Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » হানিমুন || Samarpita Raha

হানিমুন || Samarpita Raha

হানিমুন

ইমলিকে সমুদ্র হাতছানি দিয়ে ডাকে।প্রতি বছর ওই মেয়ের জন্য পুরী,দীঘা,চাঁদিপুর , গোপালপুর ঘুরিয়ে ফিরিয়ে যেতে হয়।ছোট থেকে যতবার জোর করে পাহাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, কিছু ভয় যেন ওকে চেপে ধরে।
মাধ্যমিক দিয়ে দার্জিলিং গেছে, তখনো চুপ করে ঘরে শুয়ে কানে তার গুঁজে গান শুনেছে।ওই একটু ম্যালে শপিং করেছে।ভয় করে সেটা বলে নি,এমন কি মাথা ঘোরে সেটা বলে নি।
এরপর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া। ওখানে আলাপ পরাগের সাথে।পরাগএকটু গরীব ঘরের ছেলে। মেধাবী ছাত্র। জীবনে সমুদ্র , পাহাড় কোথাও যায় নি।ইমলি ও পরাগের প্রেম কাহিনী সবার মুখে মুখে।ওরা নাকি সারাক্ষণ পড়া নিয়ে গল্প করে।এখনো কেউ কাউকে আই লাভ ইউ বলে নি।
বি.টেক শেষ করে দুজনে চাকরি করতে ঢোকে।ডিস্টান্সে এম বি এ করে।এরপর বাড়িতে এত চাপ দেয়, দুজনে বিবাহ করতে বাধ্য হয়।দুজনের যুক্তি বিয়ে করতে *বড় ভয় লাগে! সুন্দর বন্ধুত্ব সংসারের চাপে নষ্ট হয়ে যায়।
বিয়ে করে ওরা কোথায় যাবে ভাবছে!ইমলি সিমলা হয়ে মানালি যাবার পরিকল্পনা করে।ওখান থেকে কুলু যাবে। ইমলির মা বলে তুই তো পাহাড় ভালোবাসিস না। বাবা নিজেই বলছিস কুলু মানালি যাবি!
ইমলি মাকে বলে কেন জানি না নিজের মন বলল ওখান থেকে বেড়িয়ে আসি। পুরোনো কিছু হাতছানি দিয়ে ডাকছে। তারপর নির্দিষ্ট দিনে সিমলা যাওয়ার জন্য বার হয়। ওখানে পৌঁছে এক রাত্রি থেকে জিপ গাড়ি ভাড়া করে প্রিবুকিং পিকক ভিলার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়।যেতে যেতে যা যা প্রশ্ন করছে জিপ গাড়ির চালককে,চালক বলে ঠিক বলেছেন পরাগ চুপিচুপি বলে গুগল গুলে খেয়েছ।মনে হচ্ছে এখানে থাকতে!দুরে ওখানে যে জোড়া চন্দন গাছটা ছিল,ওটা কবে কাটল গো।চালক বলল জি মেমসাব , ওখানে দাদুর মুখে শুনেছিলাম সুগন্ধি কাঠের গন্ধে পুরো দশ পাড়ায় ছড়িয়ে পড়ত।সে তো বহু বছর আগের কথা।জরুর আপ কিসিসে এ বাতে শুনেছেন।ইমলি বলে না চালকজি কোনো গল্প শুনি নি ।তখন তো আমি ছিলাম।পরাগ ভাবে চালক ভাগ্যিস ইমলির হেয়ালি করে কথা শোনে নি। পাহাড়ের ভিতর দিয়ে জিপ গাড়ি ছুটছে।
রিসর্টের সামনে জিপ গাড়ি থামলে, ইমলি বিড়বিড় করে বলে সেই অট্টলিকা,এখন রিসর্ট!
ছুটে ছুটে রিসর্টের ভিতরে গিয়ে জিজ্ঞেস করে কোনো পরিবর্তন হয় নি।পরাগ ভাবে ইমলি তো এদিকে কখনো আসে নি, তাহলে এত সুন্দর ফটাফট কত কথা বলে দিচ্ছে। নির্দিষ্ট বুকিং রুমে গিয়ে বলে,হ্যাঁ সেই ঘর,জানালার কাছে ছুটে যায়।এই পরাগ এদিকে এসো ওই বড় পাহাড় টা দেখছ,ওখান থেকে আমার স্বামী ফেলে দিয়েছিল। ওই পাহাড়ের গায়ে বহুদিন আটকে ছিলাম। কেউ উদ্ধার করতে আসে নি।তারপর নিজের মাথা ঘুরে পুরো থেঁতলাতে থেঁতলাতে মরে গেছিলাম।তখন বলেছিলাম আমি ফিরে আসব। পরাগ কাছে এগিয়ে যায়,তাই পাহাড় ভালোবাসো না।এ জন্মে তোমার পরাগ তোমার কিছুই হতে দেবে না। তোমার এখানেই হানিমুন হবে। তোমার বাড়ি কোথায় মনে আছে!না কিছু মনে নেই,তবে একটা ডাক কানে আসে বিটিয়া ই গলত আদমিকে শাদি কিউ কিয়া!
তোমার মনে যা ভয় , বিগত স্মৃতি আছে,সব ঝেড়ে ফেলে দাও।জানো ইমরানকে বড় বিশ্বাস করে বিয়ে করেছিলাম।ও বাবার সম্পত্তি দেখে শাবানাকে শাদি করেছিল। বহুত বদ আদমী থে।উফ *বড় ভয় লাগে , ভয়ংকর সব স্মৃতি।পরাগ বলে যত কথা আছে সব বলে দাও।ডর নে কো কহি বাত নেহি মেই ইমরান তো নেহি হু।তুম সব দিল খুলকে বতা দো। তারপর দুই দিন ডাক্তারের নির্দেশে ওষুধ দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয় ।পরাগ ফোনে শাশুড়ি মা কে সব ঘটনা জানায়।পরাগ মনে মনে বলে তুমি জাতিস্মর!
এই ফোবিয়া নিয়ে তোমার পুনর্জন্ম হয়েছে। ওরা কুলু হয়ে বাড়ির দিকে রওয়ানা হয়। তারপর দশবছর কেটে যায়,আর কখনো ইমরান ও শাবানার কাহিনী পরাগ শোনে নি।ইমলি আগের জন্মে শাবানা ছিল সেটা আর কোনো দিন উচ্চারণ করে নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *