জামাই আদরের পরম্পরা
জৈষ্ঠ্য মাসের শুক্লা ষষ্ঠী তিথিতে মহাসমারোহে পালিত হয় জামাইষষ্ঠী।। আসলে লৌকিক দেবী হিসেবে মা ষষ্ঠীর পুজো আজও বিভিন্ন স্থানে হয়ে থাকে। তাঁর সেই অর্থে নির্দিষ্ট কোনও প্রতিমা নেই , বরং মা ষষ্ঠীর পুজো হয় ‘ ষষ্ঠীর থানে ‘! ‘স্থান’ শব্দটি অপভ্রংশ হয়ে এই ‘ থানে ‘ হয়েছে। সাধারণত সন্তান কামনায় এবং সন্তানের মঙ্গল কামনায় মা ষষ্ঠীর পুজো করা হয়। আর জামাইষষ্ঠীর দিনে সাদা ধবধবে ধুতি পাঞ্জাবি পরিহিত জামাইবাবাজী হাতে একটা পেল্লাই সাইজের মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে সস্ত্রীক তাঁর শ্বশুড়বাড়িতে আসেন। ওই যে বলে না, জামাই আদর ! জামাইয়ের জন্য বিশেষ ফলাহারের যেমন ব্যবস্থা থাকে, ঠিক তেমনই সরু চালের ভাত আর কচি পাঁঠার মাংসের ব্যবস্থা থাকে । শ্বশুর শাশুড়ি জামাইয়ের আপ্যায়নের কোনো ত্রুটি রাখেন না। আসলে মা ষষ্ঠী উর্বরতার প্রতীকও বটে । বহু কাল ধরেই জামাইষষ্ঠী রীতি প্রচলিত রয়েছে। আসলে এই জামাইষষ্ঠী কে আবার অরণ্যষষ্ঠী বলা হয়ে থাকে। কিন্তু কেন ? অতীতের একসময় কোনও এক পরিবারের ছোট বউ খুব লোভী ছিল। একবার সে গোপনে চুরি করে পরিবারের মাছ খেয়ে দোষ দিয়েছিল একটি কালো বেড়ালের ওপর। মা ষষ্ঠীর বাহন হল বেড়াল । এদিকে শ্বশুড় শাশুড়ি তার ওপর বেজায় চটেছেন। আর তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেই ছোট বউয়ের সাত পুত্র ও এক কন্যা মারা যায় সেই ঘটনার পরে। মনের দুঃখে সে অরণ্যে গিয়ে এক বৃদ্ধার ছদ্মবেশে মা ষষ্ঠীর দর্শন পায় । আর সেই বৃদ্ধা তাকে মা ষষ্ঠীর পুজো করতে বলেন। অতঃপর ছোট বউ ক্ষমা প্রার্থনা করে মা ষষ্ঠীর পুজো করতে শুরু করে এবং একে একে তার সব সন্তানদের ফিরে পায় । অবাক কান্ড ! বাস্তবে এইসব লৌকিক আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন সম্পর্কের ভিত মজবুত করা হয়।।
অনেক অজানা তথ্য তোমার কাছ থেকে পাওয়া গেল ভাই