Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » প্রাক্তন || Nilanjan Bhattacharya

প্রাক্তন || Nilanjan Bhattacharya

প্রাক্তন

সকাল বেলা খবরের কাগজ পড়ার সময় চশমাটা পড়ে যাচ্ছিল। খুব তাড়াতাড়ি ধরে নিয়ে নিজের মনেই মুখ টিপে হাসলেন সুধন্য বাবু। ছেলে ইসরোতে চাকরি করে বলে পুজোর সময় একটু মাথায় গায় হাত দিতে পারেন। বাকি দেখা কথা তো ইদানিং ফোনেই হয়ে যায়। উন্নত প্রযুক্তি। তাদের সময় তো এসব ছিলনা। থাকলে হয়ত…..।
হঠাৎ মুখটায় দুঃখের ছায়া নেমে আসে।
গুড্ডুদার মতো বন্ধু এখন কি আর পাওয়া যায়? গ্রামের স্কুলের পড়া শেষ করে সবে কোলাঘাটে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হয়েছেন, সেই সময় একদিন রিগিং এ যখন ফুটবলের ওপর দাঁড়াতে গিয়ে পা ভাঙার উপক্রম, তখন এক সর্দার বন্ধু থার্ড ইয়ারের ছেলেদের বলেছিল “মুঝকো রিগিং করনা ভাই, কোই মুঝকো নেহি করতা।” সেই দিন থেকে ফার্স্ট ইয়ারের ছেলেদের হুল্লোড় আর হিরোগিরি শুরু। আর কমন রুমে গুড্ডু কৌর আর সুধন্য রায়ের প্রিয় খেলা ছিল ক্যারাম। এতে
দুজনেই ক্র্যাক শট। আর যায় কোথায়! বাঙালির বুদ্ধি আর পাঞ্জাবীর শক্তির ভালো ম্যাচিং হয়। তাই ক্যাম্পাসে কিছুতেই যখন সাফল্য আসছে না তখন একদিন গুড্ডু বলে ” চল, আর্মিকা এক্সাম দেঙ্গে। “
সুধন্য থতমত খেয়ে হেসে ফেললেও গুড্ডু বলেছিল ” মেরা হো না হো, তুঝে সোলজার বনাউঙ্গা ।” এরপর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলেছিল- ছোলা খাওয়া, গান শেখা আর ট্রেনিং।
গুড্ডুকে সুধন্য এত সুন্দর শিখিয়েছিল যে আর্মিতে গিয়েও প্রায়ই গাইতো “তোর আপন জনে ছাড়বে তোরে, তা বলে ভাবনা করা চলবে না। ” এরপর দুজনের কোয়ালিফাই, কলিকদের জোরিদার বলে ঠাট্টা, একই রেজিমেন্টের হয়ে বাহাত্তরে বাংলাদেশ যাওয়া, এসব ইতিহাস। কিন্তু ওয়্যারলেস খারাপ হওয়ায় যখন গুড্ডু চার মাইল দৌড়ে শত্রু সৈন্য আক্রমণের খবর পৌঁছে দিয়ে মারা যায় তখন ডাক্তার এটা ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক নাম দিয়ে শহীদের সম্মান থেকে তাকে বঞ্চিত করে।সেই থেকে প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়েই ছেলেকে ওই পথে যেতে দেননি। সেই দ্রুততা এই বয়সেও চশমাটা ধরার ক্ষেত্রে সাহায্য করল। পুরোনো কথা ভেবে কি লাভ ……..
কিন্তু একটা ভাবনা দুদিন ধরে কিছুতেই ঝেড়ে ফেলতে পারছেন না। পাশের বাড়ির নাতনি আর্মি স্কুলে একটু কম নম্বরের জন্য ভর্তি হতে পারছে না। বাবা প্রাক্তন হাবিলদার। পারকিনসনের জন্য চাকরি যায়। মা নার্সের চাকরি করে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। মেয়েটি কাতর হয়ে বলেছিল ” আর্মি স্কুলে পড়তে পারব না দাদু?” ঐ কথাটাই এমন ইকো হচ্ছে যে ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি হার মেনে যায়। আজ তাই পাঁচ মিনিট খবর কাগজ পড়েই উঠলেন সুধন্য বাবু। একটু স্টোর রুমে যাবেন। আর তার পাঁচ ঘন্টা পর আর্মি স্কুলের
হেডমাষ্টার যখন একশো বার না বলার পর একশো এক বার না বলতে যাবেন তখন সুধন্য বাবুর ব্যাগ থেকে বেরিয়ে এলো কিছু মেডেল ও কাগজ যার মধ্যে মহাবীর চক্রের সম্মাননা ও ছিল……..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress