
নিমেষে যেন নেমে এলো জীবন অধ্যায়ের পতন।
মেঘে ঢাকা তারার ন্যায় জীবন আনন্দ যেন হ’লো ঘন মেঘে অবলুপ্ত,
অস্তরবির রশ্মির ন্যায় তাঁর জীবনরেখাও যেন অন্ধকারগ্ৰস্ত।
হতাশা গ্ৰাস করে ভিতরে ভিতরে ভেঙ্গে মন খান খান,
বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারেনা তাঁর ব্যাথার পরিমাণ।
পদে পদে যেন অন্ধকার তাকে করে গ্ৰাস,
ঘন ঘন নিশ্বাসিত মুখে তবুও হাসির প্রকাশ।
শরীর পীড়ায় ব্যাথিত অন্তর, রোগমসী ঢালা অঙ্গ,
কন্টককান্তারে যেন তার মহাসঙ্কটযাত্রা নিঃসঙ্গ।
জীবন দুঃখের ডালি ভ’রে নিয়ে প্রস্তুতি চলছে বিদায়ের,
দেহের ভিতর ধীরে ধীরে ক্ষয় হয় সমস্ত ইন্দ্রিয়ের।
ধিক্ ধিক্ করে প্রদীপের ক্ষীণ আলোর ন্যায় কাঁপছে দেহতন্ত্রী তাঁর,
অমানিশার অন্ধকার ঘনায়ে এলো নিয়ে দুঃস্বপ্নের ডালি ভরা ভার।
অশ্রুহারা শুষ্ককন্ঠ, ভীষণ যাতনার সে জীবনযাপন!
মারণপীড়ায় আক্রান্ত মনোব্যাথার হয় না নিরসন!
এ যেন মাঝিহীন নৌকায় অজানার পথে যাত্রা তাঁর,
প্রতিটি নিমেষ অব্যক্ত যন্ত্রণার, জীবন অনিশ্চয়তার।
গোপন বিচিত্র বেদনার বিভীষিকায় কাটে বিনিদ্র রাত,
ক্রমে একদিন ঘটে গেল জীবনের বিষম বিপদপাত।
সাঙ্গ হলো মারণ রোগের সঙ্গে জীবনের কঠিন যুদ্ধ,
জীবনের ক্ষীণ চন্দ্রপ্রভা অস্ত গেল, দেহ হলো স্তব্ধ।
নিয়তির অমোঘ বিধান খন্ডাতে কেউ না পারে!
তাঁকে তাই চলে যেতে হলো জীবনের পরপারে।